বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
চট্টগ্রাম ব্যুরো : পলাশীর আম্রকাননে ইংরেজদের সঙ্গে যুদ্ধে বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার স্বাধীন শেষ নবাব সিরাজউদ্দৌলা ঘাতকের হাতে পরাজয়ের মধ্য দিয়ে অস্তমিত হয় বাংলার স্বাধীনতার শেষ সূর্য। প্রায় ২শ’ বছরের জন্য বাংলা স্বাধীনতা হারায়। নবাব সিরাজউদ্দৌলার বেদনাদায়ক মৃত্যু হলেও উপমহাদেশের মানুষ তাকে আজও শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে। নবাব সিরাজউদ্দৌলার দেশপ্রেম নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে। গত রোববার নগরীর চকবাজারস্থ মেরন সান স্কুল এন্ড কলেজ অডিটরিয়ামে নবাব সিরাজউদ্দৌলার ২৬০তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভায় বক্তারা এ অভিমতম ব্যক্ত করেন।
বক্তারা বলেন, ১৭৫৭ সালের ২ জুলাই দেশদ্রোহী ঘাতকের হাতে নবাব সিরাজউদ্দৌলা নিহত হন। বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার নবাব আলিবর্দী খাঁ মৃত্যুর আগে দৌহিত্র সিরাজউদ্দৌলাকে নবাবের সিংহাসনের উত্তরাধিকারী করে যান। নবাব আলিবর্দী খাঁর মৃত্যুর পর ১৭৫৬ সালের এপ্রিল মাসে সিরাজউদ্দৌলা সিংহাসনে বসেন। নবাবের আপন খালা ঘাতক ঘষেটি বেগম ইংরেজদের সঙ্গে হাত মেলান। সেনাপতি মীর জাফর আলি খান, ধনকুবের জগৎ শেঠ, রাজা রায় দুর্লভ, উমিচাঁদ, ইয়ার লতিফ প্রমুখ ইংরেজদের সঙ্গে ষড়যন্ত্রে মেতে ওঠেন। ধূর্ত ইংরেজরা সন্ধির চুক্তি ভঙ্গ করে চন্দননগরের ফরাসীদের দুর্গ দখল করে নেয়। এরপর ১৭৫৭ সালের ১৭ জুন ক্লাইভ কাটোয়ায় অবস্থান নেয়। নবাব ২২ জুন ইংরেজদের আগেই পলাশী পৌঁছে শিবির স্থাপন করেন। ১৭৫৭ সালে ২৩ জুন সকাল ৮টায় যুদ্ধ শুরু হয়। প্রধান সেনাপতি মীরজাফরের বিশ্বাসঘাতকতায় নবাবের পরাজয় ঘটে। সেই সঙ্গে বাংলার স্বাধীন সূর্য অস্তমিত হয়।
বক্তারা বলেন, পলাশীর ষড়যন্ত্রে যুদ্ধে বাংলার নবাব সিরাজউদ্দৌলার শোচনীয় পরাজয় ঘটলেও ইংরেজরা ক্ষান্ত হয়নি সেদিন। এরপর তারা নবাবের চরিত্রে নানাভাবে কলঙ্কলেপন করতে থাকে, অন্ধকূপ হত্যা, লাম্পট্য ইত্যাদি। সিরাজউদ্দৌলার চরিত্রে কলঙ্ক লেপন করে কলকাতায় একটা মনুমেন্ট তৈরি হয়েছিল। তার নাম ছিল হলওয়েল মনুমেন্ট। বাঙালি হিন্দু ও মুসলমানেরা ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন করে ইংরেজদের বাধ্য করে ওই হলওয়ের মনুমেন্ট তুলে নিতে। পরবর্তিতে নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর উদ্যোগে ২৩ শে জুন প্রথম পলাশী দিবস উদযাপিত হয় কলকাতায়। সাথে ছিলেন কবি কাজী নজরুল ইসলাম এবং মওলানা আকরম খাঁ। বক্তারা বলেন, জাতীয় বীর সিরাজউদ্দৌলাকে স্মরণ করে আমরা অনুপ্রাণিত হই, ব্যথিত হই। একথা সত্য, নবাব সিরাজউদ্দৌলার ইতিহাসের এক ভাগ্যাহত বীর, দেশপ্রেমিক। আজ-কাল দেশপ্রেমিক সিরাজউদ্দৌলার ইতিহাস চর্চা ও নাটক-সিনেমা নেই বললেই চলে। আমাদের উচিত সিরাজউদ্দৌলার প্রকৃত ইতিহাস ও দেশপ্রেমের ঘটনা গুলো জাতির সামনে তুলে ধরা। সিরাজের ইতিহাসের মাধ্যমে বর্তমান প্রজন্ম দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হবে।
ইন্টারন্যাশনাল হিস্ট্রি রিসার্চ এসোসিয়েশন চট্টগ্রাম জেলা শাখার উদ্যোগে অনুষ্ঠিত আলোচনায় সভায় সভাপতিত্ব করেন ইতিহাসবিদ এবিএম ফয়েজ উল্লাহ। প্রধান অতিথি ছিলেন অধ্যক্ষ ড. মোহাম্মদ সানাউল্লাহ। রিসার্চ এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ইতিহাস গবেষক সোহেল মুহাম্মদ ফখরুদ-দীনের সঞ্চালনায় এতে প্রধান আলোচক ছিলেন প্রবীণ রাজনীতিবিদ সিদ্দিকুল ইসলাম। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন দৈনিক আমাদের বাংলার সম্পাদক মিজানুর রহমান, একেএম আবু ইউসুফ, অধ্যক্ষ ইউনুচ কুতুবী, অধ্যক্ষ সিহাব উদ্দিন চৌধুরী, সৈয়দ শিবলী ছাদিক কপিল, মোঃ শাহ আলম, কবি সিহাব ইকবাল, আলী মোকারিম মুনীরুল হক খোরাশানী, মোঃ শামীম আলী, ডাঃ মোঃ জহির, ডাঃ শওকত আলী জাহান প্রমুখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।