Inqilab Logo

শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

তৃণমূলে নির্বাচনী হাওয়া

লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড কতদূর?

| প্রকাশের সময় : ২১ জুলাই, ২০১৭, ১২:০০ এএম

জেলা-উপজেলায় ছুটছেন কেন্দ্রীয় নেতারা
স্টালিন সরকার : বাতাসে নির্বাচনের গন্ধ। সর্বত্রই আলোচনা-বিরোধ, তর্ক-বিতর্কের বিষয়বস্তু ভোট। নির্বাচন কমিশনের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার মধ্যদিয়ে দেশ কার্যত নির্বাচনী মহাসড়কে ওঠে গেছে। সংবিধান অনুযায়ী ২০১৮ সালের ডিসেম্বর অথবা ২০১৯ সালের জানুয়ারী মাসে অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। নির্বাচনের প্রায় দেড় বছর বাকী; অথচ চারদিকে নির্বাচনী হাওয়া বইতে শুরু করেছে। নৌকা, ধানের শীর্ষ প্রতীকের পোস্টার, ব্যানারে ছেয়ে গেছে গ্রামে হাটবাজার স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসার দেয়াল। লিফলেট বিলী করছে সম্ভাব্য প্রার্থীরা। ভোটের এই হাওয়া রাজধানী ঢাকার বাইরে টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া-রূপসা থেকে পাথুরিয়ার গ্রামগঞ্জে যেন আছড়ে পড়ছে।
এবারের নির্বাচনকে ঘিরে পাল্টে গেছে রাজনীতির দৃশ্যপট। আগে রাজনৈতিক দলগুলো নীতি নির্ধারণী সিদ্ধান্তে জেলা উপজেলার নেতৃবৃন্দের মতামত পাত্তা দিতেন না; সিদ্ধান্ত এবং প্রার্থী দিতেন চাপিয়ে। এবার তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মতামতকে গুরুত্ব দিচ্ছে আওয়ামী লীগ, বিএনপি বড় দু’দলই। দুই দলের নেতারা নতুন সদস্য সংগ্রহ এবং সদস্যপদ নবায়নের নামে তৃণমূলে ছুঁটছেন। কেন্দ্রীয় নেতাদের ছোঁটাছুটিতে গ্রামগঞ্জের হাট-বাজারগুলোতে সৃষ্টি হয়েছে নির্বাচনী আবহ। শুধু তাই নয়, দলের নীতি নির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা বার্তা দিচ্ছেন পদ-পদবি নয় তৃণমূলের মতামতের ভিত্তিতেই এবার দলীয় নমিনেশন দেয়া হবে। এদিকে নির্বাচন কমিশন রোডম্যান ঘোষণা করে রাজনৈতিক দল ও সুশীল সমাজসহ পেশাজীবীদের সঙ্গে সংলাপের কথা বললেও ইতোমধ্যেই সুশীল সমাজ থেকে নেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরির দাবি উঠেছে। এ জন্য ইসিকে আদালতের নির্দেশনা নিয়ে হলেও লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড গঠনের পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। প্রশ্ন হচ্ছে নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা করলেও ইসি কি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরিতে আন্তরিক? নাকি কাজী রকিবউদ্দিনের মতোই থাকবেন ক্ষমতাসীনদের তুষ্টি মিশনে?
২০১৬ সালের অক্টোবর মাসে আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অধিবেশনের পর থেকেই দেশে নির্বাচনী হাওয়া বইতে শুরু করে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা দেন এবারের জাতীয় সংসদ নির্বাচন ৫ জানুয়ারীর মতো হবে না। তাই নির্বাচনে বিজয়ী হওয়া কঠিন হবে। অতপর বিএনপির জাতীয় কাউন্সিলে নির্বাচনে অংশ নেয়া এবং ভিশন-২০৩০ ঘোষণা করা হবে বেগম খালেদা জিয়া এমন ঘোষণা দেয়ার পর বাংলার আকাশে নির্বাচনী হওয়ায় গতি বাড়তে শুরু করে। ১৬ জুলাই নির্বাচন কমিশনের রোডম্যাপ ঘোষণার মধ্য দিয়ে নির্বাচনী প্রক্রিয়ার আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। কিন্তু নির্বাচন কমিশন ঘোষিত এই রোডম্যাপ নিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এবং মাঠের বিরোধী দল বিএনপির বিপরীতমুখী অবস্থানে এখনো। এতে বোঝা যায় নির্বাচন নিয়ে মৌলিক জটিলতাগুলোর সুরাহা এখনো হয়নি। এক দল রয়েছে সংবিধানের অধীনেই থেকে প্রশাসনকে ব্যবহার করে নির্বাচনী বৈতরণী পাড়ি দিতে; অন্যপক্ষ সহায়ক সরকারের অধীনের নির্বাচনের দাবিতে রয়েছে অনড়।
ইসির নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা পরই নির্বাচন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. তোফায়েল আহমদ, ড. বদিউল আলম মজুমদার, সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) সাখাওয়াত হোসেন, সাবেক নির্বাচন কমিশনার মোঃ ছহুল হোসাইন, তত্ত¡াবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এম হফিজ উদ্দিন, সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. শাহদীন মালিক, নির্বাচন বিশেষজ্ঞ সারমিন মুরর্শিদ, মুনিরা খানসহ প্রায় অর্ধশত বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিত্ব ইসির প্রতি ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ তৈরির দাবি জানিয়েছেন। তারা রোডম্যাপের খানাখন্দ সমতল করতে প্রয়োজনে আদালতে গিয়ে এ ব্যাপারে নির্দেশনা নেয়ারও পরামর্শ দিয়েছেন। তাদের বক্তব্য হলো প্রতিদ্ব›িদ্বতাপূর্ণ খেলার জন্য যেমন সমতল মাঠ দরকার; তেমনি নির্বাচনের জন্যও দু’পক্ষের সমান সুযোগ প্রয়োজন। তাই আগে থেকেই মাঠ সবার জন্য সমান করতে হবে। বিশেষজ্ঞরা যা বলছেন তার মর্মার্থ হলো- ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ অনেক আগেই নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেছে। প্রধানমন্ত্রী ঢাকা এবং ঢাকার বাইরের সব অনুষ্ঠানেই নৌকার পক্ষে ভোট চাইছেন। এমনকি রাষ্ট্রীয় খরচে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানগুলোতেও তিনি নৌকার পক্ষে ভোট চাইছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী হিসেবে নৌকার পক্ষে ভোট চাইবেন এটাই স্বাভাবিক। প্রশ্ন হলো প্রতিপক্ষ সব দল তাদের মার্কার পক্ষে কি ভোট চাওয়ার সুযোগ পাচ্ছে? বাস্তবতা হলো বিএনপি সে সুযোগ পাচ্ছে না। সভা সমাবেশ দূরের কথা ঘরোয়া বৈঠকেও বিএনপিকে বাধার মুখে পড়তে হয়। বিএনপি অনেকদিন ধরেই ঢাকায় কোনও সমাবেশ করার অনুমতি পাচ্ছে না। সমাবেশ তো অনেক দূরের কথা, বিএনপি নেতাকর্মীরা এখন ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে আদালতের বারান্দায়। ৪ বছর আগের নাশকতার ঢালাও মামলায় বিএনপি লাখ লাখ নেতাকর্মীকে আদালতে দৌড়ঝাঁপে রেখে কি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড সম্ভব? শুধু কি তাই! জেএসডি নেতা আ স ম আব্দুর রবের উত্তরার বাসায় বি. চৌধুরী, ড. কামাল হোসেন, বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, মাহমুদুর রহমান মান্নার মতো নেতাদের ঘরোয়া বৈঠকে বাধা দিয়েছে পুলিশ। এক পক্ষের খেলোয়াড়দের বাধাহীন চর্চা অন্যপক্ষের খেলোয়াড়দের বেঁধে রাখলে কি নিরপেক্ষ খেলা হয়?
সিইসি দাবি করেছেন, নিয়ম অনুযায়ী তফসিলের তিন মাসের আগে প্রতিদ্ব›দ্বী দলগুলোর মধ্যে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড গঠতে তাদের করণীয় নেই। সিইসির এ বক্তব্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন নির্বাচন বিশেষজ্ঞরা। তারা পরিবেশ সৃষ্টির জন্য ইসিকে আদালতের যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। কারণ তারা বলছেন, তফসিলের ৩ মাস নির্বাচনে প্রতিদ্ব›দ্বী সব দলের সমান সুযোগ নিশ্চিত করা হলেই লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি হবে না। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে নির্বাচনী প্রচারনায় এগিয়ে থাকছে; সভা-সমাবেশ করার অনুমতি না পাওয়ায় বিএনপি প্রতিনিয়ত পিছিয়ে যাচ্ছে; এটা কিভাবে এক লেভেলে আসবে? খেলা শুরুর আগে প্রতিপক্ষের প্লেয়ারের পা ভেঙ্গে দিলে খেলার মাঠ যতই লেভেল হোক; তার পক্ষে জেতা সম্ভব নয়। তফসিলের ৩ মাসে কি নির্বাচন কমিশন তার আগেই পিছিয়ে থাকা বিএনপিকে এই গ্যাপটি মেটানোর সুযোগ দিতে পারবে? তাই বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নির্বাচনের ৩ মাস সময়ের নয় সারা বছরের জন্য হতে হবে। তফসিল ঘোষণার আগে নির্বাচন কমিশনের কিছু করার নেই সিইসির এ দাবি যেমন সত্যি; আবার এটা তো ঠিক নিবন্ধনের কারণে রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচন কমিশনের কাছে বাঁধা। আর নির্বাচন কমিশন তো শুধু তফসিলের ৩ মাসের জন্য নিয়োগ পান না। তারা ৫ বছরের জন্য নিয়োগ পান। ইসি ইচ্ছা করলেই রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ম শৃংখলার মধ্যে চলতে বাধ্য করতে পারে। আইনে না থাকলেও লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরির জন্য তারা নতুন আইন করতে পারে। আবার সরকারের কাছে সব রাজনৈতিক দলের জন্য সমান সুযোগ দেয়ার অনুরোধ করতে পারে। ইসি একদম হাত-পা গুটিয়ে তফসিলের জন্য বসে থাকলে নির্বাচন কমিশনের ওপর কারো আস্থা থাকবে না।
বড় দুই দলের নেতারা প্রায় নিত্যদিন জেলা সফরে যাচ্ছেন। তারা দলীয় সভা-সমাবেশে নির্বাচনী বক্তৃতা দিচ্ছেন। দলের নেতাকর্মীদের চাঙ্গা করছেন এবং অভ্যন্তরীণ কোন্দল নিরসনে পদক্ষেপ নিচ্ছেন। কেন্দ্রীয় নেতাদের সফর এবং আসন্ন নির্বাচন উপলক্ষে তৃণমূলের নেতারা দলীয় পোস্টার, ফেস্টুনে ভরিয়ে দিয়েছে গ্রাম বাংলার হাট-বাজার, পথ মাঠঘাট। নানা পন্থায় জনগণের সামনে নিজেদের তুলে ধরছেন। উপজেলা-পৌরসভা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতারা উঠোন বৈঠক থেকে শুরু করে ঘরে ঘরে গিয়ে বৈঠক করছেন; আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতির বার্তা দিচ্ছেন। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরবিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রতিদিনই নির্বাচন নিয়ে কথাবার্তা বলছেন। দলীয় নেতাকর্মীদের প্রস্তুতি নেয়ার পাশাপাশি সতর্ক করছেন। কথার মারপ্যাঁচে একে অপরকে তুলোধূনো করছেন। দুই দলই তৃণমূলের প্রতি গুরুত্ব দিয়ে সদস্য সংগ্রহ অভিযান চালাচ্ছেন। গত ১৯ মে নিজের ফরম পূরণ করে দলের নতুন সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কার্যক্রম উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এই সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন অভিযান। পাশাপাশি দলের প্রার্থী চূড়ান্তের কাজও চলছে। দলের কারা নমিনেশন পাবেন আর কারা পাবেন না এ নিয়ে সতর্কবার্তাও দেয়া হচ্ছে। অন্যদিকে পহেলা জুলাই বেগম খালেদা জিয়া নিজের সদস্য পদ নবায়নের মাধ্যমে শুরু হয় বিএনপির দেশব্যাপী সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কর্মসূচি। দুই মাসব্যাপী এ কর্মসূচি চলবে পহেলা সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। দেশের প্রতিটি জেলা-মহানগর-থানা-পৌরসভা-ইউনিয়নসহ সব ইউনিটে এ কর্মসূচি চলছে। বলা যায় বড় দুই দলের নেতাকর্মীরা নির্বাচনী প্রস্তুতিতে মহাব্যস্ত সময় পার করছেন।
নির্বাচন কার্যত পক্ষ-প্রতিপক্ষের প্রার্থীদের খেলায় অংশ নেয়ার মতোই। খেলায় খেলোয়াড়দের প্রস্তুতির পাশাপাশি রেফারির প্রস্তুতি অত্যাবশ্যক। লেফারিকে শুধু রোডম্যাপ ঘোষণা করে বসে থাকলে চলবে না; ২০১৮ সালের শেষে নির্বাচন করতে হলে এখন থেকেই নিরপেক্ষ পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। ইসির রোডম্যাপে ৭ দফা কার্যক্রমে দেখা যায় ১. আইনি কাঠামো পর্যালোচনা ও সংস্কার, ২. নির্বাচন প্রক্রিয়া সহজীকরণ ও যুগোপযোগী করার লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট সবার পরামর্শ গ্রহণ, ৩. সংসদীয় এলাকার সীমানা পুননির্ধারণ, ৪. নির্ভুল ভোটার তালিকা প্রণয়ন ও সরবরাহ, ৫. বিধি-বিধান অনুসরণপূর্বক ভোটকেন্দ্র স্থাপন, ৬. নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন এবং নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের নিরীক্ষা ও ৭. সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে সংশ্লিষ্ট সবার সক্ষমতা বাড়াতে কার্যক্রম গ্রহণ। এগুলো ইসির রুটিন কাজ। একাজের পাশাপাশি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি অত্যাবশ্যক।
বিশিষ্টজনদের কথাবার্তা এবং মিডিয়ায় লেখালেখিতে এটা স্পষ্ট- এ দেশের মানুষ নির্বাচনকে উৎসব মনে করে। ভোটের অধিকার হারানো মানুষ ভোটের অধিকার ফিরে চায়। অন্যদিকে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির ভোটারবিহীন, প্রার্থীবিহীন নির্বাচনের দায় কাঁধে নিয়ে জাতি এগুচ্ছে একাদশ নির্বাচনের দিকে। ওই নির্বাচন আন্তর্জাতিক মহল মেনে নেয়নি। কাজেই আরও একটি ওই (৫ জানুয়ারী) ধরনের বিতর্কিত নির্বাচনের দায় বহন করার সামর্থ বাংলাদেশেরও নেই। এমনকি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেই। আওয়ামী লীগ এটা ভালো করেই জানে একতরফা কোনো নির্বাচন দেশে-বিদেশে তাদের গ্রহণযোগ্য গুরুতরভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করবে। অন্যদিকে বিএনপিকেও আগামী নির্বাচনে অংশ নিতেই হবে। ৫ জানুয়ারীর বিতর্কিত নির্বাচন বর্জন এবং সফল আন্দোলন গড়ে তোলার ব্যর্থতায় রাজনৈতিকভাবে যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে; তা পুনরাবৃত্তি হলে দলের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়বে। ভোটারবিহীন গত নির্বাচন ইস্যুতে দুই পক্ষের যে ক্ষতি হয়েছে সেটা আওয়ামী লীগ-বিএনপি হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে। সে জন্যই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলের নেতাকর্মীদের সতর্ক করে বলেছেন, আর কোনও প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন হবে না। অর্থাৎ শেখ হাসিনাও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের কথাই বলছেন। কাউন্সিলের পর আওয়ামী লীগের নানা আয়োজনেও প্রতিদ্ব›িদ্বতাপূর্ণ নির্বাচনের প্রস্তুতির কথাই বলা হচ্ছে। ইসি যে রোডম্যাপ ঘোষণা করেছে তা সময়োপযোগী বলে মন্তব্য করেছে আওয়ামী লীগ নেতারা। তবে নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের রূপরেখা ঘোষণার প্রস্তুতির কথা জানিয়ে বিএনপি নেতারা নির্বাচন কমিশনের রোডম্যাপ প্রত্যাখ্যান করেছেন। আবার অন্যান্য ছোট ছোট রাজনৈতিক দলগুলোর ঘরোয়া বৈঠক পর্যন্ত পন্ড করে দেয়া হচ্ছে। এ অবস্থায় ইসিকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে হবে। তূণমূলে নির্বাচনী আবহ সৃষ্টি হয়েছে। সর্বত্রই চলছে একাদশ নির্বাচনের আগাম প্রস্তুতি। এখন ইসি’র দায়িত্ব খেলার মাঠ সবার জন্য সমতল করতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বেশ কয়েকজন নির্বাচন বিশেষজ্ঞ স্পষ্টভাষায় বলেছেন, বর্তমান ইসির যে আইনী ক্ষমতা রয়েছে সেটা প্রয়োগ করেই নির্বাচনের মাঠ নিরপেক্ষ করা সম্ভব। প্রয়োজন শুধু ইসি’র দৃঢ়তা।



 

Show all comments
  • নাহিদা সুলতানা ২১ জুলাই, ২০১৭, ৩:৪০ এএম says : 0
    আদৌ কি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড হবে ?
    Total Reply(0) Reply
  • মিন্টু ২১ জুলাই, ২০১৭, ৩:৪১ এএম says : 0
    নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার না হলে এই নির্বাচনের কোন লাভ নাই।
    Total Reply(0) Reply
  • Jahid ২১ জুলাই, ২০১৭, ৪:০৭ পিএম says : 0
    abar nirapekho nirbachon na hole desher obostha kharap hoye jete pare
    Total Reply(0) Reply
  • Debnath Biplab ২১ জুলাই, ২০১৭, ৪:০৭ পিএম says : 0
    লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি অত্যাবশ্যক।
    Total Reply(0) Reply
  • Omar Faruque ২১ জুলাই, ২০১৭, ৪:০৮ পিএম says : 0
    ইসি একদম হাত-পা গুটিয়ে তফসিলের জন্য বসে থাকলে নির্বাচন কমিশনের ওপর কারো আস্থা থাকবে না।
    Total Reply(0) Reply
  • Hira ২১ জুলাই, ২০১৭, ৪:০৯ পিএম says : 0
    jonogon akta sustho nirbachon chay
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নির্বাচনী

৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ