Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চলে গেলেন বরেণ্য অভিনেতা আব্দুর রাতিন

| প্রকাশের সময় : ২০ জুলাই, ২০১৭, ১২:০০ এএম

অভি মঈনুদ্দীন ঃ চলে গেলেন বরেণ্য অভিনেতা আব্দুর রাতিন। রাজধানীর ধানমন্ডির ল্যাবএইড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত ২.৩০ মিনিটে রাতিন শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। ইন্নালিল্লাহি ওয়াইন্নাইলাইহে রাজেউন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৬৪ বছর। তার মৃত্যুতে সংস্কৃতি অঙ্গনে নেমে আসে শোকের ছায়া। চলতি মাসের শুরুতেই চিকুনগুনিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে পুরান ঢাকার ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসাপাতালে ভর্তি হন রাতিন। চিকুনগুনিয়া থেকেই কিডনীতে এবং লিভারে সমস্যা দেখা দেয়। শারীরিকভাবে খুবই দুর্বল হয়ে পড়েন তিনি। শারীরিক দুর্বলতা থেকে গত ৬ জুলাই ব্রেইনস্ট্রোক করেন তিনি। গত ৯ জুলাই তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে নেয়া হয়। কিন্তু অর্থাভাবে রাতিনের সঠিকভাবে চিকিৎসা হচ্ছিলো না। তবে সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর জানিয়েছেন ‘শিল্পীর পাশে’ ফাউন্ডেশন থেকে দুই লাখ টাকা রাতিনের চিকিৎসার জন্য সহায়তা করা হয়। আসাদুজ্জামান নূর বলেন, ‘রাতিনের সঙ্গে নাটকে কাজ করেছি কী না তা আজ মনে নেই। তবে তার বাবা গুণী অভিনেতা আব্দিুল মতিনের সঙ্গে অভিনয় করেছি টেলিভিশনে। রাতিন এভাবে হঠাৎ করে চলে যাবেন, ভাবাই যায়না। আল্লাহ তাকে বেহেস্ত নসীব করুন।’ রাতিনের চিকিৎসা চলাকালীন সময়ে ‘অভিনয় শিল্পী সংঘ’ পাশে এসে দাঁড়িয়েছিলেন। এই সংঘ’র সাংগঠনকি সম্পাদক লুৎফর রহমান জর্জ সার্বক্ষনিক তার পাশে থেকে এবং পাশে না থাকলে মোবাইলে খোঁজ খবর নিয়েছেন প্রতিনিয়ত। জর্জ বলেন,‘ ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসাপাতাল থেকে আমাদের উদ্যোগে শাহবাগে নিয়ে আসি বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে। কিন্তু গেলো মঙ্গলবার রাতিন ভাইয়ের অবস্থা এতোটাই খারাপ হয়ে যায় যে হাসপাতালের আইসিইউতে সিরিয়াল পাওয়া যাচ্ছিলো না। শেষমেষ আমরা তাকে দ্রুত ল্যাবএইড হাসপাতালের আইসিইউতে নিয়ে যাই। কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না।’ কায়সার আহমেদ’র নির্দেশনায় দুটি প্রচার চলতি ধারাবাহিক ‘মহাগুরু’ এবং ‘রূপালী প্রান্তর’-এ অভিনয় করছিলেন রাতিন। গুণী অভিনেতা এটিএম শামসুজ্জামানের সঙ্গে বহু চলচ্চিত্রে, নাটকে একসঙ্গে অভিনয় করেছেন রাতিন। এই দুটো নাটকেও এটিএম’র সঙ্গে রাতিন অভিনয় করছিলেন। তিনি বলেন,‘ঈদের আগে রাতিনের সঙ্গে আমার শেষ দেখা। সেই দেখাই যে শেষ দেখা হবে কে জানতো। রাতিনের বাবার সঙ্গে আমি অভিনয় করেছি। আবার তার সঙ্গেও অভিনয় করেছি। তার অভিনয়ের মধ্যে তার বাবার ছায়া পাওয়া যেতো। রাতিন সর্বোপরি খুব ভালো মনের একজন মানুষ ছিলেন। তার এই চলে যাওয়ায় সত্যিই আমাদের অনেক ক্ষতি হলো।’ রাতিনের এক ছেলে ওমর ফারুক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স শেষ করে একটি প্রাইভেট ফার্মে চাকরী করছেন। অভিনেতা রাতিন অসংখ্য চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। ১৯৭০ সালে মোস্তফা মেহমুদ পরিচালিত ‘নতুন প্রভাত’ ছবির মাধ্যমে চলচ্চিত্রে অভিনয় শুরু করেন। তার অভিনীত ছবিগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘দেবদাস’, ‘হারানো সুর’, ‘শুকতারা’, ‘জবাব চাই’, ‘ স্নেহের প্রতিদান’, ‘চোরের বউ’, ‘মহান বন্ধু’, ‘লালু সর্দার’, ‘স্বার্থপর’ প্রভৃতি। তার অভিনীত মঞ্চ নাটকের সংখ্যা প্রায় শতাধিক। রাতিনের ছোটভাই চ্যানেল আইতে কর্মরত অঞ্জণ রহমান। নারিন্দার বিনোদ বিবি মসজিদে গতকাল বুধবার বাদ যোহর প্রথম নামাজে জানাজা এবং বিকেল ৩.৩০ মিনিটে বিএফডিসিতে দ্বিতীয় নামাজে জানাজা শেষে তাকে স্বামীবাগে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ