Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

এবার আসছে ৩২৪২ কোটি টাকার বাজেট

ডিএসসিসি’র বাজেট প্রস্তুতিসম্পন্ন ঘোষিত হবে সোমবার

| প্রকাশের সময় : ২২ জুলাই, ২০১৭, ১২:০০ এএম

সায়ীদ আবদুল মালিক : ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ২০১৭-১৮ অর্থ বছরের জন্য তিন হাজার ২৪১ কোটি ৭৩ লাখ টাকার বাজেট ঘোষণার প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন। দান, অনুদান, খয়রাত এবং প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাস ও প্রকল্পের উপর নির্ভর করে অনেকটা কাল্পনিক এ বাজেট নিয়ে খোদ ডিএসসিসিতেই চলছে নানা জল্পনা কল্পনা। নির্বচিত মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন ঘোষিত ডিএসসিসি’র গত দুই অর্থ বছরের বাজেটও টেনে-ছিড়ে পার করতে হয়েছিল। তাই চলতি অর্থ বছরের এই প্রস্তাবিত বাজেট বাস্তবায়ন নিয়েও কেউ কেউ শঙ্কা প্রকাশ করেন।
সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্য মতে, সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী ২৪ জুলাই সোমবার দুপুরে নগর ভবন সভাকক্ষে এক আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে ডিএসসিসির মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন তৃতীয় বারের মত বাজেট ঘোষণা করতে যাচ্ছেন। চলতি অর্থ বছরের জন্য (২০১৭-১৮) ডিএসসিসি ৩ হাজার ২৪১ কোটি ৭৩ লাখ টাকার বাজেট প্রস্তাব করবে বলে জানা গেছে। গত অর্থ বছরে যেটি ছিল ৩ হাজার ১৮৩ কোটি ৬৫ লাখা টাকা। সেই বাজেটের ৫৬ দশমিক এক নয় ভাগ অর্জন করতে পেরেছে ডিএসসিসি। যার মূলে রয়েছে, সংস্থাটির রাজস্ব আয়ের ব্যর্থতা। সর্বোপরি আয়ের চেয়ে ব্যয়ের পরিমান বেশি ছিল বিদায়ী অর্থ বছরে।
জানা গেছে, চলতি অর্থবছরের জন্য ডিএসসিসির প্রস্তাবিত ৩ হাজার ২৪১ কোটি ৭৩ লাখ টাকার বাজেটে রাজস্ব আয়ের ২৬ টি ছোটবড় খাতে আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে, এক হাজার ৩১২ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। গত অর্থ বছরে যার পরিমান ছিল এক হাজার ৩৯১ কোটি ২৭ লাখ টাকা। সংশোধিত বাজেটে সেটি দাঁড়িয়েছে ৫১৮ কোটি ৬৩ লাখ টাকায়, যার মধ্যে প্রকৃত আয় ছিল ৪৩৬ কোটি ৪২ লাখ টাকা। সরকারী ও বৈদেশিক উৎসসহ অন্যান্য আয়ের ৮ টি খাতে আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল গত অর্থ বছরে ৩১২ কোটি ৫ লাখ টাকা। অথচ সেখাতে আয় হয় ১১৯ কোটি ২১ লাখ টাকা। সংশোধিত বাজেটে সে খাতে আয় ধরা হয় ৬৫৮ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। সব মিলিয়ে গত অর্থ বছরের সংশোধিত বাজেটে আয়ের পরিমান ছিল ১ হাজার ৭৮৮ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। সেখানে প্রকৃত আয় ছিল ১ হাজার ৮৪ কোটি ৩০ লাখ টাকা। গত অর্থ বছরে ডিএসসিরি রাজস্ব আয় লক্ষ্যমাত্রার ৩৭ দশমিক ২৮ ভাগ অর্জন করতে পেরেছে। সরকারী বিশেষ মঞ্জুরী পাওয়ার হার ছিল শূণ্য ভাগ। যেখানে প্রস্তাবিত বাজেটে ছিল ২০০ কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রা। তবে, সরকারী ও বৈদেশিক সহায়তামূলক প্রকল্পে লক্ষ্যমাত্রার ৭৬ দশমিক ৭০ ভাগ অর্জন করতে পেরেছে ডিএসসিসি। গত অর্থ বছরে ডিএসসিসির রাজস্ব ব্যয় ও অন্যান্য ব্যায়ের লক্ষ্যমাত্রার ৮৯-৯০ ভাগ অর্জন করতে পারলেও উন্নয়ন ব্যয়ের যে লক্ষ্যমাত্রা ছিল তার ৪৫ দশমিক ৩৬ ভাগ অর্জিত হয়েছে সেখানে। গত অর্থ বছরে ডিএসসিসি সরকারী মঞ্জুরী (থোক) থেকে যা পেয়েছে, তা ছিল শতকরা হারে ২১১ দশমিক ১১ ভাগ, যা সংস্থাটির অক্সিজেন হিসেবে দেখা হচ্ছে।
চলতি অর্থ বছরের জন্য ডিএসসিসি যে বাজেট প্রস্তাব করতে যাচ্ছে, তাতে আয়ের উৎসগুলো থেকে মোট রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে ১ হাজার ৫৪ কোটি টাকা। তার মধ্যে কর (হোল্ডিং, পরিচছন্ন, লাইটিং) থেকে ৫১৫ কোটি টাকা, বাজার সেলামি থেকে ৩০০ কোটি টাকা, বাজার ভাড়া থেকে ৩০ কোটি, ট্রেড লাইসেন্স থেকে ৭০ কোটি টাকা, কোরবানীর পশুর হাট থেকে ১০ কোটি ১ লাখ টাকা, রাস্তা খনন ফি থেকে ২৫ কোটি টাকা, সম্পত্তি হস্তান্তর খাত থেকে ৬৫ কোটি টাকা, শিশু পার্ক থেকে ৫ কোটি টাকা, যন্ত্রপাতি ভাড়া থেকে ৫ কোটি টাকা, রিক্সা লাইসেন্স ফি থেকে ৩ কোটি ৬০ লাক টাকা, বাস ট্রাক টার্মিনাল থেকে ৫ কোটি টাকা উল্লেকযোগ্য। এ ছাড়া অন্যান্য আয়ের খাতগুলো থেকে ৭ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। সরকারী ও বৈদেশিক উৎস থেকে যে আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে তাতে রয়েছে, সরকারী মঞ্জুরী (থোক) ৪০ কোটি টাকা, সরকারী বিশেষ মঞ্জুরী ১৫০ কোটি টাকা, সরকারী ও বৈদেশিক সহায়তামূলক প্রকল্প থেকে আয় এক হাজার ৮৫৩ কোটি টাকা ।
ব্যয়ের খাতগুলোতে রাখা হয়েছে, রাজস্ব ব্যয় বাবদ ৫৮৬ কোটি ৬৪ লাখ টাকা, অন্যান্য ব্যয় বাবদ ৬৯ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। উন্নয়ন ব্যয়ের খাতগুলোতে ডিএসসিসির নিজস্ব তহবিল থেকে ব্যয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে ৬৪২ কোটি ২২ লাখ টাকা, সরকারী ও বৈদেশিক সহায়তামূলক প্রকল্প থেকে ব্যয় এক হাজার ৮৫৩ কোটি ৪৩ লাখ টাকা মিলে দুই হাজার ৪৯৫ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। রাজস্ব ব্যয়ের বড় খাতের মধ্যে বেশি ব্যয়ের খাত ধরা হয়েছে বেতন পারিশ্রমিক ও ভাতা বাবদ ২৫০ কোটি টাকা, বিদ্যুৎ জ্বালানী পানি ও গ্যাসের বিল বাবদ ১৫৪ কোটি টাকা, মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ বাবদ ২৪ কোটি ২৫ লাখ টাকা, মশক নিয়ন্ত্রনে ১৬ কোটি ৮০ লাখ টাকা, কল্যাণমূলক ব্যয় ১৯ কোটি ৭০ লাখ টাকা, বিজ্ঞাপন ও প্রচারনায় সাড়ে ১১ কোটি টাকা, নগরীর বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় ১০ কোটি ৭০ লাখ টাকা উল্লেখযোগ্য ।
জানা গেছে, এবারের প্রস্তাবিত বাজেটে ডিএসসিসির পরিচ্ছন্ন কর্মীদের কল্যাণ তহবিল নামক একটি তহবিল সৃজন করা হয়েছে, যা আগে ছিল না। এ খাতে এবার নতুন করে বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এ ছাড়া আরও একটি নতুন খাত হচ্ছে নগর ডিজিটাল সেন্টার। এটির নির্মানের জন্য রাখা হয়েছে এক কোটি টাকা। এ ছাড়া, মেয়রের জন্য নির্ধারিত বিশেষ উন্নয়ন প্রকল্প খাতে ২৫ কোটি টাকা ও মেয়রের অপ্রত্যাশিত উন্নয়র ব্যয় ধরা হয়েছে আরও ২৫ কোটি টাকা।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ