Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ইভাঙ্কার কূটনৈতিক দক্ষতা নিয়ে বিদ্রুপ, প্রশ্নবিদ্ধ ট্রাম্প

| প্রকাশের সময় : ১০ জুলাই, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : জি-টোয়েন্টি সম্মেলনে জার্মান চ্যান্সেলর, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী এবং চীনা, রুশ ও তুর্কি প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জন্য নির্ধারিত আসনে বসে পড়ায় বিপাকে পড়েছেন তার কন্যা ইভাঙ্কা ট্রাম্প। কিছু সময়ের মধ্যেই ট্রাম্প-বিরোধী মার্কিন ও ব্রিটিশ মিডিয়াগুলোতে তা হাজির হয় শীর্ষ খবর হিসেবে। সম্মেলনের ওই বৈঠকটি ছিল অভিবাসন ইস্যুতে। আর ইভাঙ্কা কাজ করেন নারীর ক্ষমতায়নে। অভিবাসন ইস্যুর ওই বৈঠকে তিনি কোনও কথা না বলায় আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো তার কূটনৈতিক দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। এ সংক্রান্ত বিভিন্ন ব্যঙ্গ-বিদ্রæপকে প্রতিবেদন আকারে হাজির করেছে তারা।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, গত শনিবার সম্মেলন চলাকালীন ট্রাম্প ইন্দোনেশীয় নেতার সঙ্গে সাইডলাইন বৈঠক করতে কিছুক্ষণের জন্য বের হয়ে যান। জি টোয়েন্টি সম্মেলনস্থলে তখন আফ্রিকান অভিবাসন ও স্বাস্থ্য ইস্যুতে আলোচনা চলছিল। বাবা সাইডলাইন বৈঠকে চলে যাওয়ায় তার স্থলাভিষিক্ত হন ইভাঙ্কা। কিছুক্ষণ পর ট্রাম্প ফিরে এসে আবার তার আসন গ্রহণ করেন।
৩৫ বছর বয়সী ইভাঙ্কা শি জিনপিং, রজব তায়্যিব এরদোয়ান, অ্যাঙ্গেলা ম্যার্কেল এবং থেরেসা মে’র সঙ্গে এক কাতারে বসে পড়েছিলেন। বিনা বেতনে তার বাবা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করছেন তিনি। বেতনসমেত পারিবারিক ছুটি, নারীদের অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন নিয়ে কথা বলা এ নারী শনিবার বৈঠকে কথা বলেননি।
ঘটনার সমালোচনা করে মার্কিন সংবাদমাধ্যম এমএসএনবিসিকে ডেমোক্র্যাটিক কংগ্রেস সদস্য ম্যাক্সিন ওয়াটারস বলেন, ‘এটা ভালো ঠেকছে না। জি টোয়েন্টিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট যোগ দিয়েছেন এবং মুক্ত বিশ্বের নেতা হিসেবে তিনি আমাদের প্রতিনিধিত্ব করছেন। তিনি এখন রাজনীতি নিয়ে খেলা করতে যাচ্ছেন এবং মেয়েকে জায়গা করে দিচ্ছেন। তাকে এমন এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে বসিয়েছেন যার বিষয়বস্তু সম্পর্কে ইভাঙ্কা কিছুই জানেন না।’ নারী অধিকারবিষয়ক সংস্থা দ্য নিউ এজেন্ডার প্রেসিডেন্ট ও সহ-প্রতিষ্ঠাতা অ্যামি সিসিকান্দ এক টুইটে বলেন, ‘একনায়কতান্ত্রিক শাসনে এ ধরনের ঘটনা প্রায় সবসময় ঘটতে দেখা যায়।’
হিলারি ক্লিনটনের প্রেসিডেন্সিয়াল ক্যাম্পেইনের প্রগ্রেসিভ মিডিয়াবিষয়ক সাবেক পরিচালক জেরলিনা ম্যাক্সওয়েল এমএসএনবিসিকে বলেন: ‘এটি পুরোপুরি অযথার্থ। ইভাঙ্কা ট্রাম্পের কী এমন যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা রয়েছে যার জন্য তাকে থেরেসা মে, ভøাদিমির পুতিনের মতো বিশ্বনেতাদের সঙ্গে একই আলোচনার টেবিলে হাজির করা যায়? আমি মনে করি এটি এ প্রশাসনের একেবারে অন্তর্নিহিত পর্যায়ের দুর্নীতি।’
ইতিহাসবিদ অ্যানি অ্যাপলবম ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, ‘এ ঘটনাটি একজন অনির্বাচিত, অযোগ্য, অপ্রস্তুত ব্যক্তিকে মার্কিন জাতীয় স্বার্থের প্রতিনিধিত্বকারী সেরা ব্যক্তি হিসেবে আখ্যা দেওয়ার সামিল।’
গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়, জি টোয়েন্টি নেতারা কিছু কিছু বৈঠকে তাদের অধীনস্ত কর্মকর্তাদের সঙ্গে করে এনেছেন। শনিবারের সেশন চলার সময় যখন অন্য দেশের প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী সম্মেলনস্থল ত্যাগ করেছেন তখন অন্য কর্মকর্তারা সাময়িক সময়ের জন্য তাদের আসনে বসেছিলেন। তবে ট্রাম্প ছাড়া অন্য কোনও প্রেসিডেন্ট বা প্রধানমন্ত্রী তাদের পরিবারের সদস্যকে ওই আসনে বসাননি।
এদিকে ইভাঙ্কার বিরুদ্ধে ওঠা সমালোচনা নাকচ করে দিয়েছেন জার্মান চ্যান্সেলর ম্যার্কেল। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘খোদ প্রতিনিধি দল সিদ্ধান্ত নেয় প্রেসিডেন্টের বৈঠকে যোগ না দেওয়া ঠিক হবে কিনা। এরপর তাদের একজন সে দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং ওই চেয়ারে বসেন। ইভাঙ্কা ট্রাম্প আমেরিকান প্রতিনিধি দলেরই অংশ। অন্য প্রতিনিধিদের মতোই তিনি। এটাও সবার ভালোভাবে জানা আছে যে তিনি হোয়াইট হাউসে কাজ করেন এবং নির্দিষ্ট কিছু উদ্যোগের সঙ্গে জড়িত।’



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ট্রাম্প


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ