Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কুতুবদিয়ায় অন্তহীন দুর্দশায় লক্ষাধিক মানুষ

লবণাক্ত বালুর স্তর জমে পরিত্যক্ত বহু ফসলি জমি

| প্রকাশের সময় : ৯ জুলাই, ২০১৭, ১২:০০ এএম

কুতুবদিয়া (কক্সবাজার) উপজেলা সংবাদদাতা : দীর্ঘকাল ধরে নির্মাণ-সংস্কার না হওয়ায় লন্ডভন্ড অবস্থায় রয়েছে দেশের সম্ভাবনাময় দ্বীপ-কুতুবদিয়ায় বেড়িবাঁধ। ফলে সাগর-লোকালয় একাকার হয়ে থাকায় উপজেলার উত্তর ধুরুংয়ের কাইচার পাড়া, পূর্ব-পশ্চিম চরধূরুং, আনিচের ডেইল ও পশ্চিম তাবালেরচর গ্রামে রীতিমতে জোয়ারে ওঠছে পানি ভাটিতেই নামছে। এতে করে অন্তহীন দু:খ-দুর্দশায় রয়েছে ওসব গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ। এহেন কৃত্রিম মানবিক সংকটের জন্য একমাত্র পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্তাব্যক্তি ও ঠিকাদারী সংস্থা দায়ী বলে অভিযোগ করেন উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক আলী আকবর ডেইল ইউপি চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা নুরুচ ছাফা, উত্তর ধুরুং ইউপি চেয়ারম্যান আ.স.ম.শাহরিয়ার চৌধুরী, উপজেলা আ.লীগের তরুণ নেতা তাবালেরচরের কাইমুল ইসলামসহ সংশ্লিষ্ট এলাকার ভূক্তভোগী জনগণ। এ ছাড়া কালারমার পাড়া, কৈয়ারবিলের মলমচর, লেমশীখালীর পেয়ারাকাটা, বড়ঘোপের অমজাখালী থেকে দক্ষিণ মুরালিয়া, বায়ু বিদ্যুত, ও হকদার পাড়া গ্রামে প্রতি জোতেই ওঠছে জোয়ারের পানি। ফলে এলাকার মানুষের স্থায়িত্ব নেই মাথাগুঁজার ঠাই। পুকুর ও খাল-বিল সর্বত্রই লবণ পানি। হচ্ছেনা হাল-চাষ। রাস্তা-ঘাটের বেহালদশা। সুস্থ জীবন-যাপনের নেই কোন পরিবেশ। লবণাক্ত বালিরস্ত জমে পরিত্যক্ত হয়ে পড়ছে বহু চাষের জমি। সাগরে মাছ শিকার ও লবণ চাষ করেই কোনমতে সংসার চলে গ্রামবাসীর। এ ভাবে জোয়ার-ভাটার দোলাচলে ধুকে-ধুকে চারটি বছর জীবন কাটছে ওসব গ্রামের প্রায় লক্ষাধিক মানুষ। বিভিন্ন মিটিং-সমাবেশে বেড়িবাঁধ নির্মাণে বরাদ্দের কথা শুনা গেলেও কার্যকরী কোন সুরাহা না হওয়ায় ইতিমধ্যেই দ্বীপ ছাড়ছে বহুলোক। এ অবস্থায় চরম অনিরাপধ হয়ে পড়েছে গোটাদ্বীপের চাষাবাদ ও জনবসতি। এ দিকে বেড়িবাঁধ নির্মাণ-সংস্কারে চলতি অর্থ সনে ৯২ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে নিশ্চিত করেন কুতুবদিয়া-মহেশখালীর সাংসদ আশেক উল্লাহ রফিক। তাও আগামী শুস্ক মৌসুমেই কাজ শুরু হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
গত বছর বয়ে যাওয়া ঘূর্ণিঝড় ‘রোয়ানু’ পরবর্তী সময়ে বেড়িবাঁধের ভাঙন এলাকা পুন:সংস্কারে পানি উন্নয়ন বোর্ড ‘৭ প্যাকেজে বরাদ্দকৃত প্রায় ৫ কোটি’ টাকার কাজ ঠিকসময়ে এবং যথাযথভাবে বাস্তবায়ন হলে চলতি বর্ষায় কিছুটা হলেও রক্ষা হত বলে সংশ্লিষ্ট এলাকাবাসী জানিয়েছেন। অন্যান্য এলাকায় ৫ প্যাকেজের কাজ কোনমতে ঢিমেতালে শেষ করলেও উত্তর ধূরুংয়ের কাইচার পাড়া থেকে পূর্ব-পশ্চিম চরধূরুং পর্যন্ত ২টি প্যাকেজের কাজ এখনো শুরু করতে পারেনি। বার বার তাগাদা দেওয়া সত্বেও ওই কাজের ঠিকাদারী সংস্থা ‘আলম এন্ড ব্রাদার্স এবং ইরাব এন্টার প্রাইজ’ কানে তুলছেনা বলে সাফ জানিয়েছেন পাউবো’র এসও এলটন চাকমা ও নিকেল চাকমা। ফলে ওই খোলা অংশ হয়ে গত ঈদুল ফিতরের আগে ভরাকাটালের জোয়ারের অথৈ পানিতে গোটা উত্তর ধুরুং ইউনিয়ন প্লাবিত হয়ে এলাকার প্রায় ৬০/৭০ হাজার মানুষকে ¤øান করে দিয়েছে ঈদের আনন্দ। মোট ৪০ কি.মি.বেড়িবাঁধের অধিকাংশই বিধ্বস্ত থাকায় প্রায় পৌণে দু’লাখ দ্বীপবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এ মুহুর্তে অন্তত: ৫শ’ কোটি টাকার বরাদ্দ দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবী জানিয়েছেন জেলা আ.লীগের প্রবীণ নেতা কুতুবদিয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান এড.ফরিদুল ইসলাম চৌধূরী।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ