Inqilab Logo

শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

সুষ্ঠু নির্বাচন না করলে মানুষ আওয়ামী লীগকে পালাতে দেবে না -মির্জা ফখরুল

প্রকাশের সময় : ১৮ জুলাই, ২০১৭, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১১:০৮ পিএম, ১৭ জুলাই, ২০১৭

স্টাফ রিপোর্টার :একটি অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা না করলে দেশের মানুষ আওয়ামী লীগকে পালাতেও দেবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, বিএনপি নির্বাচনে আসুক এবং দেশে অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন হোক বর্তমান সরকার তা চায় না। তারা জানে ভোটের মাধ্যমে তারা ক্ষমতায় আসতে পারবে না। গতকাল (সোমবার) রাজধানীর নয়াপল্টনে ভাসানী মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী মহিলা দল আয়োজিত ‘বিএনপির ভিশন ২০৩০: নারী সমাজের উন্নয়ন ও অগ্রগতির মিশন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ঘোষিত রোডম্যাপ সার্থক করতে হলে নির্বাচন কমিশনকে ‘নির্বাচনের পরিবেশ’ তৈরি করতে হবে।তিনি বলেন, আমাদের কথা খুব পরিষ্কার, আমরা নির্বাচন কমিশনকে বলতে চাই, আগে নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করুন, রাস্তা তৈরি করুন, তাহলে রোডম্যাপ দেয়াটা সার্থক হবে। অন্যথায় হবে না। নির্বাচনে যদি রাজনৈতিক দলগুলোই যেতে না পারে, আবার ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি মতো... ওই কুকুর-ছাগল ভেড়া নিয়ে নির্বাচন করতে হবে, মানুষকে নিয়ে তো নির্বাচন করতে পারবেন না। বিএনপি মহাসচিব বলেন, নির্বাচন কমিশন গত (রোববার) একাদশ নির্বাচনের কর্ম পরিকল্পনা দিয়েছে। খুব ভালো কথা। রাস্তাটা কৈ? ইলেকশন করবে কে? রাজনৈতিক দলগুলোতো। তাদেরকে যে আপনি নির্বাচনে নিয়ে যাবেন, তার রাস্তা কোথায়? হোয়ার ইজ দ্যা রোড। ম্যাপ দিয়ে দিচ্ছেন, এই করছেন, ওই করছেন, অথচ রাস্তাই নাই। সারা দেশে রাস্তা তো আপনারা খানা-খন্দক খুঁড়ে শেষ করে দিয়েছেন, প্র্যাকটিক্যালি গোটা ঢাকাতে তাই, বাংলাদেশেও তাই। সেভাবেই নির্বাচনের রাস্তাকে আপনারা খানা-খন্দক খুঁড়ে শেষ করে দিয়েছেন। নির্বাচনে যাতে বিরোধী দল যেতে না পারে, তার জন্য আপনারা ব্যবস্থা করছেন।
সরকারের উদ্দেশ্যে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই সমস্ত বাদ দিন, পথে আসুন। সব রাজনৈতিক দলের সাথে কথা বলে পথ বের করুন। আমরা বলতে চাই, তারা (ক্ষমতাসীন দল) যে অপকর্ম করেছে, হত্যা-গুম-খুন-জখম করেছে, দুর্নীতি করেছে, লুট করেছে সেখানে তারা পালাবার পথ খুঁজে পাবেনা। পালাবার একটাই পথ আছে, সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলোর আলোচনা করে সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করা, সকল দলের অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের ব্যবস্থা করা। তা না হলে সত্যি সত্যি এদেশের মানুষ পালাবার পথ দেবে না। রাজনীতিতে নারীদের ব্যাপক অংশগ্রহণের প্রশংসা করে মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপিকে সবচেয়ে বেশি শক্তিশালী করতে পারেন এই নারীরা। গ্রামে আমাদের ভোটার বেশি নারীরা, দেশের সবচেয়ে বেশি ভোটার নারীরা। এটা কেন? বিএনপিধানের শীষ মহিলাদের স্বার্থের কথা ভাবে, মানুষের ভালোর কথা বলে, দেশের ভালো বলে এবং কাজ করে। এই দায়িত্বটা সবচেয়ে বেশি আপনাদের পালন করতে হবে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গ বিএনপি মহাসচিব বলেন, নির্বাচনে প্রচন্ড বাধা। এই সরকার চায় না যে, দেশে একটা সুষ্ঠু নির্বাচন হোক। এই সরকার চায় না যে আমরা নির্বাচনে যাই। কারণ ওরা জানে যে, আমরা যদি নির্বাচনে যাই আর আমাদের মা-বোনেরা ও ভাইয়েরা যদি ভোট দিতে পারে, তাহলে ওরা ক্ষমতায় আসতে পারবে না। তারা যত অপকর্ম করেছে, চুরি-চামারি করেছে, এগুলো দেখে জনগণ ওদের ভোট দেবে না। বিএনপিকে সমাবেশ-সভা করতে দেওয়া হচ্ছে না অভিযোগ এনে এর সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, নির্বাচন করার আগে নির্বাচনের পরিবেশ তো তৈরি করতে হবে। আপনি আমাকে রাস্তায় বের হতে দেবেন না, আপনি আমাকে মিটিং করতে দেবেন না, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মিটিং করতে দেবেন না, কাউন্সিল করতে দেবেন না। এমনকি ‘ভিশন ২০৩০’ আলোচনা করার জন্য জেলাগুলোতে একটা জায়গা পর্যন্ত দেবেন না, ঢাকাতেও দেবেন না। অন্যদিকে আপনি বলবেন যে নির্বাচন করো। গত ১৩ জুলাই রাতে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রবের বাসায় কয়েকটি রাজনৈতিক দলের নেতাদের অনুষ্ঠানে পুলিশি বাগড়ার প্রসঙ্গ তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের কথা বাদ দিলাম। এই আ স ম আবদুর রব সাহেব ও অন্যান্য ৫/৪টা দল, ডা. বদরুদ্দোজা সাহেবের মতো মানুষ, ড. কামাল হোসেন সাহেবের মতো মানুষ তারা রাজনৈতিক আলোচনা করার জন্য আবদুর রব সাহেবের বাসা গিয়েছিলেন। পুলিশ সেখানে গিয়ে উপস্থিত। বলছে, মিটিং করতে পারবেন না। আমি এর আগে একদিন বলেছিলাম, এদেশটাকে এরা বাপের তালুকদারি মনে করে। সমস্যাটা এই জায়গায়। যে কারণে ওরাই সব কিছু করবে, মিটিং করবে, ইলেকশন করবে, বিনাভোটে নির্বাচন করবে, ক্ষমতায় যাবে, মন্ত্রী হবে, এমপি হবে, হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করবে। আমরা-আপনারা ওই সাধারণ মানুষ শুধু হাত তালি বাজাবো, হ্যাঁ বেশ বেশ। এটা হবে না। এটা গণতন্ত্র নয়। সবাইকে ‘জেগে’ ওঠার আহŸান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, বোনেরা আমাদের সবাইকে জেগে উঠতে হবে। এটা আমার দেশ। জোর করে কেউ নিয়ে যায়, আমি কি ছেড়ে দেব। বর্গিরা জোর করে নিয়েছিল, বৃটিশরা জোর করে নিয়েছিল, পাকিস্তানিরা জোর করে নিয়েছিল, আমরা তো যুদ্ধ করে সেখান থেকে ফেরত আনছি। সুতরাং এটাকে আমরা ছেড়ে দেব না। আমরা গণতান্ত্রিক অধিকারগুলোকে প্রতিষ্ঠা করতে চাই, আমাদেরকে প্রতিবাদ করতে হবে। সরকারকে বাধ্য করতে হবে সব দলের অংশগ্রহণমূলক একটা অবাধ নির্বাচন করতে দিতে। বিএনপি মহাসচিব বলেন, বর্তমান সরকারের প্রবৃদ্ধি হচ্ছে শুধুমাত্র ধনীদের ক্ষেত্রে। অন্যদিকে গরিবরা আরও গরিব হচ্ছে, থাকছে ফুটপাতে।
মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাসের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হেলেন জেরিন খানের পরিচালনায় আলোচনা সভায় মহিলা দলের সিনিয়র সহ-সভাপতি নুর জাহান ইয়াসমীন, সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ, কেন্দ্রীয় নেতা ফরিদা মনি শহীদুল্লাহ, নুরুন্নাহার, শামুসন্নাহার ভুইয়াসহ অন্য নেতারা বক্তব্য রাখেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মির্জা ফখরুল

২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ