Inqilab Logo

রোববার, ১৬ জুন ২০২৪, ০২ আষাঢ় ১৪৩১, ০৯ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রম সময়োপযোগী করার আহ্বান প্রেসিডেন্টের

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষ সমাবর্তন

| প্রকাশের সময় : ৫ জুলাই, ২০১৭, ১২:০০ এএম

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার: বিশ্বমানের শিক্ষা নিশ্চিত করতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পাঠ্যক্রম সময়োপযোগী করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ। মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষ সমাবর্তনে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আচার্য আবদুল হামিদ এ আহ্বান জানান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষ এই সমাবর্তনে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) মহাপরিচালক ইউকিয়া আমানোকে ‘ডক্টর অব লজ’ ডিগ্রি দেওয়া হয়।
প্রেসিডেন্ট বলেন, শিক্ষার্থীদের জ্ঞানের আলোয় আলোকিত করে তোলা বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল দায়িত্ব হলেও সৃজনশীলতা ও স্বাধীন চিন্তার কেন্দ্রস্থল হিসেবেও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রসারের ফলে জ্ঞানের পরিধি বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তির প্রসার এ মাত্রাকে আরো বেগবান করেছে। তাই উচ্চশিক্ষার পাদপীঠ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে আধুনিক ও সর্বশেষ উদ্ভাবিত প্রযুক্তির সাথে তাল মিলিয়ে জ্ঞান বিস্তারে উদ্যোগী হতে হবে। বিশ্বমানের শিক্ষা নিশ্চিত করতে কারিক্যুলামেও সময়োপযোগী পরিবর্তন আনতে হবে।
বাংলাদেশে পারমাণবিক কর্মসূচি ও বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে মন্তব্য করে আবদুল হামিদ বলেন, আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা বাংলাদেশের পারমাণবিক কর্মসূচি এবং উন্নয়নে সহায়ক ও গঠনমূলক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। ২০১১ সালে জাপানের ফুকুশিমায় পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও পারমাণবিক কর্মসূচি এবং পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র সম্পর্কে রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
তিনি বলেন, পরমাণু শক্তি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য কী ধরনের ভৌগোলিক অবস্থান হওয়া উচিৎ, মানুষ ও পরিবেশের নিরাপত্তা, পরমাণু দুর্ঘটনা মোকাবেলা, তেজস্ক্রিয়তা, পারমাণবিক বর্জ্য-ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি বিষয়ে মানুষের মনে নানা কৌতূহল ও জিজ্ঞাসার জন্ম দিয়েছে। বাংলাদেশে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কর্মসূচি এগিয়ে চলেছে। মানুষের মধ্যে ইতিবাচক ধারণা তৈরিতে এবং নেতিবাচক ধারণা দূর করতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কাজ করে যাচ্ছে। পরমাণু বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও প্রকৌশলমনস্ক দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তুলতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নিউক্লিয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।
প্রেসিডেন্ট রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে আইএইএর সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন আবদুল হামিদ। তিনি বলেন, জ্বালানির ব্যাপক চাহিদা পূরণের জন্য তেল-গ্যাসসহ জ্বালানি উৎসসমূহ ক্রমশ সীমিত হয়ে আসছে। পরমাণু শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহার জ্বালানির বর্ধিত চাহিদা পূরণে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। বাংলাদেশ বর্ধিত বিদ্যুৎ উৎপাদন নিশ্চিত করতে পরমাণু শক্তিকে কাজে লাগাতে ইতোমধ্যে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এই প্রকল্পের সফল বাস্তবায়নে এবং পরমাণু শক্তির শাস্তিপূর্ণ ব্যবহারে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার সহযোগিতা একান্ত অপরিহার্য। আমি আশা করি, আইইএর সম্মানিত মহাপরিচালক সংস্থার কারিগরী সহযোগিতার বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করবেন।
সমাবর্তনে আইএইএ মহাপরিচালক ইউকিয়া আমানো ‘শান্তি ও উন্নয়নে পারমাণবিক শক্তি’ শীর্ষক বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, পরমাণু প্রযুক্তির সফল ব্যবহারের মাধ্যমে ক্যান্সারসহ বিভিন্ন জটিল রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা প্রদান, পানি বিশুদ্ধকরণ ও কৃষি খাতের উন্নয়ন, খাদ্য উৎপাদন ও শস্য সংরক্ষণ, পরিবেশ সুরক্ষা ও বায়ু দূষণ রোধ এবং বিদ্যুৎ খাতের ব্যাপক উন্নয়ন করা সম্ভব।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প গ্রহণের জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রশংসা করে তিনি বলেন, এটি অত্যন্ত সময়োপযোগী পদক্ষেপ। এই প্রকল্পের সফল বাস্তবায়নে আইএইএ কারিগরি সহযোগিতা প্রদান করবে বলেও তিনি আশ্বাস দেন।
এতে অন্যদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক ও প্রো-ভিসি (শিক্ষা) নাসরীন আহমাদ বক্তব্য রাখেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ