Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মিয়ানমারে ফের রোহিঙ্গাবিরোধী সহিংসতা : নিহত ১ আহত ৬

| প্রকাশের সময় : ৫ জুলাই, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে ফের রোহিঙ্গাবিরোধী সহিংসতার খবর পাওয়া গেছে। গতকাল মঙ্গলবার রাজ্যের সিটওয়ে এলাকায় উগ্রপন্থী বৌদ্ধদের হামলার শিকার হন রোহিঙ্গারা। এ সময় অন্তত একজন রোহিঙ্গা মুসলিম নিহত হন। আহত হন কমপক্ষে ছয়জন। এ হামলা ও হতাহতের কথা স্বীকার করেছেন দেশটির কর্মকর্তারা।

সিটওয়ে পুলিশ স্টেশনের ক্যাপ্টেন কিয়াউ মো বলেন, সাত ব্যক্তি সিটওয়ে এলাকায় ঘুরছিলেন। এক পর্যায়ে লোকজন ইট নিয়ে তাদের ওপর হামলে চালায়। স্থানীয়রা জানান, হামলাকারীরা উগ্র বৌদ্ধরা সিটওয়ে এলাকার বাসিন্দা।
চলতি বছরের মে মাসে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর-এর এক বিবৃতিতে রোহিঙ্গা ইস্যুতে উদ্বেগ জানানো হয়। জাতিসংঘ বলছে, মিয়ানমারে সোশ্যাল মিডিয়ায় গুজব ছড়িয়ে উত্তেজনা তৈরি করে রোহিঙ্গাদের ওপর এ ধরনের হামলা চালানো হয়। ইউএনএইচসিআর-এর বিবৃতিতে বলা হয়, মিয়ানমারের রাখাইনে নিপীড়নের শিকার হয়ে বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে পালিয়ে যাওয়া রোহিঙ্গাদের যথাযথ সহায়তা না দিলে তারা আবারও নিপীড়িত হতে পারে।
ইউএনএইচসিআর এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ৫ বছরে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ১ লাখ ৬৮ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা মিয়ানমার থেকে পালিয়েছে। এ অঞ্চলে রোহিঙ্গা শরণার্থী ও অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত সর্বমোট সংখ্যা যথাক্রমে ৪ লাখ ২০ হাজার ও ১ লাখ ২০ হাজার। সা¤প্রতিক সহিংসতার আগে অনেক রোহিঙ্গার জন্য মালয়েশিয়া ছিল আকাক্সিক্ষত গন্তব্য।
মালয়েশিয়া, ভারত ও ইন্দোনেশিয়ায় ৮৫ নারীর সাক্ষাৎকার নেওয়ার ভিত্তিতে সেখাননকার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেছে ইউএনএইচসিআর। জরিপে দেখা গেছে, ওইসব নারীর বেশিরভাগেরই বাল্যবিয়ে হয়েছে এবং ১৮ বছর বয়সে সন্তানের জন্ম দিয়েছে। সাক্ষাৎকারদাতাদের এক তৃতীয়াংশ পারিবারিক সহিংসতার শিকার হওয়ার অভিযোগ করেছেন।
রাজনৈতিক সহিংসতার কারণে গত শতকের ৮০ এর দশক থেকে কয়েক লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা তাদের মিয়ানমারের নাগরিক বললেও মিয়ানমারের পক্ষ থেকে কার্যত কোনওদিনই তা স্বীকার করা হয়নি। তাদের ফিরিয়ে নিতে বার বার আহŸান জানানো হলেও মিয়ানমারের সাড়া পাওয়া যায়নি। এরই মধ্যে গতবছর অক্টোবরে চেকপোস্টে হামলায় ৯ সীমান্ত পুলিশ নিহত হওয়ার পর দেশটির সেনাবাহিনী এবং সীমান্তরক্ষী পুলিশ একযোগে রোহিঙ্গা দমনে অভিযান শুরু করে।
উল্লেখ্য, মিয়ানমারের সেনাদের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা স¤প্রদায়ের ওপর হত্যা,ধর্ষণসহ বিভিন্ন অপরাধ সংঘটনের অভিযোগ ওঠে। জাতিসংঘ মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে জাতিগতভাবে নির্মূল করার অভিযোগ এনেছে। তাদের বিরেুদ্ধে মানবতাবিরোধী কর্মকাÐেরও অভিযোগ তোলা হয়। রোহিঙ্গা নির্যাতন ‘মানবতাবিরোধী অপরাধে’র শামিল বলে মন্তব্য করেছে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক সংস্থা। সূত্র : রয়টার্স।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রোহিঙ্গা

২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ