Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সড়ক খানাখন্দ থাকলেও ফেরৎ এডিপির সাড়ে ৩ কোটি টাকা

| প্রকাশের সময় : ১১ জুলাই, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মোস্তফা মাজেদ, ঝিনাইদহ : ঝিনাইদহের বিভিন্ন সড়ক মহাসড়ক যখন খানাখন্দকে ভরা তখন সাড়ে ৩ কোটি টাকা কাজ না করে ফেরৎ দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে ঝিনাইদহ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সেলিম আজাদ খানকে কারণ দর্শানোর নেটিশ দেওয়া হয়েছে। কৈফিয়ত তলবের চিঠিতে সরকারের উন্নয়ন কাজে বাধাগ্রস্ত ও দায়িত্ব পালতে চরম ব্যর্থতা ও অবহেলার অভিযোগ আনা হয়েছে। খুলনা জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোঃ রুহুল আমীন তার দপ্তরের ই-৯/০১/২ নং স্মারকে উন্নয়ন প্রকল্পে বরাদ্দকৃত অর্থ ব্যয় নিশ্চিত না হওয়ায় কৈফিয়ৎ তলব করে চিঠি দেন। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ঝিনাইদহ-চুয়াডাঙ্গা-মুজিবনগর-মেহেরপুর সড়ক উন্নয়নে মূল এডিপিতে ৩০ কোটি টাকার বরাদ্দ প্রদান করা হয়। মূল বরাদ্দের বিপরীতে ঝিনাইদহ সড়ক বিভাগ হতে প্রথম কিস্তি হিসেবে সাড়ে ৭ কোটি টাকা ছাড় করনের প্রস্তাব প্রেরণ করা হলে মন্ত্রনালয় থেকে ওই টাকা ছাড় করা হয়। পরবর্তীতে বর্ণিত প্রকল্পের সবগুলো চুক্তির কাজ বিলম্ব হলে বরাদ্দকৃত অর্থ ব্যয়ে অনিশ্চিয়তা দেখা দেয়। ফলে ছাড়কৃত অর্থ আরএডিপিতে সমর্পনের প্রস্তাব করা হয়। সে হিসেবে আরএডিপিতে টাকা বরাদ্দ চূড়ান্ত করে মন্ত্রনালয়। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে আরএডিপিতে প্রাপ্ত বরাদ্দ অনুযায়ী সাড়ে ১২ কোটি টাকা ১৮ মে ২০১৭ তারিখে ছাড়ের জন্য প্রস্তাব পাঠালে তা অনুমোদন করা হয়। চিঠিতে বলা হয় ছাড়কৃত অর্থ ব্যয়ে কোন ধরণের অনিশ্চয়তা থাকলে তা প্রকল্প ব্যবস্থাপককে অবহিত করার নির্দেশনা ছিল। কিন্তু ঝিনাইদহ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সেলিম আজাদ খান যথা সময়ে চলমান কাজের অগ্রগতি বা তথ্য ব্যয়ের কোন ধারনা দেন নি। ফলে চুক্তিকৃত কাজ শেষ করে অতিরিক্ত অর্থ অন্য কোন প্রকল্পের কাজে লাগানো সম্ভব হয়নি। এই টাকা ৩০ জুনের মধ্যে ফেরৎ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ঝিনাইদহ শহরের চুয়াডাঙ্গ বাসস্ট্যাÐ, তছলীমা ক্লিনিকের সামনে, কেসি কলেজ সড়কসহ বিভিন্ন স্থানে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়ে যান চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। অথচ নির্বাহী প্রকৌশলী সেলিম আজাদ খান এডিপি ছাড়াও রক্ষণাবেক্ষণ খাতের ৮ লাখ ৭৫ হাজার টাকাও কাজ না করে ফেরৎ দিয়েছেন। এ বিষয়ে খুলনা জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোঃ রুহুল আমীন খবরের সত্যতা স্বীকার করে জানান, মন্ত্রনালয়ের নির্দেশে আমি গত ২ জুলাই ঝিনাইদহ সড়কের নির্বাহী প্রকৌশলী সেলিম আজাদ খানকে চিঠি দিয়েছি। ৫ দিনের মধ্যে তাকে উত্তর দেওয়ার সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়। আমি ছুটিতে থাকায় তিনি উত্তর দিয়েছেন কিনা তা আমি এথনো দেখতে পারিনি।
উল্লেখ্য ঝিনাইদহ সড়ক বিভাগটি এখন লুটপাটের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। নি¤œমানের কাজ করে সরকারের কোটি কোটি টাকা পকেটস্থ করা হচ্ছে। ফলে রাস্তা নির্মানের ২৫/২০ দিনের মধ্যেই আগের চেহারায় ফিরে যাচ্ছে। এ নিয়ে গত কয়েক দিন ধরে বিভিন্ন পত্রপত্রিকা ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে খবর প্রকাশিত হলেও দুর্নীতিবাজরা বহাল তবিয়তে থাকছেন। এদিকে গতকাল ঝিনাইদহ সড়ক বিভাগে গেলে অফিসে পদস্থ কাউকে পাওয়া যায়নি। সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী সেলিম আজাদ খান, এসডি এসএম আমজাদ হোসেন ও এসও মনিরুল ইসলাম সাংবাদিক আসার খবর শুনেই মোবাইল বন্ধ করে বাইরে চলে যান। ফলে এ ব্যাপারে তার মন্তব্য জানা যায় নি। তারা মিডিয়াকে এড়িয়ে চলছেন বলে ঝিনাইদহের কয়েকজন সিনিয়র সাংবাদিক অভিযোগ করেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ