Inqilab Logo

শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

বরিশালে সাপুরে মান্না পাহারীর পায়ের রগকাটা মামলায় কাউন্সিলর রূপা আটক

| প্রকাশের সময় : ২১ জুলাই, ২০১৭, ১২:০০ এএম

বরিশাল ব্যুরো : বরিশাল সিটি করপোরেশনের সংরক্ষিত নারী আসনের বিতর্কিত কাউন্সিলর ইসরাত আমান রূপাকে (৩০) পুলিশ গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণের পরে কারাগারে পাঠান হয়েছে। সাপুরে মান্নার দুই পায়ের রগ কেটে দেয়ার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় রূপাকে আটক করে মহানগর পুলিশ।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে বরিশাল কোতয়ালী থানা পুলিশ নগরীর ব্রাউন্ড কম্পাউন্ডস্থ তার নিজ বাসভবন থেকে তাকে আটক করে। এর আগে গত ১৯ জুলাই রাতে সাপের বাক্সে কক্সবাজার থেকে ইয়াবা বহনের প্রস্তাব প্রত্যাখান করায় সাপুরে মান্না পাহাড়ির পায়ের রগ কেটে দেয়া সহ নির্মমভাবে কুপিয়ে জখম করা হয়। এ ঘটনায় ২০ জুলাই রাতে নগরীর ১৬, ১৭ ও ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলার কাউন্সিলর ইসরাত আমান রূপা সহ ৬ যুবলীগ কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে আহত মান্নার স্ত্রী কাজল বেগম। অন্য আসামীরা হচ্ছে নগরীর ২২ নম্বর ওয়ার্ডের জিয়া সড়কে স্থানীয় যুবলীগ কর্মী তরিকুল ইসলাম রাজা, সরজিৎ চন্দ্র রায় ওরফে সবুজ, মো. ফিরোজ, মাসুদ মোল¬া ও রফিকুল ইসলাম বাদশা।
কোতোয়ালী থানার ওসি সাংবাদিকদের জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে এসআই কুদ্দুস ব্রাউন্ড কম্পাউন্ডস্থ রূপার নিজ বাস ভবন থেকে তাকে আটক করে থানা নিয়ে আসে। এখান থেকে তাকে কোর্টে প্রেরণ করা হয়েছে। এছাড়া ওই মামলার বাকী আসামীদের আটকের চেষ্টা চলছে বলে জানা ওসি। আহত মান্না পাহাড়ি শেরে-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। মান্নার স্ত্রী কাজল বেগম জানান, কয়েকমাস আগে মান্নাকে সাপের বাক্সে কক্সবাজার থেকে ইয়াবা বহনের প্রস্তাব দেয় যুবলীগ কর্মী রাজা ও কাউন্সিলর রূপা। এতে রাজী না হওয়ায় মান্নাকে হুমকি দেয় রাজা ও রূপা। ওই সময়ে মান্না কোতোয়ালী মডেল থানায় সাধারন ডায়েরী করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে গত সোমবার রাতে রূপার নির্দেশে রাজা ও তার সহযোগীরা হত্যার উদ্দেশ্যে মান্নাকে কুপিয়ে মৃত ভেবে পেলে রেখে পালিয়ে যায়। পুলিশ মান্নাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
কে এই রূপা
নগরীর ব্রাউন কম্পাউন্ড সড়কে ব্যবসায়ী আমানউল্লাহ বাদশা ও কাজল বেগম দম্পতির ৩ মেয়ে ১ ছেলের মধ্যে রূপা দ্বিতীয়। তার মা কাজল বেগম ২০০৩ সালের প্রথম সিটি নির্বাচনে মহিলা সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর ছিলেন। বিএম কলেজে মাষ্টার্সের ছাত্রী থাকাবস্থায় ২০১৩ সালের সিটি নির্বাচনে কাউন্সিলর নির্বাচিত হন রূপা। তার আগে আমেরিকা প্রবাসী এক যুবকের সঙ্গে তার বিয়ে হলেও রূপার উচ্ছ্ঙ্খৃলতার জন্য ২ বছর পর তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। পরে সিটি করপোরেশনের এক কর্মচারীর ছেলের সঙ্গেও বিয়ে হয়েছিল রূপার। সে বিয়েও টেকেনি।
স্থানীয় সূত্রগুলো জানিয়েছে, কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ার পর রূপা জীবন যাপনে আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠে। কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ার পর বিসিসির পঞ্চাষোর্ধ এক কাউন্সিলরের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে তার সঙ্গে দেশে-বিদেশে ভ্রমণ ও কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া এবং পরবর্তীতে তাকে অস্ত্র মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ রয়েছে রূপার বিরুদ্ধে। ব্যবসায়ীদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে লিভ টুগেদার ও টাকা হাতিয়ে নেওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগে রূপ নগরীতে বহুল আলোচিত। রূপার একমাত্র ভাই বাবুও মাদক সহ একাধিকবার পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ