Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সৈয়দপুরে বিয়ের উৎসবে টক দই বোরহানি

| প্রকাশের সময় : ৯ জুলাই, ২০১৭, ১২:০০ এএম

নজির হোসেন নজু, সৈয়দপুর (নীলফামারী) থেকে : বাঙালি-বিহারীর মিশ্র শহর নীলফামারীর সৈয়দপুর। এখানে বিয়ে বাড়ি উৎসবে টক দই বোরহানি থাকতেই হবে এটা যেন অলিখিত নিয়ম। কারণ এই টক দইয়ের তৈরি বোরহানি যা আঞ্চলিকভাবে ঘোল হিসেবে পরিচিত তা অতিথি আপ্যায়নে লাগবেই। অন্য জেলায় খাওয়ার শেষে দই বা মিষ্টি দেওয়ার রেওয়াজ থাকলেও এই সৈয়দপুরে টক দইয়ের বোরহানি অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। ফলে টক দইয়ের পাইকারী দোকানে বেচাকেনা সারা বছরই জমজমাট থাকছে।
উত্তরের ব্যবসা-বাণিজ্য কেন্দ্র সৈয়দপুর। ৪৭ এ দেশ ভাগের পর পরই অবাঙালিরা এ শহরে আস্তানা গড়ে তোলেন। ফলে বড় বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও রাজনীতিতে তাদের প্রাধান্য বেশি। ১৯৫৮ সালে প্রতিষ্ঠিত ৩৪ দশমিক ৪২ বর্গকিলোমিটারের সৈয়দপুর পৌরসভার তিন লক্ষাধিক মানুষের অর্ধেকের বেশি রয়েছে অবাঙালি। পৌরসভার কয়েকজন কাউন্সিলরও রয়েছেন অবাঙালি। ফলে পুরো শহর এলাকা বাঙালি-বিহারীর মিশ্র শহরে পরিণত হয়েছে। গ্রাম এলাকায় প্রচলন কম থাকলেও শহরে বিয়ে বাড়ি উৎসবে টক দইয়ের বোরহানি থাকতেই হবে এরকম প্রতিযোগিতা রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে।
শহরের আলম প্রেসের গলিতে রয়েছে পর পর তিনটি দোকান। সাগির, আকবর আলী ও ইসলাম বংশ পরম্পরায় দইয়ের হাঁড়ি সাজিয়ে এই ব্যবসা করছেন। টক দই বিক্রেতা সাগির জানান, প্রতিদিনই দোকানে টক দই বিক্রি করা হয়। তবে বেশি কিনতে চাইলে অগ্রিম অর্ডার দিতে হয়। প্রায় ২৫/৩০ বছর ধরে এই ব্যবসা করছেন সাগির। প্রতিকেজি দুধ ৪০ টাকা কেজি কিনে টক দিয়ে ফেটে দই করেন। তারপর সেটি হাঁড়িতে রেখে ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেন। ক্রেতাদের বহনের সুবিধার জন্য খালি হাঁড়িও রাখা হয় দোকানে বলে জানান সাগির। এই টক দইয়ের ব্যবসা করে তার ছয় জনের পরিবার ভালোই চলছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
এছাড়া নাটোর দই ঘর, পাহালয়ান সুইটমিট, নিরিবিলি হোটেলসহ পাঁচ-ছয়টি হোটেলে বিক্রি হচ্ছে টকদই। মুরগির রোস্টসহ নানা পদের খাদ্য তৈরিতে খুচরা ক্রেতারা এসব দোকানে আসেন।
অতিথির আপ্যায়ন শেষে কাঁচের বা ওয়ান টাইমের গøাসে পরিবেশন করা হয় এই বোরহানি। হজমের জন্য অত্যন্ত উপকারী এই বোরহানি কেউ দুই কেউবা ছয়-সাত গøাস পর্যন্ত খেয়ে থাকেন।
সৈয়দপুরের বাবুর্চি মাহতাব আলী, আব্দুল মান্নান, সাজ্জাদ হোসেন, ওমর আলী জানান, মূলত স্বাধীনতার পর থেকেই টক দইয়ে তৈরি বোরহানি বা ঘোলের প্রচলন। এই বোরহানিতে মসলা, উপকরণ ও বাবুর্চির হাতের ছোঁয়ায় সুস্বাদু হয়ে ওঠে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ