রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
রাজশাহী ব্যুরো : রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (আরডিএ) আবাসিক প্লট বরাদ্দের নামে হরিলুটের প্রতিবাদ ও প্লট কেলেঙ্কারীর মুল হোতা আরডিএ চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ বজলুর রহমানসহ জড়িত সংশ্লিষ্টদের অবিলম্বে অপসারনের দাবিতে রাজশাহীতে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদ। গত রোববার সকালে নগরীর সাহেব বাজার জিরো পয়েন্টে রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের ব্যানারে অনুষ্ঠিত এ কর্মসূচিতে নগরীর বিভিন্ন পেশাজীবী, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে অবিলম্বে আরডিএ’র প্লট কেলেঙ্কারির হোতা আরডিএ চেয়ারম্যানের অপসারন দাবি করা হয়।
বক্তারা বলেন, এ ধরনের দুর্নীতিবাজকে আরডিএ’র মতো গুরুত্বপূর্ণ সংস্থায় রাখলে সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ড ¤øান হয়ে যাবে। একই কর্মসূচি থেকে রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জামাত খানের পরিবারের বিরুদ্ধে উড়ো চিঠি দিয়ে অপপ্রচার, মুক্তিযোদ্ধা মিনহাজ উদ্দিন মিন্টুর ওপর হামলার প্রতিবাদ ও রাজশাহী নগরীর ঐতিহ্যবাহী সোনাদীঘি ও ভুবনমোহন পার্ক সংরক্ষনের দাবি জানানো হয়।
বক্তারা বলেন, রাজশাহীকে পরিকল্পিত নগরী হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষে ১৯৭৮ সালে গঠন করা হয় রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। তবে দীর্ঘ চার দশকেও এ প্রতিষ্ঠান মানুষের আশা-আকাঙ্খার প্রতিফলন ঘটাতে পারেনি। ধারাবাহিকভাবে লুটপাট করা হয়েছে। সর্বশেষ প্লট বরাদ্দের নামে নজির বিহীন কেলেঙ্কারীর করেছে খোদ এ প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান বজলুর রহমান। ধারাবাহিক প্লট কেলেংকারি ও নজীরবিহীন নিয়োগ দুর্নীতি ছাড়াও আরডিএ’র অভ্যন্তরে চলমান দুর্নীতি অনিয়মের কারণে সরকারি এ সংস্থাটি ব্যাপক আলোচনায় এসেছে। দূর্নীতির চিত্র তুলে ধরে বিভিন্ন গনমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ করায় সাংবাদিকদের ফৌজদারি ও দেওয়ানী মামলার হুমকি দিয়ে উকিল নোটিশ পর্যন্ত পাঠানো হয়েছে।
বক্তারা বলেন, নিজের নজিরবিহীন দুর্নীতি ঢাকতে চেয়ারম্যান বজলূর রহমান সাংবাদিকদের প্রতিপক্ষ ভেবে তাদের বিরুদ্দে নেমেছেন। বক্তারা সমাবেশ থেকে অবিলম্বে দূর্নীতিবাজ আরডিএ চেয়ারম্যানের অপসারণ দাবি করে তার বিরুদ্ধে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য প্রশানসনের প্রতি আহŸান জানানো হয়।
রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি লিয়াকত আলীর সভাপতিত্বে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন কর্মসূচিতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জামাত খান, সাংগাঠনিক সম্পাদক দেবাশিষ প্রমানিক দেবু, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ডা. আব্দুল মান্নান, রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নের (আরইউজে) সভাপতি কাজী শাহেদ, রাজশাহী চেম্বারের সাবেক পরিচালক ও ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদের সভাপতি হারুনার রশিদ, লেখক, সাংবাদিক প্রশান্ত শাহা, মুক্তিযোদ্ধা শাহাজাহান আলী বরজাহান, এডভোভোকেট এন্তাজুল হক বাবু, রাবির অধ্যাপক গোলাম সারোয়ার সুজন, পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক মঞ্জুর হাসান মিঠু, মহিলা পরিষদ রাজশাহীর সভাপতি কল্পনা রায়, নারী শিল্প উদ্যোক্তা চেয়ারম্যান সেলিনা বেগম, লেখক শাহ মোহাম্মদ জিয়া উদ্দিন, বেনেতি ব্যবসায়ী সমিতির সহসভাপতি মহেষ চন্দ্র সরকার, জাতীয় আদিবাসী পরিষদের সভাপতি রবিন্দ্রনাথ সরেন, নাচোল উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আবু তাহের খোকন, রাজশাহী মুক্তিযোদ্ধা মঞ্চের সভাপতি আবদুল মতিন, গেরিলা বাহিনীর সদস্য ও মুক্তিযোদ্ধা মিনহাজ উদ্দিন মিন্টু, নারী নেত্রী আফরোজা খান হেলেন ও শাহীনা বেগম প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, নজিরবিহীন দুর্নীতির খবর বিভিন্ন গণমাধ্যমে এসেছে। তাতে দেখা যায়, ৬ কাঠা, ৫ কাঠা, ৪ কাঠার সব মুল্যবান প্লটগুলি হাতিয়ে নিয়েছে আরডিএর’র চেয়ারম্যান বজলুর রহমান, এষ্টেট অফিসার বদরুজ্জামানসহ সংস্থাটির শীর্ষ কর্মকর্তারা। এ ঘটনাবে চাঞ্চল্যকর ও ন্যাক্কারজনক প্লট কেলেংকারি উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, অবিলম্বে দুর্নীতিবাজদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা জরুরি। এজন্য দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রতি চরম এ দুর্নীতি তদন্ত সাপেক্ষে আইনী ব্যবস্থা নেয়ার আহŸান জানানো হয়। অন্যথায় অতি শিগগিরই আরডিএ ভবন ঘেরাওসহ লাগাতার কর্মসূচি পালনে হুশিয়ারি উচ্চারন করা হয়। বক্তারা বলেন, আরডিএ’র চেয়ারম্যান বজলুর রহমান নিজে সাধু সেজে গলাবাজি করলেও তিনি দুর্নীতির মাধ্যমে নিজে হাতিয়ে নিয়েছেন ৬ কাঠার মুল্যবান প্লট। বর্তমান বাজারে এই প্লটটির দাম কোটি টাকা। এষ্টেট অফিসার বদরুজ্জামান নিয়েছেন ৬ কাঠার প্লট। বদরুজ্জামান বরাদ্দ নিয়েই সেটি বিক্রির জন্য গ্রাহক খুঁজছেন। আরডিএ’র অন্য কর্মকর্তা কর্মচারিরাও বরাদ্দ পাওয়া প্লটগুলি বিক্রির পাঁয়তারা করছেন। এভাবে প্লট কেলেংকারি করে চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে আরডিএ’র দুর্নীতিবাজ সিন্ডিকেট সরকারের ভাবমূর্তি বিনষ্ট করেছেন।
বক্তারা আরো বলেন, আরডিএ-তে মোটা অংকের ঘুষ ছাড়া এনওসি ও নকশা মিলে না। ফলে নগরবাসীকে প্রতিনিয়ত হয়রানির মুখে পড়তে হচ্ছে। টাকা না দিলে কোনো কাজের জন্য মাসের পর মাস ঘোরানো হয়। আবার টাকা দিলে নিয়ম লঙ্ঘন করে নকশা অনুমোদন করা হয়। নিজে সাধু ভাব দেখালেও আরডিএ’র গাড়ি ঢাকায় রেখে নিজের মেয়েকে ব্যবহার করতে দিয়েছেন বলেও অভিযোগ করেন বক্তারা।
বক্তারা আরো বলেন, আরডিএ’র আবাসিক এলাকায় যাদের জমি নিয়ে তৈরি করা হয়েছে তাদেরই কোনো প্লট দেওয়া হয়নি। এসব ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ দিনের পর দিন আরডিএতে ঘুরছেন কিন্তু তাদের সাথে দুর ব্যবহার করা হয়। এসব অনিয়ম দুর্নীতি দুদকের মাধ্যমে তদন্ত করে দ্রæত নেয়া দাবি জাননো হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।