পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সায়ীদ আবদুল মালিক : বৃষ্টি ও যানজটের দুর্ভোগে পড়েছে রাজধানীবাসী। অপরিকল্পিত খোঁড়াখুঁড়ি আর টানা বর্ষণে সড়কের অবস্থাও বেহাল। রাস্তায় নেমেই নগরবাসীকে পড়তে হচ্ছে যানজটের দুর্ভোগে। বৃষ্টির কারণে রাস্তায় ছিল অসহনীয় যানজট। ১০ মিটিটের পথ যেতে সময় লাগেছে দেড় থেকে দুই ঘণ্টা। গাড়ির চাকা যেন ঘুরতেই চায় না। এক মিনিট চলেতো ২০মিনিট থেমে থাকা। স্কুলে যাওয়া শিশুরা, কলেজ, মাদ্রাসা ও বিশ্ববিদ্যালয় যাওয়া ছাত্রছাত্রী, অফিস আদালতসহ নানা প্রয়োজনে মানুষ রাস্তায় নেমেই পড়েছে দুর্ভোগে। কোথায়ও যানজট আবার কোথায়ও যানবাহনের সঙ্কট।
এদিকে রাজধানীর মগবাজার, মালিবাগ ও মৌচাক এলাকার রাস্তার অবস্থা চোখে না দেখলে বিশ্বাস হবে না, কি করুন অবস্থা হয়ে আছে। ফ্লাইওভারের নির্মাণ কাজের ধীরগতির জন্য এ রাস্তা দিয়ে এখন জনসাধারণের চলাচল একেবারেই অসম্ভব হয়ে পড়েছে। তুবুও মানুষ জীবনের ঝুকি নিয়ে এ রাস্তাদিয়ে যাতায়াত করছে। গত কয়েকদিনের হালকা বৃষ্টিতে রাজধানীর অলিগলি ও রাজপথে কাঁদা পানি মিলে একাকার হয়েগেছে। আর এতে নগরবাসী পড়েছে ভোগান্তিতে।
রাজধানীতে গত কয়েকদিন ধরে কখনও হালকা কখনও ভারি বর্ষণ হচ্ছে। এতে নগরীর নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোসহ পাড়া মহল্লার রাস্তায় পানি জমে সৃষ্টি হয়েছে চরম ভোগান্তির। থেমে থেমে বৃষ্টি হওয়ার কারণে কোন কোন এলাকায় কাদা আর পানি মিলে একাকার হয়ে সৃষ্টি হচ্ছে বাড়তি ভোগান্তির। বৃষ্টির কারণে যানজট শহরজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। গাবতলী থেকে সায়েদাবাদ, পুরান ঢাকা থেকে উত্তরা সবখানেই ছিল একই চিত্র। বিশেষ করে বিকেলে অফিস থেকে ঘরে ফেরা মানুষ পড়েছিল চরম দূর্ভোগে। গতকাল মঙ্গলবার সরেজমিন দেখা গেছে, রাজধানীর শান্তিনগর, মালিবাগ, আগারগাঁও, মিরপুর, যাত্রাবাড়িসহ বেশকিছু এলাকা ও মহাসড়কে বৃষ্টির কারণে তৈরি হয়েছে পানিবদ্ধতা। অপরিকল্পিত নগরায়নে পানি জমার সমস্যাটা দিন দিন প্রকট হচ্ছে বলছেন নগর পরিকল্পনাবিদরা। এদিকে গুঁড়ি গুঁড়ি আর ভারি বৃষ্টি মাথায় নিয়ে মঙ্গলবার স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, বিশ্ববিদ্যালসহ বিভিন্ন অফিস আদালতে চাকরিজিবীরা ও নানা প্রয়োজনে মানুষ ঘর থেকে বের হয়েই বিপাকে পড়ে। বিভিন্ন জায়গায় পানিবদ্ধতার কারণে নগরবাসীর দুর্ভোগের যেন শেষ ছিল না। পানিবদ্ধতার কারণে জুতা খুলে যাতায়াত করতে দেখা গেছে অনেককে। কোথাও কোথাও রাস্তায় জমে থাকা পানি বাসে উঠার সিড়ি পর্যন্ত উঠে যাচ্ছে। এতে বাসে উঠা-নামা করার সময় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে যাত্রীদের।
পানি জমে যাওয়ায় রাস্তায় খানা খন্দকে রিকশা ভ্যান পড়ে আহত হয়েছেন আনেকে। এলাকার অনেক অলিগলির ড্রেন উপচে পড়ে রাস্তাঘাট ঘর বাড়িতে পানি একাকার হয়ে গেছে। ফলে রাস্তায় জন-সাধারণের ভোগান্তি ছিল চোখে পড়ার মতো। এদিকে নগর পরিকল্পনাবিদরা বলছেন, অপরিকল্পিত নগরায়নে পানি জমার সমস্যাটা দিন দিন প্রকট হচ্ছে। এছাড়া প্রতিবছর কার্পেটিং করায় অধিকাংশ সড়ক স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি উঁচু হচ্ছে। আর বসত এলাকা নিচু হচ্ছে। এছাড়া পানিবদ্ধতার অন্যতম কারণ হিসাবে রাজধানীর অপরিকল্পিত ও অপর্যাপ্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থা দায়ী। আর পরিকল্পিত নগর ব্যবস্থা নিশ্চিত করা না গেলে রাজধানীবাসীর দুর্দশা আরো বাড়বে বলে মনে করেন নগর পরিকল্পনাবিদরা।
বর্তমানে ঢাকা শহরের প্রাণ কেন্দ্র মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভার নির্মাণকাজ চলায় এ এলাকার বেশ কয়েকটি রাস্তার অবস্থা বেহাল। তাই এ এলাকার রাস্তাগুলোতে যানজট সকাল-দুপুর, রাত-দিন সবসময় লেগেই থাকে। এ থেকেই সারা শহর জুড়ে যানজট ছড়িয়ে পড়ে। এ কারণেই রাজধানীর যানজট এখন সাপ্তাহের সাত দিনই থাকে। বিশেষ করে কর্মদিবসের শুরুর দিন রোববার, প্রথানমন্ত্রী সচিবালয়ে অফিস করেন সোমবার আর কর্মদিবসের শেষ দিন বৃহস্পতিবার এ তিনদিন রাজধানীর রাস্তায় ভয়াবহ যানজটে সৃষ্টি হয়। এ সময় নগরবাসীকে রাস্তায় নেমেই চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়। নগরীর অধিকাংশ সড়কের পাশে সিটি কর্পোরেশনের ড্রেন ও ওয়াসার পানির সংযোগ লাইনসহ বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থার কাজ চলমান থাকায় খোঁড়া গর্তে পানি জমে সড়কের সঙ্গে সমান হয়ে গেছে। এসব গর্তে পড়ে দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন পথচারীরা। মেট্রোরেলের কাজের কারণে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে মিরপুরবাসীর। এমনিতেই রাস্তার অর্ধেক খোঁড়া, তারমধ্যে বৃষ্টি তাদের বেশ দুর্ভোগ বাড়িয়ে দিচ্ছে।
মালিবাগ থেকে মাসুম নামের এক শিক্ষার্থী জানান, বৃষ্টিতে রাস্তায় বাস কম থাকায় বাসে উঠা যাচ্ছে না। আবার রাস্তার বেহাল দশার কারণে রিকশাও যেতে চাইছে না। ভাড়া চাচ্ছে আগের চেয়ে অনেক বেশি। নোংরা পানি ও কাঁদার কারণে ফুটপাত দিয়ে হেঁটে যাওয়াও কষ্টকর।
বাড্ডা থেকে অফিসের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়ে রাস্তায় কাদা ও নোংরা পানিসহ নানা সমস্যার কথা জানিয়েছেন রাসেল নামের এক কর্মজাবী। তবে শুধু বাড্ডা-মিরপুর কিংবা মালিবাগ নয়, রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টির পানিতে সৃষ্ট নানা দুর্ভোগের কথা জানিয়েছেন অনেক পথচারী।
ভুক্তভোগীরা বলছেন, যেখানে সেখানে খোঁড়াখুঁড়ি আর অপরিকল্পিত উন্নয়ন কর্মকান্ডের কারণে নগরবাসীর দুর্ভোগ যেন বেড়েই চলছে। তবে এ দুর্ভোগ লাঘবে সংশিষ্টদের কোনো তৎপরতাও চোখে পড়ে না। দীর্ঘদিন ধরে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার ড্রেনেজ ব্যবস্থার সংস্কার কাজ হচ্ছে না। আবার কোন কোন এলাকায় পর্যাপ্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থাও নেই। যে কারণে সামান্য বৃষ্টি হলেই রাজধানীর প্রধান সড়ক থেকে অলিগলি সর্বত্রই পানিতে ডুবে যায়। রাজধানীর ডিএনডি বাঁধসহ বহু এলাকায় একটু বৃষ্টি হলেই হাঁটু পানি জমে যায়। এতে বৃষ্টির পানি জমে থাকে দিনের পর দিন। হাঁটু পানিতেই চলাচল করতে হয় ওইসব এলাকার মানুষকে। পুরান ঢাকার ড্রেনেজ ব্যবস্থা সবচেয়ে অপ্রতুল। হালকা বৃষ্টি হলেই ড্রেন ভরে রাস্তায় জমে যায় পানি। দুর্গন্ধযুক্ত ও পচা পানিতেই চলতে হয়ে পুরান ঢাকাবাসীকে। একই অবস্থা রাজধানীর অন্যান্য এলাকারও।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।