Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ঘাটে দালাল ছাড়া মেলে না ফেরির টিকিট

| প্রকাশের সময় : ১৭ জুলাই, ২০১৭, ১২:০০ এএম

গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) উপজেলা সংবাদদাতা : দীর্ঘদিন ধরে দেশের গুরুত্বপূর্ণ নৌপথ দৌলতদিয়া ঘাটের বিআইডবিøউটিটি’র ট্রাক বুকিং কাউন্টার ঘিরে সক্রিয় রয়েছে প্রভাবশালী দালাল চক্র। এ চক্রের মাধ্যম ছাড়া কোন পণ্যবাহী ট্রাক ফেরি টিকিট পাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
আটকে থাকা ট্রাক চালক ও সংশ্লিষ্টরা জানান, নদীতে তীব্র ¯্রােত, ঘাট সমস্যায় দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে স্বাভাবিক যানবাহন পারাপার ব্যাহত হচ্ছে। ঘাটে এসে ফেরি নাগাল পেতে গাড়িগুলো দীর্ঘ সময় সিরিয়ালে আটকে থাকছে। যাত্রীবাহী যানবাহনগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নদী পারাপার করলেও পণ্যবাহী ট্রাগুলোকে ফেরির নাগাল পেতে ৫/৬ দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হচ্ছে। গতকাল দুপুরে ঘাট এলাকায় দেখা যায়, চার দিন ধরে সিরিয়ালে আটকে আছে কয়েকশ পণ্যবাহী ট্রাক। এতে দৌলতদিয়া ঘাটের বিশাল ট্রাক পার্কিং ইয়ার্ড উপচে ফেরিঘাটের জিরো পয়েন্ট থেকে মহাসড়কের বাংলাদেশ হ্যাচারীজ পর্যন্ত অন্তত চার কিলোমিটার জুড়ে ট্রাকের দীর্ঘ সারি। এ পরিস্থিতির সুযোগে ঘাট এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয় স্থানীয় প্রভাবশালী দালাল চক্র বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তারা বিআইডবিøউটিসি’র ট্রাক বুকিং কাউন্টারের অসাধু কর্মচারীদের যোগ-সাজসে ট্রাক ড্রাইভারদের কাছ থেকে ফেরির টিকিট বাবদ নির্ধারিত ভাড়ার কয়েকগুন টাকা আদায় করছে। একাধিক ট্রাকচালক অভিযোগ করেন, অতিরিক্ত টাকার বিনিময়ে দালাল না ধরলে ফেরির এখানে টিকিট মেলে না। পাশাপাশি দালাল না ধরে কাউন্টারে টিকিটের জন্য গেলে তাদেরকে টিকিট না দিয়ে ফিরিয়ে দেয়া হচ্ছে।
ঘাটে সিরিয়ালে আটকা কুষ্টিয়া থেকে ছেড়ে আসা ময়দা বোঝাই ট্রাক (নং কুষ্টিয়া ট-১১-০২১২) চালক মাহতাপ আলী জানান, তিনি একাধিক বার টিকিট কাউন্টারে গেলেও টিকিট পাননি। বরং তাকে বলা হয়েছে আপনার মাধ্যম (দালাল)  কে? তিনি নিজেকে চালক পরিচয় দিলে তাকে দালাল ধরার পরামর্শ দিয়ে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে। ১০৬০ টাকার টিকিট দালালরা ১৮০০ টাকা দাবি করে দুইটি মোবাইল নম্বর তাকে দিয়ে গেছেন বলে তিনি জানান।
ভোমরা বন্দর থেকে চকমাটি বোঝাই ট্রাক (নং ঢাকা মেট্টো ট-১৮৬৯৫৫) চালক বাদল ফরাজি জানান, তিনদিন আটকে থাকার পর দালালদের মাধ্যমে ২৭০০ টাকার বিনিময়ে তিনি ফেরির টিকিট হাতে পেয়েছেন। টিকিটের গায়ে মূল্য লেখা আছে ১৪৪০ টাকা। এরপর ফেরি ঘাট পর্যন্ত যেতে কত পয়েন্টে টাকা দিতে হবে তার ঠিক নেই।
ফরিদপুর থেকে আসা ওষুধ বোঝাই কাভার্ড ভ্যান (নং ঢাকা মেট্টো ড-১২০৩৮৫) চালক মো. মমিন বলেন, দালালদের ছাড়া দৌলতদিয়া ঘাটে কনোদিনও ফেরির টিকিট পাওয়া যায় না। ঘাট ফাঁকা থাকলেও টিকিটের জন্য দালাল ধরতে হয়। আর এখন তো লম্বা সিরিয়াল। তিনি ১০৬০ টাকার টিকিট দালালদের মাধ্যমে ১৬০০ টাকা দিয়ে কিনেছেন।
এদিকে বিআইডবিøউটিসি দৌলতদিয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, সরকার নির্ধারিত ফেরি ভাড়া অনুযায়ী প্রতিটি সাধারণ ট্রাক ১০৬০ টাকা এবং বড় আকারের ট্রাক ১৪৬০ টাকা। তবে নির্ধারিত ওজনের চেয়ে বেশি পণ্য বহন করলে অতিরিক্ত ওজনের জন্য প্রতি টন ১২০ টাকা হারে মূল টিকিট মূল্যের সাথে যোগ হয়। এ জন্য ডিজিটাল ওয়েস্কেলের মাধ্যমে ফেরি পার হতে আসা প্রতিটি ট্রাকের সঠিক ওজন পরিমাপ করা হয়। স্কেল থেকে দেওয়া ওজন ¯িøপ অনুযায়ী প্রতিটি ট্রাকের ফেরি ভাড়া আদায় করা হয়।
বিআইডবিøউটিসি’র দৌলতদিয়া ঘাট ব্যবস্থাপক শফিকুল ইসলাম ট্রাক চালকদের কাছে সরাসরি টিকিট বিক্রি করা হয় দাবি করে বলেন, সরকার নির্ধারিত হারের অতিরিক্ত টাকা আদায়ের কোন সুযোগ নেই। দালাল চক্রকে নিয়ন্ত্রন করতে ট্রাক বুকিং কাউন্টারে সার্বক্ষনিক আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী পাহাড়ায় থাকে বলে জানান তিনি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ