Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ০২ জুলাই ২০২৪, ১৮ আষাঢ় ১৪৩১, ২৫ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

রূপগঞ্জে প্রভাবশালীর ড্রেজারের পানিতে দুই শতাধিক পরিবার দুর্ভোগে

| প্রকাশের সময় : ৮ জুলাই, ২০১৭, ১২:০০ এএম

রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা : নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার কাঞ্চন সেতুর পশ্চিম পার্শে দক্ষিণ বাধ্যকর এলাকায় স্থানীয় প্রভাবশালী যুবলীগ নেতাদের ড্রেজারের পানিতে বন্যায় পরিণত হয়েছে। এতে করে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন প্রায় দুই শতাধীক পরিবার। স্থানীয় মেয়র আবুল বাশার বাদশার নির্দেশক্রমেই যুবলীগ নেতারা আটকানো পানি না সরিয়ে ড্রেজার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
এছাড়া যুবলীগ নেতাদের ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করার সাহসটুকুও পাচ্ছেনা। প্রতিবাদ করলেই প্রতিবাদী পরিবারের সদস্যদের ধর্ষণ, হত্যাসহ নানা নির্যাতনের শিকার হতে পারে বলে দাবি করেছেন এখানকার ভুক্তভোগীরা। এদিকে, বেশ কয়েক দিন ধরেই পানি বন্ধিদের মাঝে দেখা দিয়েছে ডায়েরিয়া, আমশায়, যক্ষা, জ্বর, সর্দি, কাশিসহ নানা রকমের রোগ। এতে করে বাড়ছে ভাইরাস বহনকারী মশার উপদ্রবও। বর্তমানে চিকগুনিয়া মানুষের জন্য আতঙ্কের রোগ হয়ে দাড়িয়েছে। মশার উপদ্রব বাড়ার কারণে চিকুনগুনিয়ার রোগের আশঙ্কা বেড়ে যেতে পারে।
এলাকাবাসী অভিযোগ করেন, দক্ষিণ বাধ্যকর এলাকায় কাঞ্চন পৌর মেয়র আবুল বাশার বাদশার বেশ কিছু জমি রয়েছে। এছাড়া ওই এলাকায় প্রায় দুই শতাধীক পরিবার বসবাস করেন। মেয়রের নিদের্শক্রমে স্থানীয় প্রভাবশালী নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে যুবলীগ নেতারা প্রভাব খাটিয়ে ড্রেজারের মাধ্যমে বালু ভরাট করে আসছে। ড্রেজারের বালুতে ওই এলাকার ড্রেন গুলো ভরাট হয়ে গেছে। এছাড়া রাস্তাঘাট গুলোও ডুবে গেছে। ড্রেজারের পানি অন্যত্র না সরানোর কারনে পুরো এলাকা বন্যায় পরিণত হয়েছে। ওই এলাকার মানুষ কোমড় থেকে শুরু করে গলা পর্যন্ত পানি ভেঙ্গে চলা ফেরা করতে হচ্ছে। বসতঘরে পানি ঢুকে বসবাস অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। টিউবঅয়েল ডুবে গেছে। দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানির সঙ্কট।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, বাড়ির উঠান ও ঘরের মেঝেতে সব সময়ই পানি জমে থাকার কারনে দূষিত হয়ে দূর্গন্ধ ছাড়চ্ছে। স্বাস্থ্য সম্মত সৌচাগারের অভাব। মাঝে মাঝে বাচ্চাদের বিছানায় সাপ, ব্যাঙ্গ ও বাস উঠে বসে থাকছে। এতে করে ওই এলাকার মানুষষের ভোগান্তির যেন শেষ নেই।
ভুক্তভোগী সেলিম, আউয়াল, আরিফ, আরমান, ভুট্টু, ইসলাম, শুক্কুর আলী, হাবু, নাজমা, নাজির, ইদ্রিস, রাবেয়া, রকিব, নুরবানু, আছিয়াসহ আরো অনেকেই আভিযোগ করে জানান, এই এলাকাটির তিন দিক দিয়ে রাস্তা থাকায় বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের একমাত্র পথ পশ্চিম পাশের ড্রেনেজ ব্যবস্থাটিই। যুগ যুগ ধরে এই ড্রেনেজ ব্যবস্থাটি ব্যবহার করা হলেও ড্রেনটির পার্শবর্তী জায়গাগুলো ক্রয় করেন স্থানীয় কাঞ্চন পৌর মেয়র দেওয়ান আবুল বাশার বাদশা। তিনি সেই জায়গায় প্রায় দেড় মাস আগে ড্রেজিং ব্যবস্থায় বালু ভরাট করেন। এতে করে একমাত্র ড্রেনটিও ভরাট হয়ে যায়। এতে ড্রেজারের বালুর পানি আটকে সে সময়ই এ এলাকার নিম্নাঞ্চলগুলো পানিতে ডুবে যায়। পানি নামানোর আর কোন ব্যবস্থা না থাকায় প্রতিনিয়ত বৃষ্টি ও ড্রেজারের পানি জমতে থাকায় এই এলাকাটি পানির নিচে ডুবে রয়েছে। এর ফলে এলাকার মানুষের মাঝে দেখা দিয়েছে নানারকম পানি বাহিত রোগ। সমস্যায় জর্জরিত হয়ে এলাকার অনেকেই গিয়ে ছিলেন পৌর মেয়রের কাছে কিন্তু মেয়র ড্রেনেজ ব্যবস্থাটি করে দিবেন বলে আশ্বাস দিলেও এখন পর্যন্ত তা আর বাস্তবে রূপ নিতে পারে নী। এ ব্যপারে নজরুল ইসলাম বলেন, আমাকে বালু ভরাট করতে বলা হয়েছে, আমি বালু ভরাট করে দিচ্ছি। মানুষের সমস্যা দেখবে মেয়র। এ বিষয়ে কাঞ্চন পৌর মেয়র দেওয়ান আবুল বাশার বাদশা বলেন, বালু ভরাটের কারনে পানির ড্রেনটি বন্ধ হয়ে গেছে। আমি আমার জায়গা দিয়েই নতুন করে ড্রেনের ব্যবস্থা করে দিবো।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ