Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অনির্বাচিত সরকার ক্ষমতা হারানোর আতঙ্কে ভুগছে -রিজভী

| প্রকাশের সময় : ১১ জুলাই, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : অনির্বাচিত সরকার ক্ষমতা হারানোর আতঙ্কে ভুগছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ। তিনি বলেন, ক্ষমতা ছেড়ে দিলে কি হবে সেই আশঙ্কা থেকেই প্রধানমন্ত্রী পুলিশ বাহিনীকে নিজের মতো করে সাজিয়েছেস। আইন-শৃঙ্খলার অন্যান্য সংগঠনগুলোও একইভাবে সাজানো হয়েছে। নিজের নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরি করে ক্ষমতায় টিকে থাকার চেষ্টা করছেন। তিনি বলেন, নির্বাচিত সরকার ও প্রধানমন্ত্রী হলে এই আশঙ্কা ও ভয় থাকতো না। গতকাল (সোমবার) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত এক সভায় রিজভী এসব কথা বলেন। বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব কারাবন্দী আসলাম চৌধুরীর (এফসিএ) মুক্তি দাবিতে এই প্রতিবাদ সভার আয়োজন করা হয়। এর আগে একই দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধনের আয়োজন করে আসলাম চৌধুরী মুক্তি পরিষদ। কিন্তু মানববন্ধনে পুলিশ বাধা দেয়ায় ডিআরইউতে তাৎক্ষণিকভাবে এই প্রতিবাদ সভা হয়।
বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, সুপ্রিম কোর্টের বিচারক অপসারণের ক্ষমতায় সংসদের হাত থেকে চলে যাওয়ায় সরকারের মাঝে এক বিমর্ষভাব ও হতাশা তৈরি হয়েছে। এখন তারা ভাবছে আবার সামনে কোনো বিপদের মুখে পড়ি কিনা? যে সরকার জীবন এবং চলাচলকে আদালতের বারান্দার মধ্যে জেলখানার মধ্যে বন্দি করে রেখেছে তাদের হাতে বিচারক অপসারণের ক্ষমতা গেলে ওই সংসদ হবে নেকড়েদের খোয়াড়। কারণ তারা রক্ত গ্রহণ করবে, রক্তের স্বাদ নেবে। বিরোধী দলের লাশের ওপর তারা সংসদের ইমারত নির্মাণ করবে।
শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের শাসনকালকে অন্যায় ও অন্যায্য বলায় এর সমালোচনা করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, জিয়াউর রহমানের জন্ম না হলে তো বাংলাদেশের স্বাধীনতার বাঁশিতে ফুঁ দেয়ার লোকই পাওয়া যেতো না। বাংলাদেশে বহুদলীয় রাজনীতির সুযোগ থাকতো না। আপনারাও পরবর্তীতে আর রাজনীতির সুযোগ পেতেন না। শুধু তাই নয় আজকে যে শেখ হাসিনা ভারতের কাছে ট্রানজিট দিয়েছেন, আমাদের স্বাধীনতাকে বিপন্ন করেছেন পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্রের কাছে। আমাদের জীবন-জীবিকা এবং বিকাশকে বাধাগ্রস্ত করেছেন ভারতের আগ্রাসনের কাছে। সেখান থেকে মুক্ত করেছেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। আর আপনারা তো ভারতে পালিয়ে গেছেন। নাকে তেল দিয়ে ঘুমিয়েছিলেন। অথচ যিনি স্বাধীনতার মন্ত্র শোনালেন তার শাসনকাল অন্যায্য হয়ে গেল!
তিনি সরকারের সমালোচনা করে বলেন, এই সরকার জনগণের ভোটে ক্ষমতায় আসেনি। তাদের জনগণের প্রতি কোনো দায়বদ্ধতা নেই। আসলে সরকার ভোটারবিহীন এবং ভোটাধিকারবিহীন ভাবেই ক্ষমতায় থাকতে চায়। ভোটবিহীন সরকার ক্ষমতার মজার কারণেই ভোটবিহীন থাকতে চায়।
আসলাম চৌধুরীর মুক্তি দাবি করে বিএনপি’র এই নেতা বলেন, ইসরাঈলের একজন কর্মকর্তার সাথে কথা বলার অপরাধে আসলাম চৌধুরীকে বন্দি করা হয়েছে। কিন্তু অন্যায় কি হয়েছে তা বলা হয়নি? পৃথিবীর বহু আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বিভিন্ন দেশের লোক আসে। তাদের কারো সাথে কথা বলাটাই কি অন্যায়? ওই ব্যক্তির সাথে আসলাম চৌধুরী কি বলেছেন সেটা তো আপনারা এখনো বলেননি। একই বিষয়ে প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, আপনি এবং আপনার যারা সমর্থক, বাংলাদেশ সরকারকে যারা টিকিয়ে রেখেছে তাদের প্রধানমন্ত্রী (নরেন্দ্র মোদী) তো ইসরাঈলের প্রধানমন্ত্রীর সাথে গলা মেলাচ্ছে। কিন্তু ভারতের ঘোষিত নীতি ছিল ফিলিস্তিনের পক্ষে। কই বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী তো এর প্রতিবাদ করলেন না। অথচ এখনো বাংলাদেশের পাসপোর্টে আছে ইসরাঈলে সাথে কোনো সম্পর্ক রাখা যাবেনা। আসলে ক্ষমতায় থাকার জন্য সরকার নিজের দেশকে বিক্রিও করে দিতে পারে। সুতরাং সময় এসেছে লায়ন আসলাম চৌধুরীকে আর বেশিদিন কারাগারের লৌহকপাটে আটকে রাখা যাবেনা। সময় এসেছে আপনাদেরকেই আদালতের বারান্দায় ঘুরতে হবে। জনগণের বিজয় হবে এবং আসলাম চৌধুরীরা মুক্তি পাবে।
প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধনে পুলিশী বাধার তীব্র নিন্দা জানিয়ে রিজভী বলেন, এই সরকারের পুলিশ বলছে মানববন্ধন করলে নাকি প্রধানমন্ত্রীর চলাচলে বিঘœ হবে। আমরা মানববন্ধন করলে প্রধানমন্ত্রীর অসুবিধা কি? বিএনপির একটু ক্ষীণ কথা শুনেও যদি আপনাদের শঙ্কা হয় তাহলে প্রধানমন্ত্রীত্ব করার দরকার কি?
মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, ক্ষমতাসীনদের কাছ থেকে ভালো কোনো কিছু প্রত্যাশা করা ভুল। তারা স্বৈরতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে। আসলাম চৌধুরী যদি মেন্দি এন সাফাদির সাথে কথা বলার কারণে গ্রেফতার হন তাহলে তো সবার আগে শাস্তি হওয়া উচিত সরকারের। সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর। কারণ ফিলিপাইনের রাষ্ট্রদুত জন গোমেজ তার সরকারি বাসভবনে ইসরাঈলের নেতাকে নৈশভোজ খাইয়েছেন। তার মানে সরকারের সম্মতিতে সেটা হয়েছে। সেটারও তো বিচার হওয়া দরকার। সংগঠনের সভাপতি প্রফেসর জসীম উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সভায় অন্যদের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা কাদের গনি চৌধুরী, শফিউল বারী বাবু, আব্দুল কাদের ভুইয়া জুয়েল, সুশীল বড়–য়া সহ চট্টগ্রামের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।#####



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রিজভী

৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ