Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ওএমএস-এর চাল বিক্রি কার্যক্রম বন্ধ

| প্রকাশের সময় : ৮ জুলাই, ২০১৭, ১২:০০ এএম

 

নেত্রকোনার হাওরাঞ্চলের ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক পরিবারে খাদ্য সংকট
নেত্রকোনা জেলা সংবাদদাতা ঃ পহেলা জুলাই থেকে খোলা বাজারে চাল বিক্রি কার্যক্রম (ওএমএস) বন্ধ থাকায় আগাম বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ নেত্রকোনা জেলার মদন উপজেলার শত শত কৃষক পরিবারে চরম খাদ্যাভাব দেখা দিয়েছে। প্রতিদিন ওএমএস ডিলারের দোকানে গিয়ে ভীড় জমিয়ে চাল না পেয়ে কৃষকরা খালি হাতে বাড়ি ফেরায় এদের পরিবারের মাঝে দেখা দিয়েছে চরম খাদ্যাভাব।
চলতি বছরে অকাল বন্যায় মদন পৌরসভাসহ উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে বিভিন্ন এলাকায় বাঁধ ভেঙে ১৩ হাজার ৮৫ হেক্টর জমির আঁধা পাকা বোরো ধান তলিয়ে যায়। এতে করে সরকারি হিসেব অনুযায়ী ২৩ হাজার ৯শ ৭৫ কৃষকের ১শ ৭১ কোটি ২৮ লাখ ২৬ হাজার টাকার ফসল ক্ষতি হয়েছে। তবে কৃষকদের মতে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৪শ কোটি টাকারও বেশি। পৌরসভাসহ উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে ৯ হাজার ৫শ ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক ও মৎস্যজীবি পরিবারের মাঝে ৩০ কেজি করে চাল ও নগদ ৫শ টাকা করে বিতরণের কর্মসূচি অব্যাহত রয়েছে। যারা লাইনে দাড়িয়ে ভিজিএফ কর্মসূচির চাল নিতে পারে না তারা ওএমএস-এর ডিলারদের কাছ থেকে ১৫ টাকা কেজি ধরে চাল কিনতে পারবে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলোর জন্য মদন উপজেলায় ৭জন ডিলারের মাধ্যমে পৌরসভা ও ইউনিয়নের ৭টি স্থানে ওএমএস কার্যক্রম চালু করা হয়। মদন উপজেলার গেবিন্দশ্রী, কদমশ্রী, ফতেপুর, দড়ি বিন্নি, দৌতলপুরসহ বিভিন্ন গ্রামের ক্ষতিগ্রস্থ আয়েশা আক্তার, মরিয়ম আক্তার, আবুল কাসেম, আঃ মান্নান, শিপন মিয়া, সবুজ মিয়া, রহিমা বেগম, কালাচান, হরিদাস ও হিরামন বিবির সাথে কথা বললে তারা জানান, অকাল বন্যায় আমাদের বোরো ধান তলিয়ে যাওয়ায় এক ছটাক ধানও ঘরে তুলতে পারিনি। ওএমএস চালু হওয়ায় আমরা ১৫ টাকা কেজি ধরে চাল ক্রয় করে কোন ভাবে জীবনধারন করছি। কিন্তু গত কয়েক দিন ধরে ডিলার চাল না দেওয়ায় বাজার থেকে ৪৫/৫০ টাকা দরে চাল ক্রয় করে জীবনধারন করতে বেকায়দায় পড়েছি। সরকার আমাগো বাঁচানোর জন্য দ্রæত এ কর্মসূচি চালু করার দাবি জানচ্ছি।
ওএমএস ডিলার নুরে আলম সিদ্দিকি জানান, ঈদ উল ফিতরের পর চাল উত্তোলনের চিঠি না আসায় আমরা ডিও করতে পারছি না। প্রতিদিন শত শত ক্ষতিগ্রস্থ লোকজন চাল নিতে আমাদের দোকানে ভীড় করছে। আমরা তাদেরকে শান্তনা দিয়ে বিদায় করছি।
মদন উপজেলা ভারপ্রাপ্ত খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা রেজাউল করিম জানান, জুন মাস পর্যন্ত ওএমএস কার্যক্রমের বরাদ্দ ছিল। নতুন করে বরাদ্দ না আসায় এর কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। মদন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ ওয়ালী-উল-হাসান ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের খাদ্যাভাবের কথা স্বীকার করে জানান, খাদ্য অধিদপ্তরের অনুমোদন পাওয়া যায়নি। অনুমোদন পাওয়ার সাথে সাথেই ওএমএসের কার্যক্রম পূনরায় চালু করা হবে। এ ব্যাপারে নেত্রকোনার জেলা প্রশাসক ড. মোঃ মুশফিকুর রহমান জানান, অকাল বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ হাওরাঞ্চলে কৃষকদের জন্য ৭২ জন ওএমএস ডিলার নিয়োগের মাধ্যমে চাল বিক্রি চালু ছিল। মন্ত্রনালয় থেকে নতুন করে বরাদ্দ না আসায় ওএমএস-এর চাল বিক্রি কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ