Inqilab Logo

শনিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

বাংলাদেশী পণ্য ভারতে চাহিদা বাড়ছে

| প্রকাশের সময় : ১৪ জুলাই, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মিজানুর রহমান তোতা : ভারতে রফতানী বাণিজ্যের সম্ভাবনা উজ্জ্বল হচ্ছে। দিনে দিনে বাড়ছে রফতানীর তালিকা। ভারতীয়দের কাছে বাংলাদেশী অনেক পণ্যের ব্যাপক চাহিদা বাড়ছে। কিন্তু ভারত সরকারের নানা প্রতিবন্ধকতার কারণে রফতানীর গতি শ্লো হচ্ছে, দ্রæত সম্প্রসারিত হচ্ছে না বাজার । এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে পাট এবং পাটজাত পণ্য। বাংলাদেশ-ভারত চেম্বার অব কমার্সের ইমপোর্ট কমিটির চেয়ারম্যান বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মতিয়ার রহমান গতকাল দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, ভারত সরকার এন্ট্রি ডাম্পিং ট্যাক্স ইমপোজ করায় জুট এ্যান্ড জুট গুডস এক্সপোর্ট বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। অথচ ভারতের পণ্য রফতানীর ক্ষেত্রে কোনরুপ প্রতিবন্ধকতা নেই। শুধু পাট এবং পাটজাত পণ্যের ক্ষেত্রে নয়, ভারতে রফতানী বৃদ্ধি করতে জরুরি পদক্ষেপ নেয়া দরকার। কারণ যে সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে বাস্তবে তার যথাযথ কাজে লাগাতে হবে।
বেনাপোল স্থলবন্দর, কাস্টমস হাউজ, রফতানীকারক ও সিএ্যান্ডএফ এজেন্টসহ সংশ্লিষ্ট একাধিক সুত্র জানায়, ভারতের বাজারে যেসব পণ্যের চাহিদা রয়েছে, সেসব মানসন্মত পণ্য উৎপাদনের দিকে নজর দিতে হবে, তাহলে বাজার ধরা আরো সহজ হবে। সুত্র জানায়, পাটের সুতা, কার্পেট, ব্যাগ, চট, বস্তা, জামদানী শাড়ী, ট্রথ ব্রাশ, প্লাষ্টিক হ্যাঙ্গার, নারিকেল পাতার শলা, ঝাড়–, রেডিমেড গার্মেন্টস, হস্তশিল্প, গার্মেন্টস ঝুট, ওয়েস্ট কটন, চালের গুড়া, ধানের কুড়া, চুল, সাবান, ব্যাটারী, গ্যাস, মাছ, সুপারী ও মেগগিনি ফলসহ অন্তত ৯২টি পণ্য ভারতে রফতানী হচ্ছে বর্তমানে। আরো নতুন পণ্য যুক্ত করার প্রস্তুতি চলছে। ওপারের একটি সুত্র জানায়, বাংলাদেশের সুতী শাড়ী, জামদানী শাড়ির ব্যাপক চাহিদা। একসময় ভারতের সুতী শাড়ি চোরাচালানের তালিকায় শীর্ষে ছিল। এখন শূন্যে কোটায় ঠেকেছে। ন্যুনতম চাহিদা নেই। সুত্রমতে, ভারতীয়দের কাছে যশোর, রাজশাহী, নরসিংদী, পাবনা, মীরপুর, সিরাজগঞ্জ ও শাহজাদপুরসহ তাঁত পল্লীর সূতি বøক ও বাটিক প্রিন্টের শাড়ী এবং হস্তশিল্পের সূতি কাপড় খুবই পছন্দের। ইলিশের মতোই বাংলাদেশী সুতী শাড়ি ও জামদানী শাড়ির চাহিদা সৃষ্টি হয়েছে।
সুত্র জানায়, বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে মাঝেমধ্যেই বাংলাদেশের সূতী কাপড় রফতানী হয়। অথচ ভারত থেকে সুতী শাড়ী চোরাচালানের কারণেই দেশের তাঁত শিল্প চলতো খুঁড়িয়ে। এমনকি শিল্পটির সাফল্যের ইতিহাস মুছে যাওয়ার উপক্রম হয়। বর্তমানে প্রমাণিত ও পরীক্ষিত ব্যাপার যে, ভারতের সুতী শাড়ীর চেয়ে বাংলাদেশী তাঁতের শাড়ী টেকসই বেশী। যা শাড়ী ব্যবহারের পরও কাঁথা তৈরীসহ বিভিন্ন কাজে লাগানো যায়। সুত্রমতে, বাংলাদেশ আরো ‘ব্রান্ডেড প্রোডাক্ট’-এর দিকে দৃষ্টি দিলে ভারতীয় পণ্য ভোক্তাদের কাছে চাহিদা আরো বাড়বে। তাতে শিল্প অর্থনীতিতে বাংলাদেশ ঈর্ষণীয় পর্যায়ে পৌঁছাতে সক্ষম হবে খুব সহজেই।
সুত্র জানায়, বেনাপোল, দর্শনা ও ভোমরা দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ এই ৩টি স্থলবন্দর দিয়ে একটা বড় অংশের পণ্য আমদানী ও রফতানী হয়ে থাকে। আমদানী ও রফতানীতে গতিশীলতা সৃষ্টির জন্য স্থলবন্দরগুলোর লজিস্টিক সাপোর্ট ও জনবল বৃদ্ধি করা খুবই জরুরী। একইসাথে কলিকাতার ডিপার্টমেন্টাল স্টোর, শপিং মল ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বাংলাদেশী যেসব পণ্যের চাহিদা রয়েছে, তার খোঁজ নিয়ে সেসব পণ্য রফতানী জোরদার করার ব্যবস্থা নিতে হবে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগকে। তাহলে সম্ভাবনার বাস্তব ফল পাবে বাংলাদেশ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বাংলাদেশী পণ্য
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ