রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
আমিনুল হক, মীরসরাই (চট্টগ্রাম) থেকে : ফেনী নদীর করাল ঘ্রাস থামছেই না। প্রতি বছর ফেনী নদীর গর্ভে পতিত হচ্ছে মীরসরাই উপজেলার বিভিন্ন জনপদ। নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে বাড়ীঘর, ফসলি জমি, রাস্তাঘাট স্থাপনা, প্রাচীন স্মৃতি চিহ্ন। এবারের বর্ষায় ও পরিবর্তন ঘটছে না বেশী। একই ভাবে একই রুপে ঝুঁকির মুখে আরো অনেক জনপদ। এবার রামগড়ের কলসীর মুখও এবার পতিত হলো ঝুঁকির মুখে। মীরসরাই উপজেলার করেরহাট ইউনিয়নের অলিনগর গ্রামের বøক বিহীন অনেক স্থানে ইতিমধ্যে পানির তোড়ে ভেঙে খান খান হয়ে যাচ্ছে। এছাড়া ধূম ইউনিয়নের মোবারকঘোনা, পূর্ব অলিনগর, রামগড়ের আধারমানিক এলাকা ও ভাঙন অব্যাহত। ওপারে ফেনীর ছাগলনাইয়া অংশের ও কয়েকটি গ্রামের ফসলি জমি ঘরবাড়ি ঝুঁকির মুখে।
এদিকে পার্বত্য রামগড় এলাকায় অবিকল কলসীর আকৃতিতে গড়ে উঠেছে বলেই গ্রামটির নাম দেয়া হয়েছে কলসী মুখ। ১শ’ থেকে ১শ’ বিশ গজ দৈর্ঘ্যরে প্রবেশ পথটির ভিতরটা অবিকল কলসীর আদলেই গড়া আর এ কারণেই গ্রামটি এখন জেলার রামগড় উপজেলার একটি ব্যতিক্রমী পর্যটন এলাকা হিসেবে বেশ পরিচিত। গ্রামের প্রবেশ মুখে পাহাড়ের উপরে স্থাপিত সীমন্তবর্তী বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়নের লাচারীপাড়া বিওপি ক্যাম্প থেকে তাকালে মনে হবে এই যেন এক দৈত্যকার কলসীর প্রতিস্থাপন। উপজেলা সদর হতে ১০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত ২শ’ ৫০ একরের সীমান্ত গ্রামটিতে প্রায় ৫০ পরিবারের তিনশ’ আদিবাসী মারমা-ত্রিপুরা সমপ্রদায়ের বসবাস। তিন দিক থেকে ফেনী নদীর গতিপথ বেষ্টিত গ্রামটির পুরাটাই ভারতে গর্ভে। গ্রামে প্রবেশের পথে ১শ’ থেকে ১শ’ বিশ গজ প্রবেশ মুখের পূর্ব পাশে সম্প্রতি ফেনী নদীর ক‚লবর্তী পাহাড়ি ঢলে ধারাবাহিক ভাঙন দেখা দিয়েছে। দ্রæত সময়ের মধ্যে গ্রামটিতে প্রবেশ মুখে তথা কলসীর মুখের ভাঙনটি ঠেকানো না গেলে ভারতের গর্ভে বিলীন হওয়া এখন সময়ের ব্যাপার। ফেনী নদীর তীব্র পানি প্রবাহমান খরস্রোতা থেকে গ্রামটিকে রক্ষা করা না হলে বাংলাদেশের থেকে গ্রামটি সম্পূর্ণ আলাদা হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছে গ্রামবাসীর। প্রতিনিয়ত পানির স্রোতধারা কলসীর মুখে ধাক্কা দেয়ায় ধাপে ধাপে ভাঙন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাছাড়া গ্রামটির উত্তর দিকে নতুন করে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে।
এদিকে রামগড় পৌর এলাকার বল্টুরাম, আনন্দপাড়া, সর্ববৃহৎ রামগড় চা বাগান, বাজারঘাট, থানা ঘাট, দারগাপাড়া, মহামুনী ও ফেনীরক‚ল বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে শহর রক্ষা বাঁধ হিসেবে নির্মিত সিসি বøকগুলো ফেনী নদীর পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে। এক যুগ আগে অপরিকল্পিত ভাবে এসব সিসি বøক নির্মাণ করায় হুমকিত রামগড় শহর এমনটাই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। গ্রামের প্রবীন ব্যক্তি চিংথোয়াই মারমা জানান, কলসীর আকৃতিতে গড়া সমতল গ্রামটি এখন রামগড় উপজেলার একটি বৈচিত্রময় দৃষ্টিনন্দন কৃষি সমৃদ্ধ গ্রাম ও ব্যক্তিক্রমী পর্যটন গ্রামও বটে। তিন দিক থেকে সীমান্ত নদীঘেরা গ্রামটির প্রবেশ মুখের ধারাবাহিক ভাঙনে আমাদের অস্তিত্ব এখন হুমকির মুখে। দ্রæত ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিলে হয়তো কোন এক সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখবো বাংলাদেশ থেকে আমরা এখন বিচ্ছিন্ন এক জনপদের বাসিন্দা। ওয়ার্ড মেম্বার থুইমং মারমা জানান, গ্রামটি রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে গ্রামবাসীর পক্ষ থেকে ঊর্ধ্বতন সব মহলকে অবহিত করা হলেও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ প্রশাসন নিতে দেখা যাচ্ছে না। করেরহাট ইউপি চেয়ারম্যান এনায়েত হোসেন নয়ন জানান, আমি ইতিমধ্যে পাউবোকে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা সম্পর্কে জানিয়েছি। গৃহায়ন ও গনপূর্তমন্ত্রীকে ও বিষয়টি শীঘ্রই সরেজমিনে দেখাবো। পুরো নদীর তীরবর্তি এলাকায় আরো অনেক বøক স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন বলে জানান তিনি। রামগড় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আল-মামুন মিয়া বলেন খবরটি শুনে আমি ভাঙন পরিদর্শন করে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে আলাপ করেছি। দ্রæত ভাঙন রোধে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকল্প গ্রহণের সহায়তা চাওয়া হয়েছে। আশা করছি শীঘ্রই কার্যকর উদ্যোগ দেখা যাবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।