Inqilab Logo

সোমবার, ০১ জুলাই ২০২৪, ১৭ আষাঢ় ১৪৩১, ২৪ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

সাজা কমিয়ে নিকট আত্মীয়ের পরিধি বাড়ানো হয়েছে

অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সংযোজন আইন মন্ত্রিসভায় খসড়া অনুমোদন

| প্রকাশের সময় : ১৮ জুলাই, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : আত্মীয়ের সংজ্ঞা পরিবর্তন করে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দেওয়া- নেওয়ার ক্ষেত্রে অনুমোদিত রক্তসম্পর্কিতদের পরিধি বাড়াতে আইন সংশোধন আনা হচ্ছে। শরীরে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংযোজনের ক্ষেত্রে নিকট আত্মীয়ের পরিচয়ে মিথ্যা তথ্য দিলে দুই বছরের কারাদন্ড ও পাঁচ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রেখে মানবদেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংযোজন (সংশোধন) আইন ২০১৭ এর চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
এছাড়া কোনো চিকিৎসক এই আইন ভঙ্গ করলে তাঁর চিকিৎসা সনদ বাতিল হবে। এ ক্ষেত্রে উভয় দন্ডে দন্ডিত হওয়ারও বিধান রাখা হয়েছে। এ আইনের অন্যান্য যেকোনো বিধি লঙ্ঘন করলে ৩ বছরের কারাদন্ড ও ১০ লাখ জরিমানা বা উভয় দন্ডের বিধান রা হয়। তবে চোখ ও অস্থিমজ্জাকে এর বাইরে রাখা হয়েছে। গতকাল সোমবার সচিবালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে মানবদেহে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংযোজন (সংশোধন) আইন- ২০১৭ এর খসড়ায় চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়।
বৈঠক শেষ মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব আশরাফ শামীম সাংবাদিকদের বলেন, নিকটাত্মীয় বলতে পিতা-মাতা, ভাইবোন, পুত্র-কন্যা, স্বামী-স্ত্রী, রক্তের সম্পর্কের চাচা-চাচি, মামা-মামি, নাতি-নাতনি, মামাতো, খালাতো, চাচাতো, ভাইবোনকে বোঝানো হয়েছে। আশরাফ শামীম বলেন, খসড়াটি আইন হিসেবে কার্যকর হওয়ার পর ৬০ দিনের মধ্যে যেসব সরকারি হাসপাতালে বিশেষায়িত ইউনিট রয়েছে, সেগুলো বাদে সরকারি- বেসরকারি প্রত্যেক হাসপাতালকে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংযোজনের বিষয়ে অনুমোদন নিতে হবে। তিনি বলেন, কিডনি, যকৃৎ, টিস্যু, চক্ষু, অন্ত্র, অস্থিমজ্জা ইত্যাদি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ আদান-প্রদান করা যাবে। নিকটাত্মীয়দের মধ্যে যাদের ব্রেইন ডেথ হয়েছে তাদের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নেওয়া যাবে।
আগের আইনে নিকটাত্মীয় হিসেবে পুত্র, কন্যা, পিতা, মাতা, ভাই, বোন ও ও স্বামী-স্ত্রীর সঙ্গে রক্তসম্পর্কিত হিসেবে আপন চাচা, ফুফু, মামা, খালা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দান ও গ্রহণ করতে পারতেন বলে জানান তিনি। যাদের অনুমতি নেই তারা এই আইন কার্যকর হওয়ার ৬০ দিনের মধ্যে অনুমতির জন্য সরকারের কাছে আবেদন করতে পারবে। এ ক্ষেত্রে তাদের বয়স হতে হবে দুই থেকে ৬৫ বছরের মধ্যে। তবে সে ক্ষেত্রে আত্মীয়-স্বজনদের নিশ্চিত করতে হবে যে এতে তাঁর সম্মতি ছিল। এ ছাড়া জীবিতদের ক্ষেত্রে বয়স ১৮ থেকে ৬৫ বছরের মধ্যে হতে হবে। আর যারা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নেবে তাদের বয়স দুই থেকে ৭০-এর মধ্যে হতে হবে। তবে ১৫ থেকে ৫০ বছর বয়সী লোকেরা অগ্রাধিকার পাবেন। অতিরিক্ত সচিব জানান, এই প্রক্রিয়াটি মনিটরিং (পর্যবেক্ষণ) করার জন্য একটি জাতীয় কমিটি থাকবে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হবেন এই কমিটির চেয়ারম্যান। আর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব হবেন কমিটির সদস্য সচিব। নতুন এই আইন কার্যকর হলে যে হাসপাতালে মানবদেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ প্রতিস্থাপনের কাজ করা হবে সেখানে একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করতে হবে। সংশ্লিষ্ট বিভাগের প্রধানকে নিয়ে সমন্বয় করে এই বোর্ড গঠন করতে হবে। আশরাফ শামীম আরো বলেন, শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংযোজনের ক্ষেত্রে ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে কাউকে নিকটাত্মীয় বানিয়ে ব্যবসার চেষ্টা করা হলে তাদের জন্য শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। এই ধরনের অপরাধ করে কেউ ধরা পড়লে দুই বছরের কারাদন্ড ও পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবেন। এ ছাড়া অন্যান্য বিধান লঙ্ঘন করলে তিন বছর কারাদন্ড ও ১০ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। এ ছাড়া কোনো চিকিৎসক এই আইন ভঙ্গ করলে তাঁর চিকিৎসা সনদ বাতিল হবে। আর যদি কোনো হাসপাতাল আইন ভঙ্গ করে তাহলে মালিক, ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাঁরা উপরোক্ত শাস্তি পাবেন।
আইনটি কেন করা হচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে শামীম বলেন, চিকিৎসা বিজ্ঞানের উৎকর্ষ সাধনের ফলে একটি আধুনিক আইনের প্রয়োজন ছিল। এ ছাড়া মানবদেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নিয়ে ব্যবসা বন্ধ করতে আইনটি করা হচ্ছে।



 

Show all comments
  • Urmi ১৮ জুলাই, ২০১৭, ১১:৪২ এএম says : 0
    valo e holo
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মন্ত্রিসভা

১২ সেপ্টেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ