বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
অর্থনৈতিক রিপোর্টার : নতুন মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন দুই বছরের জন্য স্থগিত করা এবং ব্যাংকে ক্ষুদ্র আমানতের ওপর আবগারি শুল্ক হ্রাস করে ২০১৭-১৮ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট অনুমোদন করায় এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ইএবি) পক্ষ থেকে সন্তোষ প্রকাশ করা হয়েছে। তবে তৈরি পোশাকসহ শিল্প বিকাশে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হয়নি বলে মনে করে সংগঠনটি। গতকাল এক বাজেট প্রতিক্রিয়ায় এসব কথা বলা হয়।
সংগঠনটির সভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত প্রতিক্রিয়ায় বলা হয়, তৈরি পোশাক খাতের গ্রিন ফ্যাক্টরির ক্ষেত্রে কর্পোরেট করের হার ১৪ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ১০ শতাংশ এবং সাধারণ কারখানার ক্ষেত্রে ১৫ শতাংশের পরিবর্তে ১২ শতাংশ নির্ধারণ করার জন্য প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
তবে আমরা গভীর উদ্বেগ ও বিস্ময়ের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, বাজেটে শিল্পকে উৎসাহিত করার জন্য উপরোক্ত পদক্ষেপগুলো নেয়া হলেও শিল্পের বিকাশের পথে নিরুৎসাহিতকরণ কিছু পদক্ষেপও রয়েছে।
তৈরি পোশাক, চামড়া, হিমায়িত খাদ্যসহ সকল রফতানিখাতের ক্ষেত্রে উৎসে কর কর্তনের হার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে শূণ্য দশমিক ৫০ শতাংশ করার জন্য প্রস্তাব করা হয়েছিল। তৈরি পোশাক, চামড়া, হিমায়িত খাদ্যসহ সকল রফতানিখাতের ক্ষেত্রে উৎসে কর কর্তনের হার শূণ্য দশমিক ৫০ শতাংশ নির্ধারণ করার জন্য আবারও বিশেষভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি।
উল্লেখ্য, ইউরোপের বাজারসহ অন্যান্য দেশের ক্রেতা ও পণ্যের মূল্য ক্রমাগতভাবে হ্রাস পাচ্ছে। এছাড়া ডলারের বিপরীতে টাকার মূল্যমান বেড়েছে ৭ দশমিক ৮৪ শতাংশ। মজুরি, জ্বালানি, পরিবহন এবং অন্যান্য আনুষঙ্গিক ব্যয় বৃদ্ধিসহ শ্রমিকদের গত পাঁচ বছরে দুই দফায় ২১৯ শতাংশ মজুরি বৃদ্ধিতে ব্যবসা পরিচালনার ব্যয় ১৭ দশমিক ১১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে পোশাক শিল্প নিদারুণ চাপের মধ্যে রয়েছে এবং অন্যান্য প্রতিযোগী দেশের সঙ্গে অস্তিত্ব ও সক্ষমতা টিকিয়ে রাখা কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া একর্ড, এলায়েন্সের শর্তানুযায়ী এ শিল্পের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে রেমিয়েশন ও রেট্রোফাইং কাজে প্রচুর অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে।
এ অবস্থায় অন্যান্য প্রতিযোগী দেশের সঙ্গে আমাদের টিকে থাকতে হলে উৎসে কর হ্রাস করা অত্যাবশ্যক। যেহেতু রফতানিখাতগুলোর লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি তাই সার্বিক বিবেচনায় সরকারের পক্ষ থেকে বিশেষ প্রণোদনার মাধ্যমে সহযোগিতার দাবি জানাচ্ছি।
আবদুস সালাম মুর্শেদী স্বাক্ষরিত প্রতিক্রিয়ায় আরও বলা হয়, রফতানিমুখী শিল্পপ্রতিষ্ঠান ১০০ শতাংশ ভ্যাটমুক্ত। কিন্তু লিমিটেড কোম্পানির ক্ষেত্রে কিছু কিছু পার্চেজের ওপরে ভ্যাট প্রয়োগ হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে রফতানিমুখী শিল্পের লিমিটেড কোম্পানির ক্ষেত্রে ভ্যাটের মধ্যে যেন ফেলা না হয়, সে দিক বিবেচনায় নিয়ে একটি এসআরও জারি করে বিষয়টি পরিষ্কার করার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।
বাজেটে রফতানিখাতে বিশেষ মুদ্রানীতি সর্ম্পকে কোনো নির্দেশনা নেই। এ ব্যাপারে রফতানিকারকদের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা বিশেষ মুদ্রানীতি এবং বিষয়টি অর্থমন্ত্রীর সুবিবেচনার জন্য বিনীত অনুরোধ রইল।
তৈরি পোশাক রফতানির ক্ষেত্রে প্রণোদনার বিষয়ে বলা হয়, বর্তমান প্রতিযোগিতামূলক পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে পোশাকখাতের সুরক্ষায় আগামী দুই বছরের জন্য পোশাক রফতানির এফওবি মূল্যের ওপর প্রচলিত সুবিধাগুলোর অতিরিক্ত ৫ শতাংশ হারে নগদ সহায়তা প্রদান করার বিষয়টি বিবেচনার সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
এছাড়া বাজেটে যন্ত্রপাতি/উপকরণ ও প্রি-ফেব্রিক্যাটেড বিল্ডিং তৈরির উপকরণে শুল্ক হার ৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। রফতানিমুখী শিল্পের স্বার্থে পূর্বের ন্যায় শূণ্য শতাংশ করার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
রফতানি ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে অন্যান্য প্রতিযোগী দেশগুলোর সঙ্গে সক্ষমতায় টিকে থাকার ক্ষেত্রে উপরোক্ত বিষয়গুলো বিবেচনার জন্য অর্থমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করেছে ইএবি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।