পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী ‘অবৈধ’ ঘোষণা করে দেওয়া রায় আপিল বিভাগে বহাল থাকায় সরকারের ষড়যন্ত্র নস্যাৎ হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ। এটিকে তিনি জনগণের বিজয় হিসেবে দেখছেন। বিচারপতি অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে ফিরিয়ে দিতে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর গতকাল (সোমবার) নয়াপল্টনে বিএনপি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে দলের প্রতিক্রিয়ায় এই কথা জানান তিনি।
রিজভী বলেন, সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর মাধ্যমে বিচারপতিদের অপসারণ করার ক্ষমতা জাতীয় সংসদের হাতে নেওয়া হয়েছিল। সুপ্রিম কোর্ট সেটি অবৈধ ঘোষণা করেছে। সর্বোচ্চ আদালতের এই সিদ্ধান্ত জনগণের বিজয়। সরকার বিচার বিভাগকে করায়ত্ত করার যে দূরভিসন্ধি করেছিল আজ সর্বোচ্চ আদালতের সিদ্ধান্তে সেই চক্রান্ত ব্যর্থ হয়েছে। ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণায় সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্ত বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে সহায়ক হবে। উচ্চ আদালতের বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতা বাংলাদেশের প্রথম সংবিধানে সংসদের হাতে রাখা হলেও ১৯৭৫ সালে সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনের পর বিচারক অপসারণের ক্ষমতা প্রেসিডেন্টের হাতে ন্যস্ত হয়। পঁচাত্তরের পট পরিবর্তনের পর তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী এনে বিচারক অপসারণের বিষয় নিষ্পত্তির জন্য সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠন করেন। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার ২০১৪ সালে ষোড়শ সংশোধনীর মাধ্যমে বিচারক অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে ফিরিয়ে দেয়। কিন্তু এক রিট আবেদনের প্রেক্ষাপটে ২০১৬ সালে হাইকোর্ট ওই সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে। রাষ্ট্রপক্ষ ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করলে প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার নেতৃত্বাধীন সাত বিচারকের আপিল বিভাগ গতকাল হাইকোর্টের রায় বহাল রাখে।
রায়ের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে রিজভী বলেন, সংসদের হাতে বিচারক অপসারণের ক্ষমতা থাকলে বিচার কার্যক্রম প্রভাবিত করতে চাপ প্রয়োগের সুযোগ থাকে। বর্তমান জাতীয় সংসদের যে কম্পোজিশন, তাতে উচ্চ আদালতের বিচারকগণের অপসারণ করার ক্ষমতা সংসদের উপর ন্যস্ত থাকলে সেখানে চরম দলীয় কর্তৃত্বের প্রতিফলন ঘটত এবং নিরপেক্ষতা ও ন্যায় বিচার ক্ষুণœ হত। বিচারকগণকে নানাভাবে প্রভাবিত করতে চাপ প্রয়োগের সুযোগ পেত। আপিলের রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে তিনি বলেন, সুপ্রিম কোর্টের এই যুগান্তকারী সিদ্ধান্তের ফলে জাতীয় সংসদের মাধ্যমে ক্ষমতাসীন দলের আদালতের ওপর অনাকাক্সিক্ষত হস্তক্ষেপের নিশ্চিত সম্ভাবনা দূরীভূত হল। এই রায়ে জনগণের মনে ন্যায় বিচারের নিশ্চয়তার আশ্বাস আরও গভীরে পতিত হল। এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপির এই নেতা বলেন, যখন এই ষোড়শ সংশোধনী করা হয়, যে সংসদে করা হয়েছে তা একটা একদলীয় সংসদ, এটা একটা দ্বিতীয় মেয়াদের বাকশালী সংসদ। এখানে অশুভ উদ্দেশ্য নিয়ে তারা এই সংশোধনী করেছিল। জাতীয় সংসদ উচ্চতর আদালতের বিচারকগণকে অপসারণ করবেন, দলীয় কর্তৃত্বই এই জায়গায় প্রতিফলিত হত। এতে ন্যায় বিচার ক্ষুণœ হত এবং একজন ব্যক্তির কর্তৃত্বই এখানে আসত। সুতরাং আমরা মনে করি, সর্বোচ্চ আদালত যে সিদ্ধান্তটি ঘোষণা করেছেন, এটা ন্যায় বিচার নিশ্চিত করবে এবং আগামীতে মানুষকে আরো বেশি আত্মবিশ্বাসী করবে ন্যায় বিচার পাওয়ার ক্ষেত্রে। ষোড়শ সংশোধনীর আগে বিচারক অপসারণের পদ্ধতি সম্পর্কে রিজভী বলেন, যে পদ্ধতিটি আগে ছিল, ষোড়শ সংশোধনীর পূর্বের যে অবস্থা- আমরা মনে করি ন্যায় বিচার অনেকখানি নিশ্চিত হওয়া সম্ভব। এসময় সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এজেডএম জাহিদ হোসেন, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, কেন্দ্রীয় নেতা সানাউল্লাহ মিয়া, এবিএম মোশাররফ হোসেন, আবদুস সালাম আজাদ, মাহবুবুল আলম নান্নু, খোন্দকার মাশুকুর রহমান, সেলিমুজ্জামান সেলিম, হাফেজ আবদুল মালেক প্রমুখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।