Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বেনাপোল সীমান্তে বাড়ছে স্বর্ণ চোরাচালান

| প্রকাশের সময় : ১৭ জুলাই, ২০১৭, ১২:০০ এএম

কৌশল পরিবর্তনের সত্তে¡ও আটক হচ্ছে পাচারকারীরা
বেনাপোল অফিস : বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে স্বর্ণ চোরাচালান বেড়েছে দ্বিগুন হারে। সোনা চোরাচালানীরা বেনাপোল চেকপোস্টকেই নিরাপদ নির্ভরযোগ্য রুট হিসেবে ব্যবহার করছে। সম্প্রতি ভারতে সোনার ওপর নতুন করে জিএসটি আরোপ করায় সোনা চোরাচালান বেড়েছে ব্যাপক। মাত এক দিনের ব্যবধানে আবারো ৩ কেজি সোনার বারসহ বেনাপোল চেকপোস্টে গত শনিবার সকালে রুখসানা বেগম নামে এক পাসপোর্ট যাত্রীকে আটক করেছে কাস্টমস শুল্কগোয়েন্দা সদস্যারা। আটক রুখসানা ঢাকার ওয়ারী এলাকার বাসিন্দা।
এছাড়া গত ৭ দিনে সন্দেহ ভাজন পাসপোর্ট যাত্রীদের তল্লাশী চালিয়ে কাস্টমসের শুল্ক গোয়েন্দারা সাড়ে ৬ কেজি সোনাসহ ৪ জনকে আটক করেছে। আটককৃতদের মধ্যে এক মহিলা যাত্রী রয়েছে। বৈধ এবং অবৈধ পথে ভারতে সোনা পাচারের দীর্ঘদিন যাবৎ অন্যতম রুট হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে বেনাপোল সীমান্ত। আগে অবৈধ পথে ভারত যাতায়াত ঝুঁকিমুক্ত থাকায় বেনাপোল সীমান্তের বিভিন্ন পথ দিয়ে চোরাচালানের মাধ্যমে সোনা ভারতে পাচার হতো। একারণে বেনাপোল সাদিপুর গ্রামকে আগে অনেকেই সোনাপুর বলে ডাকতো। ৮০’র দশকে এই গ্রামের শতাধিক ব্যক্তি সোনা চোরাচালানে সাথে জড়িত ছিল বলে কথিত আছে। পরবর্তীতে সোনা চোরাচালানীরা পাচারের নিরাপদ রুট হিসাবে বেছে নেয় দৌলতপুর সীমান্তের ভারতীয় করিডোর ১৩ ঘরকে। ২০০০ সাল পর্যন্ত এই রুটে সোনা চোরাচালনী ছিল ওপেন সিক্রেট। পরবর্তীতে সোনার বিনিময়ে গরু আসা শুরু হলে চোরাচালানীরা দৌলতপুর সীমান্ত ছেড়ে চলে যায় পুটখালী সীমান্তে। এক নাগাড়ে এই সীমান্ত দিয়ে চলে পনের বছর সোনা চোরা চালানী ব্যবসা।
বিজিবি এবং পুলিশ এ সময়ে অনেকগুলি সোনার পণ্য চালান আটক করেন। তবুও থেমে থাকেনি সোনার চোরাচালান। ভারতে যাচ্ছে সোনার আসছে মাদক এ রকমই একটি শ্লোগান বা গুঞ্জন। সীমান্ত এলাকায় মানুষের মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়ে। গত ২ বছরে ভারত থেকে গুরু আসা বন্ধ হয়ে গেলে সোনা পাচারের বৈধ রুট হিসাবে চোরাচালানীরা বেছে নেয় বেনাপোল চেকপোস্টকে পাসপোটের মাধ্যমে ভারতে যাতায়াত।
গত দু বছরে পাসপোর্ট যাত্রী ও সি এন্ড এফ এজেন্ট কর্মচারীদের দেহ তল্লাশী করে বিজিবি, বিএসএফ ও এবং কাস্টমস পৃথক পৃথক ভাবে অভিযান চালিয়ে ১৪৫ পিস ওজনের ২০ কেজি পরিমান সোনার বারসহ ও ২৫ জন বহনকারী আটক করেছে। তবে এসময় কোন রাঘব বোয়াল ধরা পড়েনি।
বেনাপোল কাস্টমস গোয়েন্দা বিভাগের উপ-পরিচালক(ডেপুটি কমিশনার) সাদিক জানান, তার কাছে তথ্য আছে বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে পাসপোর্ট যাত্রী বেশে একটি সংঘবদ্ধ সিন্ডিকেট দীর্ঘদিন ধরে ভারতে সোনার বিস্কুট পাচার করছে। সুনিদিষ্ট তথ্যের অভাবে এবং আধুনিক প্রযুক্তির অভাবে তাদেরকে সনাক্ত কিংবা আটক করা যাচ্ছেনা। তবে সোর্স ও বুদ্ধিমত্তা খাটিয়ে গত সাত দিনে ৫জন পাসপোর্ট যাত্রীকে আটক করা হয়েছে এবং তাদের কাছ থেকে ২৩ পিস সোনার বিস্কুট উদ্ধার করা হয়েছে যার ওজন প্রায় ৬ কেজি। এ ছাড়া ভারতীয় কাস্টমস ২০টি সোনার বিস্কুটসহ একজন পাসপোর্টযাত্রীকে আটক করেছে। অল্পের জন্য এ চালানটি ফসকে গেছে বলে তিনি জানান।
৪৯ বিজিবি’র কমান্ডিং অফিসার লে.কর্ণেল আরিফুল হক বলেন, বেনাপোল’র বিভিন্ন সীমান্তের চোরাচালানী ঘাট গুলো সীলগালা করে দেওয়া হয়েছে। এ কারণে চোরাচালানীরা পাসপোর্ট ব্যবহার করে সোনা পাচারের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। বিজিবি’র সদস্যারা নোম্যান্সল্যার্ন্ডে সন্দেহভাজনদের গতিবিধির উপর সর্বক্ষনিক নজর রাখছে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ