বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
স্টাফ রিপোর্টার : এ দেশের ক্ষমতাসীনরা দিল্লীর আজ্ঞাবহ এবং চরিত্রগতভাবে ফ্যাসিস্ট বলে মন্তব্য করেছেন দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান। কাজেই তাদের কাছ থেকে ভারতীয় মুসলমানদের ওপর পরিচালিত নির্যাতনের প্রতিবাদ আশা করা অমূলক বলে তিনি মনে করেন। গতকাল (রোববার) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ভারতে গো-রক্ষা আন্দোলনের নামে মুসলিম হত্যার প্রতিবাদে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলন তিনি এসব কথা বলেন। মাহমুদুর রহমান বলেন, বিরোধী রাজনৈতিক দলসমূহের নির্লিপ্ততায় বাংলাদেশের ৯০ শতাংশ মুসলিম জনগোষ্ঠী হতাশ ও ব্যথিত হয়েছে। দিল্লীর আশীর্বাদে ক্ষমতায় আসীন হওয়ার প্রতিযোগিতা থেকেই রাজনীতিবিদরা এ দেউলিয়া আচরণ করছেন। ভারতীয় সংখ্যালঘু মুসলমানদের ওপর চলমান নির্যাতন ও হত্যাকান্ডের ঘটনায় একজন বিবেকসম্পন্ন মানুষ, মুসলমান এবং সংবাদমাধ্যম ও মানবাধিকার কর্মী হিসেবে আমরা নিশ্চুপ থাকতে পারি না। ‘দুর্ভাগ্যজনকভাবে বাংলাদেশের কোনো মহল থেকে এখন পর্যন্ত ভারতের হিন্দুত্ববাদী শাসকশ্রেণির মুসলমান নিধনযজ্ঞের বিরুদ্ধে কোনো প্রতিবাদ উচ্চারিত হয়নি। ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ইসলামের নাম ব্যবহার করে যে সকল দল বাংলাদেশে রাজনীতি করেন অথবা নানা রকম সংগঠনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন, তাদের ভূমিকাও দিল্লীর আজ্ঞাবহ সরকার থেকে পৃথক নয়। যে ব্যক্তি বা সংগঠন ইসলামের পক্ষ শক্তির দাবিদার তাদের অবশ্যই বিশ্বের যেকোনো স্থানে নিপীড়িত মুসলিম উম্মাহর সমর্থনে দৃঢ় অবস্থান গ্রহণ করতে হবে।
বাংলাদেশের সুশীল সমাজের অবস্থান ব্যক্ত করতে গিয়ে তিনি বলেন, সেক্যুলারিজমের (ধর্মনিরপেক্ষতা) ছদ্মাবরণে এ ইসলাম বিদ্বেষী গোষ্ঠী স¤প্রতি গ্রীক পৌরাণিক দেবি থেমিসের মূর্তি সুপ্রিম কোর্ট চত্বরে স্থাপনের প্রতিবাদে যুদ্ধ ঘোষণা করেন। ৯০ শতাংশ মুসলমান নাগরিকের দেশে পৌত্তলিক মূর্তি স্থাপনের জন্য যে কথিত সেক্যুলার শ্রেণি আন্দোলন করেন, তারা পার্শ্ববর্তী দেশে সংখ্যালঘুদের রাস্তায় পিটিয়ে হত্যা করলেও নীরব থাকেন।
আমর দেশ পত্রিকার এই ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক বলেন, এসব সুশীলদের নীরবতার কারণ হলো যে নিহত হচ্ছে সে একজন মুসলমান। সুশীলদের (?) বিবেচনায় মুসলমানকে হত্যা করলে সেটি অপরাধ নয়, সহিংস সা¤প্রদায়িকতা নয়। বাস্তবতা হলো, ভারতে সংখ্যালঘু মুসলমান এবং বাংলাদেশে সংখ্যাগুরু মুসলমান উভয় জনগোষ্ঠী আজ নিগ্রহের শিকার। মাহমুদুর রহমান বলেন, মানবাধিকারের ইস্যুতে ইউরোপীয় দেশগুলোই সচরাচর অধিকতর সোচ্চার থাকে। তবে মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার যদি মুসলিম হয় তাহলে দৃষ্টি অন্যদিকে ঘুরিয়ে রাখতে এরা সিদ্ধহস্ত।
সরকারের কাছে প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, ভারতের নিত্যকার সা¤প্রদায়িক দাঙ্গায় নিহত কয়জন সংখ্যালঘু মুসলমানদের পরিবারের সঙ্গে দিল্লীর বাংলাদেশ হাইকমিশনের কর্মকর্তারা দেখা করেছেন। তাদের সমবেদনা জানিয়েছেন। ভারত ও বাংলাদেশে মুসলিম নিধনের ঘটনাদৃষ্টে অনুমিত হচ্ছে যে উভয় রাষ্ট্রের সরকার এ অঞ্চলে হয়তো হিন্দু-মুসলমান জনসংখ্যার ভারসাম্য পরিবর্তন আনার লক্ষ্যে যৌথভাবে কাজ করছে। আমি নিপীড়িত মুসলিম জনগোষ্ঠীকে জেগে ওঠার এবং ঐক্যবদ্ধভাবে জালিম শাসকদের প্রতিরোধের আহ্বান জানাচ্ছি। এসময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন কবি ও বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক ফরহাদ মাজহার, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি রুহুল আমীন গাজী, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক এম আব্দুল্লাহ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আবদুল হাই শিকদার, প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমদ, প্রেসক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান প্রমুখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।