বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
আশরাফুল ইসলাম নূর, খুলনা থেকে : ২০১৬-২০১৭ অর্থ বছরের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে রেকর্ড করেছে খুলনা কর অঞ্চল। গত দু’বছরে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের সফলতা আসেনি। গেল এক দশকে তৃতীয়বারের মতো এ সফলতা পেল খুলনা কর অঞ্চল। এরআগে, একই অর্থ বছরের গত মে মাসে এক লাখ নতুন করদাতা নিবন্ধনের রেকর্ডের পর দেড় লাখ রিটার্ণ দাখিলের মাইলফলক অতিক্রমের সাফল্য অর্জিত হল। দেশের সকল কর অঞ্চলের মধ্যে প্রথম স্থান দখল করে। গতকাল শুক্রবার অর্থ বছরের শেষদিন হওয়ায় ছুটির বাতিল করে অফিস করে কর অঞ্চলের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
খুলনা কর অঞ্চলের তথ্যমতে, ২০১৬-২০১৭ অর্থ বছরে খুলনা কর অঞ্চলের কর আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল এক হাজার ৪৪০ কোটি টাকা। আর গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কর আদায় হয়েছে এক হাজার ৪৮০ কোটি টাকা। গত বৃহস্পতিবারই লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করে এ কর অঞ্চলটি। এটি গত এক দশকে তৃতীয় বারের মতো লক্ষ্যমাত্রা অর্জন। যা ছিল সর্বোচ্চ লক্ষ্যমাত্রা। এরআগে, গত ২০১৫-২০১৬ অর্থ বছরে লক্ষ্যমাত্রা ছিল এক হাজার ১৮২ কোটি টাকা। এরমধ্যে, আদায় হয় এক হাজার ১৫৮ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। আর ২০১৪-২০১৫ অর্থ বছরে কর আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল এক হাজার ১২০ কোটি টাকা। আদায় হয় ৯৩৭ কোটি ২৮ লাখ টাকা। এ দু’টি অর্থ বছরে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হয়নি। তবে সর্বশেষ ২০১৩ এবং ২০১৪ অর্থ বছরে ৮৫০ কোটি টাকা কর আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করে। এ অর্থ বছরে কর আদায় হয় ৮৫১ কোটি ৪১ লাখ টাকা। এর ছয় অর্থ বছর পূর্বে ২০০৭-২০০৮ অর্থ বছরে মাত্র ২৩৫ কোটি টাকা কর আদায়ে লক্ষ্যমাত্রা ছিল। সে বছর লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করা সম্ভব হয়েছিল। সেবার কর আদায় হয়েছিল ২৫৪ কোটি ২১ লাখ টাকা।
খুলনা বিভাগের দশ জেলা নিয়ে খুলনা কর অঞ্চল। এ কর অঞ্চলের আওতায় ২২টি সার্কেলে বর্তমানে ইটিআইএন ভূক্ত করদাতা রয়েছে দুই লাখ ৪০ হাজার। আর পুরাতন টিআইএনসহ মোট করদাতা রয়েছে তিন লাখ ৪০ হাজার। এরমধ্যে নথিভুক্ত (মৃত, ব্যবসা বন্ধ, কর দিতে সামর্থ নেই) রয়েছে এক লাখ ৩২ হাজার।
এসব করদাতাদের কর প্রদানে উৎসাহ সৃষ্টির লক্ষ্যে খুলনা কর অঞ্চলের পক্ষ থেকে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়। এসব কারনে সফলতা অর্জন করা সম্ভব হয়েছে বলে কর্মকর্দাতের দাবি। এই সাফল্যের পেছনে খুলনা কর অঞ্চল বেশ কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করে। এরমধ্যে ট্যাক্স ট্রেনিং ফর টিচার্স (টিটিটি) ও মোবাইল টিম ফর টিআইএন (এমটিটি) কর্মসূচি চালুকরণ, পেইরোল ট্যাক্স সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ, কর অঞ্চলের অধীনে থাকা ১০ জেলার বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি দপ্তরের সাথে পত্র ও ই-মেইল প্রেরণ, আয়কর মেলা, আয়কর সপ্তাহ, ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার (ইউডিসি) ও পৌরসভা ডিজিটাল সেন্টার (এমডিসি) উদ্যোক্তাদের ই-টিআইএন নিবন্ধন বিষয়ক প্রশিক্ষন প্রদান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন স্টোকহোল্ডারদের সাথে মতবিনিময় কর্মসূচি উল্লেযোগ্য।
খুলনা কর অঞ্চলের যুগ্ম-কমিশনার মোঃ মঞ্জুরুল আলম বলেন, অংশীজন, শিক্ষক, ধর্মীয় সম্প্রদায়সহ সমাজের সর্বস্তরের মানুষের কাছে কর বিষয়ে আমাদের বার্তা পৌঁছে দেয়া সম্ভব হয়েছে। মানুষ আগ্রহের সাথে কর প্রদান করেছে। এছাড়া খুলনা কর অঞ্চলের কমিশনারের দক্ষ নেতৃত্বে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ, আমাদের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অক্লান্ত পরিশ্রমে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের সফলতা এসেছে।
খুলনা কর অঞ্চলের কমিশনার মোঃ ইকবাল হোসেন বলেন, এ সফলতা অর্জনের পিছনে করদাতাদের ভূমিকা রয়েছে। তারা স্বতঃস্ফুর্তভাবে কর প্রদান করেছে। যাদের মধ্যে কর সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা ছিল তারাও এখন করদানে উৎসাহিত হচ্ছে। লক্ষ্যমাত্রা অর্জন একটি বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। জনবল ঘাটতি, পরিবহণ সংকটসহ বেশ কিছু প্রতিকূলতা থাকা স্বর্তেও এবার লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হয়েছে। তিনি বলেন, খুলনা কর অঞ্চলের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীর অক্লান্ত পরিশ্রম, জনপ্রতিনিধি, প্রশাসন, আইনজীবীদের সহযোগীতা ও গণমাধ্যমের একটি উল্লেখযোগ্য ভূমিকার কারণে আজকের এই সাফল্য অর্জন করা সম্ভব হয়েছে। এ সফলতার জন্য তিনি সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
তিনি আরো বলেন, এ ধারাবাহিকতা বজার রাখতে আগামীতে নতুন মেথড নিয়ে এগিয়ে যাওয়া হবে। এ বিষয়ে আগামীকাল রবিবার (২০১৭-২০১৮) অর্থ বছরের প্রথম কর্মদিবসে সকল কর্মকর্তাদের সাথে বিশেষ আলোচনা ও কর্মপরিকল্পনা করা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন। খুলনা কর আপীল কমিশনার প্রশান্ত কুমার রায় বলেন, খুলনা কর অঞ্চলের সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অক্লান্ত প্রচেষ্টায় এই সাফল্য এসেছে। এছাড়া করদাতারাও স্বেচ্ছায় তাদের আয়কর দিতে আগ্রহ প্রকাশ করছে। এসব সাফল্যের জন্য তিনি খুলনার বর্তমান কর কশিনারের প্রশংসা করেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।