Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বরিশাল-স্বরূপকাঠি ভায়া নবগ্রাম রোডের বেহাল দশা দুর্ভোগে হাজারো মানুষ

৮ কি.মি. রাস্তার ৫ কি.মি. খানাখন্দ

| প্রকাশের সময় : ১৫ জুলাই, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মোঃ হাবিবুল্লাহ, নেছারাবাদ (পিরোজপুর) থেকে : প্রায় ৮কিঃমিঃ রাস্তার সিংহভাগ জুড়েই খানাখন্দ। গাড়ি চলে হেলে দুলে। সর্বত্র রাস্তার পিচ ও খোয়া উঠে জায়গায় জায়গায় সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্ত। চলতি বর্ষায় সেসব গর্তে বর্ষার পানি জমে রাস্তার মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে ছোট ছোট নালার ন্যায়। রাস্তাটি দিয়ে প্রতিনিয়ত আসা যাওয়া করছে ছয় শতাধিক ব্যাটারিচালিত অটো, রিক্সা, মোটরসাইকেল। এছাড়াও বাংলার আপেলখ্যাত কুড়িয়ানার এই ভরা পেয়ারা মৌসুমে ভাঙ্গাচোড়া ওই রাস্তা দিয়ে রাজধানীসহ দেশের ভিবিন্ন অঞ্চলে চলাচল করছে পেয়ারা ভর্তি মিনি ট্রাক। ওই রাস্তায় সর্বদা চলাচল রয়েছে আটঘর কুড়িয়ানা ইউনিয়নের কয়েক হাজার বাসিন্দাসহ কয়েক শতাধিক পথচারিদের। রাস্তার এই বেহাল দশায় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে তাদের। বিশেষকরে, রাস্তার এই দুর্ভোগকে এখন এক প্রকার সঙ্গী করে নিতে হয়েছে আটঘর কুড়িয়ানা থেকে উপজেলা সদরে যোগাযোগ রক্ষাকারী স্কুল কলেজগামী শিক্ষার্থীসহ অত্র ইউনিয়নের মানুষ ও রাস্তার গাড়ী ড্রাইভারদের। এ হল সড়ক বিভাগের আওতাধীন বরিশাল টু স্বরূপকাঠি ভায়া নবগ্রাম রোডের সরেজমিন ঘুরে বেহাল বর্ণনার কথা।

কথা হয় নেছারাবাদের হাসপাতাল রোড থেকে পানাউল্লাহপুর, বৌবাজার রাস্তা পর্যন্ত ওই রাস্তায় চলাচলকারি মোঃ আলআমীন(৫২) নামে এক অটো চালকের সাথে। ‘ঝুক্কুর ঝুক্কুর ময়মনসিংহ, আইতে যাইতে কতদিন?’ এভাবে, ছন্দের সুরে রাস্তাটির দুর্দশার কথা বলে, আলআমীন বলে, বর্তমানে ওই রাস্তাটির করুন চিত্রের কথা মুখে বলে শেষ করা যাবেনা। গত সপ্তাহখানেক আগে রাস্তার খানাখন্দে পড়ে তার গাড়ীটি ভেঙ্গে অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এজন্য মালিকের গাড়ী সারতে দুই হাজার টাকা জরিমানা গুনতে হয়েছে। বর্তমানে, যাত্রী নিয়ে অতিব সাবধানে গরুর গাড়ীর ন্যায় ধীরে ধীরে চলতে হয়। যেকারনে যাত্রীসহ সর্বোপরি আমাদের নানা সমস্যা হচ্ছে। ওই রোডের চালক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ সোলায়মান বলেন, রাস্তা ভাঙ্গাচোড়ার কারনে ত্রিশ মিনিটের পথ; এখন এক ঘন্টায় যেতে হচ্ছে। বেহাল দশার ওই রাস্তায় যাত্রী নিয়ে চলাচল ক্রমেই খুবই ঝুঁকিপূর্ন হয়ে উঠছে। ওই রাস্তায় গাড়ী চালালে সর্বদাই এখন আতঙ্কে থাকতে হয়।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, স্বরূপকাঠি টু আটঘর কুড়িয়ানা রোডের এপেক্স ক্লিনিকের পর চান্দু মিয়ার চিড়া মিল থেকে আকলম খেলার মাঠ পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার সড়কের পিচ ও খোয়া উঠে তৈরী হয়েছে খানাখন্দের। কোথাও কোথাও গেছে ধেবে। আবার আকলম বিদ্যালয় থেকে ২নং ব্রীজ, মাহমুদকাঠি হাসপাতাল থেকে কাটাপুল, কুড়িয়ানা কলেজ থেকে জিন্দাকাঠি গোবিন্দ মন্দির সর্বমোট প্রায় ৬কিলোমিটার রাস্তা জায়গা জায়গা দিয়ে পিচ ও খোয়া উঠে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্তের। সেইসব গর্তে বৃষ্টির পানি জমে আটকে থাকায় খন্দে প্রায়ই ধেকে যায় অটোরিক্সার চাকা। কখনো ওই গর্তে পেয়ারা ভর্তি মিনি ট্রাকের চাকা ধেবে গিয়ে ঘটছে সমস্যা। এতে ঘটেই চলছে ছোট খাট দুর্ঘটনা।
আটঘর কুড়িয়ানা পেয়ারা কল্যান চাষী সমিতির সভাপতি নিত্যনন্দন সমদ্দার বলেন, রাস্তাটির অবস্থা চরম খারাপ। এ ব্যাপারে লোকাল জনপ্রতিনিধিদের কোন ব্যাবস্থা নিতে দেখছিনা। রাস্তার গর্তে পেয়ারার সিজনে গাড়ী চাকা ধেবে আটকে নানা সমস্যা হচ্ছে। মৃধাবাড়ী জিন্দাকাঠি ব্রীজের গোড়ায়তো নদীর মত সৃষ্টি হয়েছে। এতে সর্ব সাধারনের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। পশ্চিম জিন্দাকঠির বিরেন মালীর দরজার কাছে রাস্তার একটা পাশ ধশ নামিয়া গেছে।
অটোচালক মিঠু বলে, ভাড়ায় গাড়ী চালাই। রাস্তার ভাঙ্গাচোড়ার কারনে গাড়ীর স্প্রীরিং ভেঙ্গে যাচ্ছে। সপ্তাহে তিন থেকে চার বার গাড়ী সারানো লাগে। পিরোজপুর সওজ এর উপসহকারী প্রকৌশলি মো. হামিদুর রহমান বলেন, বরিশাল টু স্বরূপকাঠি ভায়া নবগ্রামের ওই রাস্তাটির কয়েকটি ঝুঁকিপূর্ন কালভার্ট ও দুটি ব্রীজসহ রাস্তাটি পূর্ন নির্মানের স্টিমিট করে বরিশাল সার্কেলে পাঠানো হয়েছে। এতে প্রায় ত্রিশ কোটি টাকার ব্যায় ধরা হয়েছে। স্টিমিট পাশ হয়ে আসলে শ্রীঘ্রই টেন্ডারের মাধ্যমে কাজ ধরা হবে। স্টিমিট পাশ হয়ে আসলে; কত সময়ের মধ্যে রাস্তাটির কাজ ধরা হতে পারে জানতে চাইলে, তিনি আরো জানান এতে প্রায় দেড় বছরের মত সময় লেগে যেতে পারে। আটঘর কুড়িয়ানা ইউপি চেয়ারম্যান শেখর কুমার সিকদার বলেন, শুনেছি আগামী বছরে মধ্যে রাস্তার কয়েকটি ব্রীজ নির্মান করে রাস্তাটির কাজ ধরা হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ