Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ

বিছট নিউ মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়

| প্রকাশের সময় : ৭ জুলাই, ২০১৭, ১২:০০ এএম

সাতক্ষীরা থেকে স্ট্যাফ রিপোর্টার : সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার আনুলিয়া ইউনিয়নের বিছট নিউ মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ১০ বছর বয়সে দাখিল পাস এম আব্দুল্লাহ এর বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার মান উন্নয়নে অবিলম্বে ওই শিক্ষককে অপসারনের দাবি জানানো হয়েছে। বিছট নিউ মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন মৌলভী শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করার পর ২০১২ সালের পহেলা ফেব্রæয়ারি এম আব্দুল্লাহ ভারপ্রাপ্ত ওই বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পান। বিদ্যালয়ের নবায়নকৃত স্বীকৃতির মেয়াদ ২০১৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর শেষ হলেও তিনি তথ্য গোপন করে ২০১৪ সালের পহেলা জানুয়ারি থেকে ২০১৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত নবায়ন বাদ রেখে চলতি বছরের পহেলা জানুয়ারি থেকে আগামি ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত স্বীকৃতি নবায়নের জন্য আবেদন করেছেন। এ ছাড়াও মামলা খারিজ হয়ে যাওয়া সত্তে¡ও তথ্য গোপন করে ৯৩৭৯ আইডিতে অ্যাডহক কমিটি গঠনের জন্য যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পরিদর্শকের কাছে আবেদন করেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক এম আব্দুল্লাহ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিছট নিউ মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কয়েকজন অভিভাবক জানান, ২০১৪ সালের ১৭ ফেব্রæয়ারি এ বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে আনুলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আলমগীর আলম লিটন ও ওই বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ মুনছুর আলী প্রতিদ্বন্দিতা করেন। পাঁচটি ভোটই পড়ে মুনছুর আলীর পক্ষে। হেরে যাওয়ায় ইউপি চেয়ারম্যান বিষয়টি ভালভাবে মেনে নিতে পারেননি। এর কিছুদিন যেতে না যেতেই ইউপি চেয়ারম্যান ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সভাপতি মুনছুর আলীকে নানাভাবে বিপদে ফেলার চেষ্টা করেন। এরই অংশ হিসেবে ২০১৪ সালে অভিভাবক সদস্য মোকতার সরদারকে দিয়ে ভোটে কারচুপির অভিযোগ এনে আশাশুনি সহকারি জজ আদালতে দেঃ ১৯/১৪ মামলা দায়ের করা হয়। যা’ গত বছরের ৩ নভেম্বর বিচারক মুনিয়া জাহিদ নিশা খারিজ করে দেন। এর পরপরই গত ৭ মার্চ নির্বাচিত কমিটির অনুমোদন চেয়ে সভাপতি মুনছুর আলী যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পরিদর্শকের কাছে আবেদন করেন। সে অনুযায়ি পরিদর্শক ড. মোঃ আহসান হাবীব চলতি বছরের ৬ জুন কমিটির অনুমোদন দিয়ে একজন বিদ্যুৎসাহী সদস্য নির্বাচন করতে বলেন। এ চিঠি পাওয়ার পর প্রধান শিক্ষককে সভা ডেকে বিদ্যুৎসাহী সদস্য নির্বাচিত করার জন্য বার বার বলেন মুনছুর আলী। নানা অজুহাতে বিষয়টি একক সিদ্ধান্ত নিয়ে সভার জন্য গত ৪ জুলাই দিন ধার্য করা হয়।
অভিভাবকদের অভিযোগ, গত ৪ জুলাই মঙ্গলবার সভা না ডেকে তার পরিবর্তে গুটি কয়েক বহিরাগত লোকজনসহ বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের শিক্ষক প্রতিনিধি শান্তি রঞ্জন দাস, বিকাশ চন্দ্র মন্ডল, অভিভাবক সদস্য মোঃ মোকতার হোসেন সরদার ও মোঃ মোক্তার হোসেন মোড়লকে ম্যানেজ করে তাদেরকে নিয়ে মানববন্ধন করে মুনছুর আলীর বিরুদ্ধে কাল্পনিক অভিযোগ উপস্থাপন করা হয়। যা’ শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মচারি ও অভিভাবকদের জন্য আপত্তিকর। এর ফলে বিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তারা। তারা অবিলম্বে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের অপসারন দাবি করে না। বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি মুনছুর আলী অভিযোগ করে বলেন, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নিজের দুর্নীতি ঢাকতে একের পর এক ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছেন। জানতে চাইলে বিছট নিউ মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক এম আব্দুল্লাহ জানান, আদালতের রায় মুনছুর আলীর পক্ষে যাওয়ার পর তিনি যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পরিদর্শকের কাছে আহবায়ক কমিটির জন্য আবেদন করেছিলেন। তবে তিনি স্বাক্ষর না করার পরও তার সাক্ষর জালিয়াতি করে মুনসুর আলী বোর্ডে পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন চেয়েছিলেন। তবে তিন বছর বিদ্যালয়ের স্বীকৃতি নবায়ন না করে তথ্য গোপনের বিষয়টি তার ভুল হয়ে গেছে বলে স্বীকার করেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক এম আব্দুল্লাহ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ