Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বগুড়ায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট ও লোডশেডিংয়ে হাজার হাজার মানুষ অতিষ্ঠ

| প্রকাশের সময় : ২ জুলাই, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মহসিন রাজু , বগুড়া ব্যুরো : বগুড়ায় বিদ্যুৎ বিভ্রাটের শিকার গ্রাহকরা নিজেদের দুর্ভোগের চিত্র তুলে ধরতে গিয়ে এখন ‘‘ফেসবুক ওয়ালকে ’’বেছে নিয়েছেন। গত শুক্রবার সন্ধ্যা পৌনে ৭টায় বগুড়ায় একবার বিদ্যুৎ চলে গিয়ে রাত পৌনে ২টা পর্যন্ত বিদ্যুৎবিহীন অবস্থার চিত্র তুলে ধরতে গিয়ে ভোগান্তির শিকার বাবু বসুুধা ফেসবুকে লিখেছেন, ‘‘বগুড়ার প্রায় অর্ধেক অংশ বøাক আউট। বগুড়ার ইতিহাসে প্রাকৃতিক দুর্যোগ ছাড়া সবচে বড় লোডশেডিং চলছে। গরম না হয় সহ্য করা যায়। কিন্তু পানির অভাবে কারবালা সৃষ্টি হয়েছে। কেউকি বলতে পারেন কখন নাগাদ কারেন্ট বাবাজী আসতে পারেন ? হায়রে কপাল ! কারেন্টের আরেক নাম রাম পাল । ’’
ফজলে রাব্বী চৌধুরী লিখেছেন, ‘‘বিদুৎতো আছে সাপ্লাই নাই’’। সংগীত শিল্পী সিঙ্গার জে এম লিখেছেন, ‘‘ আহা বিদ্যুতের কি উন্নতি সন্ধ্যা ৭টায় গেল আর এলো রাত পৌনে ২টায়’’। ইঞ্জিনিয়ার রেজা লিখেছেন, ‘‘ রাত ১২ টা পার, আইপিএসের যায় যায় অবস্থা, কখন বিদ্যুৎ আসবে?’’ এই পর্যন্ত যেসব ফেসবুক ব্যবহারকারীরা মন্তব্য লিখেছেন, তারা সবাই বগুড়া পৌরসভা এবং বগুড়া বিদ্যুৎ বিতরণ সঞ্চালন -১’ এর আওতাভুক্ত এলাকার বাসিন্দা । এব্যাপারে বগুড়া বিদ্যুৎ বিভাগের বিদ্যুৎ বিতরণ - ১ , বিদ্যুৎ বিতরণ - ২, বিদ্যুৎ বিতরণ - ৩ এবং পিডিবির বগুড়া অঞ্চলের ততা¡বধায়ক প্রকৌশল শাখায় খোঁজ নিয়ে জানা যায় , বগুড়া সঞ্চালন কেন্দ্রের আওতাধীন বগুড়া, জয়পুরহাট ও নওগাঁ জেলায় বিদ্যুতের বর্তমান চাহিদা ১৯০ মেগওয়াট । অথচ এর বিপরীতে দৈনিক গড়ে বিদ্যুতের সরবরাহ পাওয়া যায় গড়ে মাত্র ১শ’ মেগাওয়াট । ফলে কোনো ভাবেই বগুড়া অঞ্চলে বিদ্যুতের স্বাভাবিক চাহিদা মেটানো সম্ভব হয়না । শুধু বিদ্যুতের ঘাটতিই নয়, বরং বিতরণ ও সঞ্চালন লাইনের কেবল ফল্টসহ বিভিন্ন যান্ত্রিক ত্রæটির কারণে চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে বগুড়া অঞ্চলে বসবাসকারী মানুষ । শুধু তাই নয় , এই অঞ্চলের কৃষি, শিল্প - বাণিজ্য, পোল্ট্রি, হিমাগার, ডেইরী ও ফিশিং প্রজেক্ট গুলোও বিদ্যুৎ সংকটের কবলে পড়ে বিপন্ন হওয়ার পথে। বগুড়ার বিশিষ্ট শিল্পপতি ও হিমাগার মালিক মকসুদ আহম্মেদ চৌধুরি বলেন , বগুড়ার তিন ডজন হিমাগারে হাজার হাজার আলুচাষী, মধ্যসত্ত¡ভোগী ফড়িয়া এবং ক্ষুদ্র / মাঝারী ব্যবসায়ীদের রাখা লাখ লাখ টন আলুর সংরক্ষণ নিয়ে তারা সব সময় চিন্তিত থাকেন। গ্রাহকের আমানতের ব্যাপারে যেসব হিমাগার মালিক দায়িত্ববান তাদের এখন এতবেশি পরিমাণে জেনারেটর চালাতে হচ্ছে যে, শেষ পর্যন্ত লোকসান গুনতে গুনতে এক পর্যায়ে হয়তো হিমাগারই বন্ধ করে দিতে হবে। বগুড়া পোল্ট্রি এ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোখলেসুর রহমান মুখতার বলেছেন, পোল্ট্রি শেডগুলোতে রাখা মুরগির বাচ্চা বা ডিম পাড়া মুরগির সু-স্বাস্থ্যের জন্য নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সংযোগ অপরিহার্য । কিন্তু বিদ্যুৎ বিভাগ নিয়মিত বিদ্যুতের সরবরাহ দিতে না পারায় তাদেরকে জেনারেটর বা সোলার সিস্টেম ব্যবহার করতে হচ্ছে। এতে অহেতুকভাবে বেড়ে যাচ্ছে উৎপাদন ব্যয়। যার প্রভাব ভোক্তাদের উপ্রই পড়ছে ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ