সাদিক মামুন, কুমিল্লা থেকে : নতুন পরিবেশ। অজানা সব মানুষজন। দলবেঁধে ক্যাম্পাসে ঢুকছে ছাত্রীরা। হৈ-চৈ করতে করতেই শ্রেণিকক্ষের দিকে ছুটছে ওরা। ওদের চোখেমুখে নতুন দিগন্তের হাসি। যেনো স্বপ্নের সিঁড়িতে পা রেখেছে ওরা। মাধ্যমিকের গন্ডি পেরিয়ে শুরু হলো কলেজে পড়ার দিন। গতকাল শনিবার নবীনের রথে আরোহন করে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হওয়া প্রায় বারশো ছাত্রীর হৃদয়ের সাথে মিশে গেলো দক্ষিণ-পূর্ব বাংলার শ্রেষ্ঠ নারীশিক্ষা বিদ্যাপীঠ নগরীর মনোহরপুরে অবস্থিত কুমিল্লা সরকারি মহিলা কলেজের ইট-পাথরের ক্যাম্পাস।
আনন্দঘন পরিবেশে এইচএসসিতে প্রথমবর্ষে ভর্তি হওয়া বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের প্রায় বারশো ছাত্রীকে ফুলেল শুভেচ্ছায় বরণ করে নিয়েছে কুমিল্লা সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষসহ শিক্ষকরা। একাদশের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের এদিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে কলেজের পক্ষ থেকে আয়োজন করা হয় নবীন ছাত্রীদের বরণ এবং ওরিয়েনটেশন ক্লাশের। আর এ আয়োজন ঘিরে নবীন ছাত্রীদের মাঝে সৃষ্টি হয় এক মনোমুগ্ধকর আমেজ। বরণ এবং ওরিয়েনটেশন ক্লাশের শুরুতে একাদশে ভর্তি হওয়া ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. রুহগুল আমিন ভূইয়া বলেন, সব স্মৃতি আনন্দের হয়না। কিছু স্মুতি আছে যেমন আনন্দের তেমনি শেকড়ের বন্ধনে আবদ্ধ। আর কলেজের প্রথমদিনটি সব শিক্ষার্থীর জন্যই গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন। আর এদিনের স্মৃতিকে শেকড়ের বন্ধনে আবদ্ধ করে জীবনের একটি নতুন ধাপে প্রবেশ করতে হবে। নবীনের রথে আরোহন করে আজকে যারা একাদশের পথ ধরে কলেজে পা রেখেছে তাদের সামনের দিনগুলো অনেক চ্যালেঞ্জিং। তাই এগুতে হবে সতর্কতার সাথে। জীবনে সত্যকে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। জ্ঞান অর্জনে পরিশ্রমের বিকল্প নেই। মেধাকে মানব সভ্যতার কল্যাণে কাজে লাগাতে হবে। সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে এগিয়ে আসতে হবে। তবেই সফল হবে। আর মনে রাখতে হবে কলেজ জীবনে এইচএসসির যাত্রাপথ অনেক কঠিন। আর তাই সামনের দুটি বছর কোচিং নির্ভর না হয়ে কলেজে ক্লাশমুখি থাকতে হবে। এ কলেজে সুষ্ঠু ও নিরাপদ শিক্ষার পরিবেশ বিদ্যমান রয়েছে। নবীন বরণ অনুষ্ঠানে কলেজ ড্রেস ও পরিচয়পত্রসহ নিয়মিত ক্লাশে আসার আহŸান জানিয়ে শিক্ষার্থী ও শিক্ষার সার্বিক মানোন্নয়নের বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দিয়ে বক্তব্য রাখেন উপাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. মো. আবু তাহের, বাংলা বিভাগীয় প্রধান ড. আবু হেনা এম আবদুল আউয়াল, কলেজ শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক আজহারুল ইসলাম ভূইয়া, হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক আজহারুল ইসলাম, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক খালেদা নাসরিন ও ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক আয়েশা আক্তার মনি প্রমুখ।
এদিকে শিক্ষকদের প্রাণঢালা বরণ শুভেচ্ছায় সিক্ত নবীন ছাত্রীরাও তাদের অনুভূতিতে আবদ্ধ করে রাখতে চায় কলেজের প্রথমদিনের স্মৃতিকে। তথ্য-প্রযুক্তির এসময়ে নবীন ছাত্রীরা স্মার্টফোনের ক্যামেরায় ধরে রাখে কলেজের প্রথমদিনের নানা স্মৃতি।