Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মীরসরাইয়ে অটো চালক-পুলিশ সংঘর্ষ, ৫ পুলিশসহ আহত ৫০

পাওয়া যাচ্ছে না পুলিশের চাইনিজ রাইফেল

| প্রকাশের সময় : ১৬ জুলাই, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মীরসরাই (চট্টগ্রাম) উপজেলা সংবাদদাতা : চট্টগ্রামের মীরসরাইয়ে সিএনজি অটোরিকসা চালকদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষে পুলিশ, সাংবাদিকসহ কমপক্ষে ৫০ জন আহত হয়েছ। পুলিশের টোকেন বাণিজ্য এবং খৈয়াছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহেদ ইকবালকে অপমাণের প্রতিবাদের অটোরিকসা চালকরা প্রায় দেড় ঘন্টা ঘন্টা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক (ঢাকামুখী অংশ) অবরোধ করে রাখে। অবরোধ সরিয়ে দেয়ার জন্য পুলিশ চালকদের উপর লাঠিচার্জ করলে গতকাল বিকাল সাড়ে ৪টা থেকে বড়তাকিয়া বাজার এলাকায় দফায় দফায় এই সংঘর্ষ চলতে থাকে। এসময় পুলিশ ৩ রাউন্ড গুলি চালায়। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জিয়া আহমেদ সুমন ঘটনাস্থলে গিয়ে চালক ও চেয়ারম্যান জাহেদ ইকবালের সাথে কথা বলে সন্ধ্যা ৭টায় মহাসড়ক থেকে অবরোধ সরিয়ে দেয়। তবে পুলিশের একটি অস্ত্র খোয়া যাওয়ার কারণে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। মিরসরাই থানার পাশাপাশি পাশ্ববর্তী সীতাকুন্ড থানা ও জোরারগঞ্জ থানা পুলিশও অবস্থান নিয়েছে।
পুলিশের লাঠিচার্জ ও চালকদের ইটপাটকেলে কমপক্ষে ৫০জন। আহতরা বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে। এসময় সংবাদ সংগ্রহের জন্য ঘটনাস্থলে গেলে দৈনিক সমকাল পত্রিকার মিরসরাই প্রতিনিধি বিপুল দাশ ও আহত হয়।
খইয়াছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহেদ ইকবাল চৌধুরী জানান গতকাল বড়তাকিয়া বাজার থেকে বিকালে আমি একটি অটোরিকসা নিয়ে জানাযায় যাচ্ছিলেন। এসময় জোরারগঞ্জ চৌধুরী হাট হাইওয়ে পুলিশের এএসআই জাকির ওই অটোরিকসাটি আটক করে। আমি চেয়ারম্যান পরিচয় দিয়ে অটোরিকসাটি ছাড়ার অনুরোধ করলে না ছাড়ায় চেয়ারম্যান ক্ষিপ্ত হয়ে উঠার পর সিএনজি চালক ও পুলিশের মধ্যে একপর্যায়ে টোকেন নিয়ে বাকবিতন্ডা শুরু হলে। সিএনজি চালকদের লাঠিচার্জ করে পুলিশ। বড়তাকিয়া বাজারের অটোরিকসা স্ট্যান্ডে উক্ত খবর পৌঁছলে চালকরা শত শত অটোরিকসা নিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে অবস্থান করে সড়ক অবরোধ করে। এসময় চেয়ারম্যান জাহেদ ইকবাল পুলিশের টোকেন চাঁদাবাজি ও তাকে অপমানে প্রতিবাদে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত অবরোধ ঘোষণা করে।
এদিকে সংঘর্ষ ও অবরোধের খবর পেয়ে মীরসরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জিয়া আহমেদ সুমন ঘটনাস্থলে গিয়ে চেয়ারম্যান জাহেদ ইকবালের সহযোগিতা নিয়ে চালকদের শান্ত করে। পরে চেয়ারম্যান ও অবরোধকারীদের সাথে বৈঠক করে তাদের দাবি আদায়ের আশ্বাস দিলে সন্ধ্যা ৭টায় অবরোধ তুলে নেয়া হয়।
খইয়াছড়া ইউনিয়নের চেয়াম্যান জাহেদ ইবকাল জানান, এখন থেকে কোন আটোরিকশা চালক পুলিশের কোন টোকেন নিবে না। মহাসড়কে চালকদের হয়রানি বন্ধ করা, টোকেন বাণিজ্য বন্ধ করা, হাইওয়ে পুলিশের এএসআই জাকিরকে প্রত্যাহারসহ তাদের দাবি পূরণের জন্য আগামী ২২ জুলাই পর্যন্ত সময় দেয়া হয়েছে। এরমধ্যে দাবি আদায় না হলে আবার সড়ক অবরোধসহ কর্মসূচী দেয়া হবে।
এই বিষয়ে পুলিশের মিরসরাই সার্কেল এর এএসপি মাহবুবুর রহমান জানান দায়িত্ব পালন কালে অফিসারসহ আমাদের ৫জন পুলিশ সদস্যকে মেরে আহত করা ও আমাদের কনষ্টেবল থেকে চাইনিজ রাইফেল সেভেন সিক্স পয়েন্ট টু নিয়ে যাওয়ার মতো অপরাধ সহ সকল বিষয় তদন্ত করা হবে।
জোরারগঞ্জ চৌধুরী হাট হাইওয়ে পুলিশের ইনচার্জ এসআই শফিকুর রহমান বলেন আমাদের অফিসার দায়িত্বপালন করছিলেন। আর সেসময় সড়ক ও সেতুমন্ত্রীর চট্টগ্রাম যাচ্ছিলেন তাই পুলিশ কর্মকর্তা কিছুটা উৎকন্ঠিত ছিলেন। কিন্তু পরবর্তী ঘটনা নিয়ে আমরা বিব্রত। মিরসরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জিয়া আহমেদ সুমন জানান, চালকদের সাথে কথা বলে অবরোধ সরিয়ে দেয়া হয়েছে। পরে সংশ্লিষ্টদের নিয়ে আলাপ আলোচনা করে সকল বিষয়ের সমাধান করে দেয়া হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ