Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বালাগঞ্জ-ওসমানীনগরে ব্যাপক হারে বাড়ছে ভাইরাস জ্বরের প্রকোপ

| প্রকাশের সময় : ১ জুলাই, ২০১৭, ১২:০০ এএম

আবুল কালাম আজাদ, বালাগঞ্জ (সিলেট) থেকে : সিলেটে বালাগঞ্জ- ওসমানীনগরে ব্যাপক হারে বাড়ছে ভাইরাস জ্বরের প্রকোপ। প্রতি ঘরের কেউ না কেউ এ জ্বরে আক্রান্ত হয়ে পড়েছে। আবার অনেক ঘরের একাধিক ব্যক্তি আক্রান্ত। হাসপাতাল আর ডাক্তারের চেম্বার রোগিদের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশু ও বৃদ্ধরা। জানা যায়, বন্যার সাথে সাথে বালাগঞ্জ-ওসমানীনগরের প্রতিটা এলাকায় এ প্রাদুর্ভাব লক্ষ্য করা যায়। একদিকে পানি অন্য দিকে জ্বরের প্রকোপে মানুষ দিশেহারা। ঈদ মৌসুমে ডাক্তার না পেয়ে ভোগান্তিতে পড়েন মানুষ। ঋতু পরিবর্তনের সাথে সাথে সিলেটে ভাইরাস সংক্রমন শুরু হয়েছে ব্যাপক হারে। প্রচন্ড জ্বর, মাথা ব্যথা আর সর্দি কাশিতে আক্রান্ত হচ্ছেন মানুষ। শিশুরা বেশিরভাগ ভাইরাস জ্বরে আক্রান্ত হলেও বাদ যাচ্ছেন না বড়রা। রোগির সাথে দেখা হলে জানা যায়, জ্বরের সাথে পেটব্যাথা, বমি এমনকি অনেকের ডায়রিয়া হচ্ছে। সেই সাথে গায়ে হাতে পায়ে ব্যথা অনুভূত হচ্ছে। জ্বরের প্রকোপে শিশুরা অজ্ঞান হয়ে যাচ্ছে। ঈদুল ফিতরের সময়ে ভাইরাস জ্বরের আক্রমন হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন মানুষ। পরিবারের একজন অসুস্থ হলে ধারাবাহিকভাবে অন্যরাও আক্রান্ত হয়ে পড়ছেন। ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে সর্বত্র। ঈদের ছুটি থাকায় সরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে চিকিৎসক নার্স সঙ্কট দেখা দেয়। এতে ব্যাহত হচ্ছে চিকিৎসা সেবা। ঈদের দিনেও অনেকেই বিভিন্ন হাসপাতালে ক্লিনিকে গিয়ে ফিরে এসেছেন। জরুরী চিকিৎসা সেবা চালু থাকলেও তা ছিলো খুবই অপ্রতুল।
বালাগঞ্জ সদর হাসপাতাল আর এম ও ডা: মো: মামুন বলেন, জ্বর ভাইরাস আক্রান্তের খবর পাচ্ছি। অনেক রোগি আসছে। তবে যেভাবে রোগি আসার কথা সেভাবে আসছে না। কারণ হাসপাতালের চারদিকে যেভাার পানি, তেমনি বালাগঞ্জ উপজেলার অধিকাংশ গ্রাম বন্যার পানির নিচে। সে কারণে পানির ভয়ে রোগি আসছে না। একই অবস্থা ওসমানীনগরের প্রায় প্রতিটি ক্লিনিকের। অনেক ক্লিনিক বিষয়টি আঁচ করতে পেরে জরুরী চিকিৎসা সেবার পরিধি বাড়িয়েছেন।
চিকিৎসকরা বলছেন, ভাইরাস আক্রমনের দুই থেকে সাত দিনের মাথায় জ্বর হয়। এই জ্বর হলে শীত শীত ভাব, মাথাব্যাথা, শরীরে ও গিরায় ব্যাথা, খাওয়ায় অরুচি, ক্লান্তি, দুর্বলতা, নাক দিয়ে পানি পড়া, চোখা দিয়ে পানি পড়া, চোখ লাল হওয়া, চুলকানি, কাশি, অস্থিরতা ও ঘুম কম হতে পারে। অনেকের ক্ষেত্রে পেটের সমস্যা, বমি ও ডায়রিয়া হয়। শিশুদের টাইপ বি ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের সংক্রমনে পেট ব্যাথা হতে পারে।
শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা: বি.কে সূত্রধর বলেন, বর্তমানে ভাইরাস জ্বর একটি সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যায় পরিণত হয়েছে। ভাইরাস জ্বর হয়নি এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া যায় না। এজন্য আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। ডেঙ্গু, জন্ডিসসহ যে কোনো ভাইরাসজনিত জ্বরকেই ভাইরাস জ্বর বলা হয়। তিনি বলেন, ভাইরাস জ্বর হলে দুশ্চিন্তার কোন কারণ নেই। এ জ্বরের জন্য এন্টিবায়োটিকও জরুরী। সাধারণত: প্যারাসিটামল খেলেই হয়। ভাইরাস জ্বর ৩/৫ দিন পর্যন্ত থাকে। তবে স্থায়িত্বকাল ৪/৫ দিন হলে অবশ্যই দ্রæত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
সিলেট উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ডা: হোসাইন আহমদ বলেন, সাধারণত: ঋতু পরিবর্তনের কারণে এ ধরনের সিজনেবল জ্বর হয়ে থাকে। এ জ্বরে শিশুরাই বেশিরভাগ আক্রান্ত হয়ে থাকে। এর স্থায়িত্ব ৩/৪ দিন হতে পারে। এ জ্বর হলে শিশুদের প্রাথমিক অবস্থায় প্যারাসিটামল খাওয়াতে হবে এবং বার বার শরীর মুছে দিতে হবে। জ্বরের স্থায়িত্ব বেশি হলে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের নিকট যেতে হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ