বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
জাহেদুল হক, আনোয়ারা (চট্টগ্রাম) থেকে : দীর্ঘ প্রায় আড়াই বছর বন্ধ থাকার পর উৎপাদন শুরু করেছে চট্টগ্রামের আনোয়ারায় অবস্থিত রাষ্ট্রায়ত্ব সার কারখানা চিটাগাং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেড (সিইউএফএল)। মঙ্গলবার রাত সোয়া ১১টায় কারখানাটি চালু করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন সিইউএফএল’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু তাহের ভুঁইয়া। এর আগে সোমবার রাতে কারখানাটি গ্যাস সরবরাহ পাওয়ার পর অ্যামোনিয়া উৎপাদন শুরু করে। দীর্ঘদিন পর কারখানাটি উৎপাদনে যাওয়ায় এ প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত শ্রমিক-কর্মচারীদের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে।
কারখানা সূত্র জানায়, ২০১৫ সালের ৩১ জানুয়ারি রিঅ্যাক্টর লিকেজ ও কুলিং টাওয়ার অচল হয়ে পড়ায় কারখানাটি টানা ২৯ মাস বা ৮৮৪ দিন বন্ধ থাকে। এরইমধ্যে বিসিআইসির মাধ্যমে ইতালিয়ান এএক্সও কোম্পানির কারিগরী সহায়তায় প্রায় ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে কারখানাটির মেরামত কাজ সম্পন্ন করা হয়। পরে চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি কারখানায় গ্যাস সরবরাহ দেয় কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি। এরপর ১০ ফেব্রæয়ারি ফের উৎপাদন শুরুর লক্ষ্যে প্রস্তুতি সম্পন্ন করে সিইউএফএল কর্তৃপক্ষ। সার উৎপাদনের আগ মুহূর্তে গেল ১৭ ফেব্রæয়ারি আবারও দেখা দেয় রিঅ্যাক্টর লিকেজ। এ কারণে কারখানার উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেলে একই কারিগরী প্রতিষ্ঠানটির প্রচেষ্টায় কারখানার মেরামত কাজ সম্পন্ন হয়।
এরপর গত ২৭ জুন পুনরায় গ্যাস সরবরাহ পেয়ে কারখানাটি চালু করার উদ্যোগ নেয় সিইউএফএল কর্তৃপক্ষ। মঙ্গলবার রাতে কারখানার উৎপাদন শুরুর সময় বিসিআইসি’র পরিচালক (কারিগরী) আলী আক্কাস, সিইউএফএল’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আবু তাহের ভুঁইয়া, ডাই-অ্যামোনিয়া ফসফেট সার-কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মনিরুল ইসলাম ও ইতালিয়ান এক্সপার্টরাসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উৎপাদন প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করেন। সিইউএফএল শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের (সিবিএ) সহ-সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল আজিম সবুজ বলেন, বর্তমানে কারখানায় সরবরাহকৃত গ্যাসের চাপ প্রায় ৪৫ এসএম সিএফটি। রাষ্ট্রায়ত্ব এ সার কারখানাকে গুরুত্ব দিয়ে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহের জন্য কেজিডিসিএলের প্রতি জোর দাবি জানান তিনি।
সিইউএফএল সূত্র জানায়, ১৯৮৭ সালের ২৯ অক্টোবর জাপানের কারিগরী সহায়তায় কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে আনোয়ারা উপজেলার রাঙ্গাদিয়ায় সার কারখানাটি প্রতিষ্ঠা করে সরকার। ওই সময় কারখানাটির নির্মাতাকারী জাপানী প্রতিষ্ঠান ২০ বছর মেয়াদ বেঁধে দিলেও পার হয়ে গেছে প্রায় ৩০ বছর। বিভিন্ন সময়ে গ্যাস সংকট ও যান্ত্রিক ত্রুটিতে কারখানাটি ৮-৯ মাস বন্ধ থাকলেও এবার সর্বোচ্চ উৎপাদন বন্ধ থাকে ২৯ মাসের বেশি সময়।
কারখানার প্রকৌশল বিভাগ সূত্র জানায়, ৯ বছরের বেশি দিন আগে পুরো প্রতিষ্ঠান মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় কারখানার বেশিরভাগ যন্ত্রাংশ অকেজো হয়ে পড়েছে। তারমধ্যে কিছু কিছু যন্ত্রাংশ পরিবর্তন করা হলেও বাকিগুলো ঝুঁকির মধ্যে আছে। এছাড়া কারখানা চালু থাকলে প্রতি ঘন্টায় ৮শত মেট্রিক টন করে দৈনিক ১৯ হাজার ২শত মেট্রিক টন পানির প্রয়োজন হয়। এ কারখানা প্রতিষ্ঠালগ্ন হতে কালুরঘাট ওয়াটার প্ল্যান থেকে পানি এনে প্রতিষ্ঠান চালানো হয়। কিন্তু কর্ণফুলী নদীতে পানির লবণাক্ততা বেড়ে গেলে চাহিদামত পানি নেওয়া সম্ভব হয় না। ১৭ হাজার মেট্রিক টন উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন এ কারখানায় আপাতত দৈনিক ১৪-১৫ হাজার মেট্রিক টন সার উৎপাদন করা যাবে বলে জানা গেছে।
দীর্ঘদিন পর কারখানাটি সচল হওয়া সেই সাথে সার উৎপাদনে যাওয়ায় বিষয়ে জানতে চাইলে সিইউএফএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু তাহের ভুইয়া ইনকিলাবকে জানান, গ্যাস সংকটসহ নানা সমস্যায় দীর্ঘ দুই বছরের বেশি সময় কারখানা বন্ধ ছিল। গ্যাস সরবরাহ পেয়ে মঙ্গলবার রাতে কারখানাটির ইউরিয়া উৎপাদন শুরু করা হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।