Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দক্ষিণাঞ্চলের আবহাওয়ায় শরতের আমেজ

| প্রকাশের সময় : ১৭ জুলাই, ২০১৭, ১২:০০ এএম

আষাঢ় বিদায়ের পরে শ্রাবনের ভরা বর্ষা মৌসুমেও স্বাভাবিক বৃষ্টির আকাল
নাছিম উল আলম: দেশের উত্তর থেকে প্রায় মধ্যাঞ্চল পর্যন্ত প্ল­াবনে একের পর এক জনপদ বিপন্ন হলেও আষাঢ়ে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে কাঙ্খিত স্বাভাবিক বৃষ্টি হয়নি। অথচ জুন মাসেই বরিশাল অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা বেশি। চলতি মাসে আবহাওয়া বিভাগের দীর্ঘস্থায়ী বুলেটিনে বরিশাল অঞ্চলে স্বাভাবিক ৫১৯ মিলেমিটারের স্থলে ৪৬৫ থেকে ৫৭০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দেয়া হলেও মাসের প্রথম ১৫ দিনে বৃষ্টি হয়েছে ১৭০ মিলিমিটারেরও কম।
গত তিনদিন ধরে বরিশালের আবহাওয়ায় শরতের প্রতিচ্ছবি। নীল আকাশে সাদা মেঘ ভেসে বেড়াচ্ছে। মনে হয় বর্ষা বিদায় নিয়েছে। সমগ্র দক্ষিণাঞ্চল জুুড়ে বৃষ্টির দেখা নেই বললেই চলে। সাথে তাপমাত্রার পারদও ক্রমশ ওপরে উঠছে। গতকাল বরিশাল সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৪ ডিগ্রী সেলসিয়াস - যা স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা বেশি।
ভরা বর্ষায় আবহাওয়ার এ বিচিত্র আচরণ সকলকেই হতবাক করে দিচ্ছে। গত মার্চ ও এপ্রিলে দক্ষিণাঞ্চলে স্বাভাবিকের চেয়ে যথাক্রমে ১৫২% ও ১৬০%-এর মত বেশি বৃষ্টিপাতের পরে মে মাসে তা ছিল স্বাভাবিকের চেয়ে ৬৫.৯% কম। কিন্তু জুন মাসে বরিশাল অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের পরিমানণ ছিল স্বাভাবিকের চেয়ে প্রায় ৫ ভাগ বেশি। গতমাসে বরিশাল অঞ্চলে স্বাভাবিক ৪৮৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের কথা জানিয়ে আবহাওয়া বিভাগ থেকে ৪৩৫ থেকে ৫৩০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের পূর্ভাবাস দেয়া হলেও তা অতিক্রম করে। গত ২১ জুন দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে ৩টা পর্যন্ত মহানগরীতে প্রায় ১২০ মিলিমিটার রেকর্ড বৃষ্টি হয়েছে। ঐদিন সন্ধা ৬টার পূর্ববর্তী ২৪ ঘন্টায় বরিশালে দেশের সর্বোচ্চ ১৪৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছিল যা ছিল বরিশালে সা¤প্রতিককালে ২৪ ঘন্টায় সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত। ১৯ জুন দুপুরেও বরিশাল মহানগরীতে মাত্র আড়াই ঘন্টায় ৫৮ মিলিমিটারের মত বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। কিন্তু চলতি মাসে দক্ষিণাঞ্চলে এখনো বৃষ্টিপাত স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক পেছনে রয়েছে।
তবে শ্রাবনের আসন্ন অমাবশ্যার ভড়া কোটালে ভর করে দক্ষিণাঞ্চল জুড়েই আবার বৃষ্টি শুরুর সম্ভবনা রয়েছে। আবহাওয়া বিভাগ থেকে আজ সকালের পরবর্তী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে দক্ষিণাঞ্চলসহ সারা দেশেই বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বৃদ্ধির কথাও বলা হয়েছে। যেহেতু মৌসুমী বায়ু উত্তর-বঙ্গোপসাগরে মাঝারী অবস্থায় রয়েছে, সেহেতু যেকোন সময়ই সঞ্চালনশীল মেঘমালা উপকূলসহ দক্ষিণাঞ্চলে ধেয়ে এসে আবার বৃষ্টি ঝরাতে পারে। তা শ্রাবনধারার রূপ নিলেও অস্বাভাবিক হবে না। তবে যেহেতু মৌসুমী বায়ু দেশের মূল ভূভাগে কম সক্রিয় তাই খুব সহশা ভারী বর্ষণের খুব একটা সম্ভবনা নেই।
আবহাওয়া বিভাগের মতে, ভারতের উড়িশ্যা থেকে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ উপকূল অদূরে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গেপসাগরে অবস্থানরত লঘুচাপটি বর্তমানে একই এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমী বায়ুর অক্ষ ভারতের রাজস্থান, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, মধ্য প্রদেশ, বিহার এলাকায় এবং লঘুচাপের কেন্দ্রস্থল বাংলাদেশ হয়ে উত্তর-পূর্ব দিকে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমী বায়ু দেশের ওপর কম সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারী অবস্থায় রয়েছে। তবে আজ বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলে হালকা থেকে মাঝাড়ী বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকলেও সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা বৃদ্ধিসহ রাতের তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকার কথাও জানিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ। তবে আজ সকালের পরবর্তি ২৪ঘন্টায় বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বৃদ্ধির সম্ভবনার কথা জানিয়ে রেখেছে আবহাওয়া বিভাগ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ