বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
সরকার আদম আলী, নরসিংদী থেকে : ‘এ সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশগ্রহণ হবে আত্মহত্যার সামিল’। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের এই উক্তি নিয়ে নরসিংদীর রাজনৈতিক মহল তথা বিএনপি নেতাকর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মরহুম মিয়া মোহাম্মদ সেলিমের শোক সভায় গত সোমবার প্রধান অতিথির ভাষণে গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের এই উক্তি নিয়ে নরসিংদী তথা দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে কয়েকদিন ধরে চলছে বহুমুখী আলোচনা ও সমালোচনার ঝড়। গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের এই বক্তব্যকে কেউ দেখছে ইতিবাচক হিসেবে, আবার কেউ দেখছে নেতিবাচক ভাবে। জেলা পর্যায়ের কয়েকজন বিএনপি নেতা গয়েশ্বর রায়ের বক্তব্য সম্পর্কে তাদের ব্যক্তিগত প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন মাস্টার গয়েশ্বর রায়ের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেছেন, তিনি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে একজন নীতি নির্ধারক। তিনি আমাদেরকে যা নির্দেশনা দিবেন আমরা অধস্তন নেতাকর্মী হিসেবে তা অতি অবশ্যই পালন করবো। তবে আমার ব্যক্তিগত অভিমত হচ্ছে বিএনপি নির্বাচনে যাবে না এ কথা বলার সুযোগ নেই। বিএনপি নির্বাচনে যাবে না এ কথা বলা দলের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। কারণ রাজনৈতিক চরিত্র অনুযায়ী বিএনপি একটি নির্বাচনমুখী দল। এই দলের মূল গণতান্ত্রিক কার্যক্রম হচ্ছে সর্বক্ষেত্রে বহুদলীয় গণতন্ত্র চর্চা করা এবং নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন ঘটানো। তার মতে গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অংশ না নিয়ে ভুল করেনি এ কথা সত্য। কিন্তু আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকা হবে ভুল সিদ্ধান্ত। আমরা তত্ত¡াবধায়ক সরকার থেকে সরে এসে সহায়ক সরকারের কথা বলেছি। সহায়ক সরকারের অধীনেই আমরা নির্বাচনে যাবো। এ ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ যদি বিএনপির দাবী শতকরা ৬০ভাগও মেনে নেয় তবুও নির্বাচনে গেলে বিএনপি ভাল করবে। এ ধারণা সাধারণ জনগনের। কিন্তু নির্বাচনে না গেলে বিএনপির হাজার হাজার নেতাকর্মী বিভ্রান্ত হতে পারে। জেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক আমিনুল হক বাচ্চু তার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেছেন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের বক্তব্য খুবই যুক্তিপূর্ণ। তিনি যা বলেছেন তা তার চিন্তার ফসল এবং গবেষণালব্দ ধারনা। তার এই বক্তব্য দলের বক্তব্য নাও হতে পারে। তবে তিনি ব্যক্তিগতভাবে তার মত প্রকাশ করে যা বলেছেন তা আমার কাছে যথেষ্ঠ সঠিক মনে হয়েছে। যেসব কারণ দেখিয়ে বিএনপি গত সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন সে কারণ এখনো দূরীভূত হয়নি। ক্ষমতাশীনরা এখনো তাদের পূর্ববর্তী অবস্থানেই রয়ে গেছে। পক্ষান্তরে বিএনপি এর নিজস্ব অবস্থান থেকে সরে অর্থাৎ তত্ত¡াবধায়ক সরকারের দাবী থেকে সহায়ক সরকারে নেমে এসেছে। এরপরও আওয়ামী লীগ সরকার তাদের বাগডম্বর উক্তি অব্যাহত রেখেছেন। এ ক্ষেত্রে গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের বক্তব্য নি:সন্দেহে বুনো ঔলের সাথে বাঘা তেতুল বলেই সচেতন রাজনীতিকরা মনে করে। নরসিংদী জেলা যুব দলের আহবায়ক ত্যাগী যুব নেতা মহসিন হোসাইন বিদ্যুৎ গয়েশ্বর রায়ের বক্তব্যের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেছেন, তাঁর বক্তব্যের উপর আমাদের কোন বক্তব্য নেই। তবে আমার ব্যক্তিগত অভিমত বিগত নির্বাচনে অংশ না নেয়ার কারণে বিএনপি যতটানা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে তার চেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বিএনপির উপর সরকারের দমননীতির কারণে। পুলিশের ভয়ে সুবিধাবাদী অনেক নেতাই দল থেকে বিচ্ছিন্ন প্রায় হয়ে গেছে। তবে অপর একজন নেতা বলেছেন, গয়েশ্বর রায়ের বক্তব্য যথেষ্ঠ সময়োচিত এবং বিএনপির মূল রাজনীতি থেকেই উৎসারিত হয়েছে। বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অংশ না নিয়ে কোন ভুল করেনি। তবে বিএনপির সাধারণ সচেতন সমর্থকরা গয়েশ্বর রায়ের বক্তব্যকে যথার্থ রাজনৈতিক বক্তব্য হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।