Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মাগুরায় বোরো বীজ উৎপাদনে সাফল্য

| প্রকাশের সময় : ৩০ জুন, ২০১৭, ১২:০০ এএম

সাইদুর রহমান, মাগুরা থেকে : বোরো ধানের ভালো বীজ তৈরি করে কৃষকদের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন মাগুরার ২৪০ জন আদর্শ কৃষক। নিজেরা আর্থিক লাভবান হওয়ার পাশাপাশি স্থানীয় পর্যায়ে বীজ সরবরাহ করে ধান উৎপাদনে ব্যাপক ভ‚মিকা রাখছেন তারা। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহযোগিতায় চলতি বোরো মৌসুমে চাষী পর্যায়ে উন্নত মানের ৭২০ মেট্রিক টন বীজ উৎপাদন করেছেন এসব কৃষক। কৃষি বিভাগ বলছে, কৃষকের ঘরে বীজ থাকায় ধান উৎপাদনের খরচ অনেক কমে যাবে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, চাষী পর্যায়ে উন্নত মানের ধানবীজ উৎপাদন সংরক্ষণ ও বিতরণ প্রকল্পের আওতায় (২য় পর্যায়) সদরে ৯০ জন, শ্রীপুরে ৩০ জন, মহম্মদপুরে ৩০ জন ও শালিখা উপজেলায় ৯০ জন কৃষক চলতি বোরো মৌসুমে এক একর করে জমিতে বোরো বীজ ধানের আবাদ করেন। এসব প্রদর্শণী প্লটে বিনা ২৮, ব্রি-৫৮ ও ব্রি-২৮ ধানের আবাদ করা হয়। প্রতি একরে (১০০ শতক) ৩ মেট্রিক টন (৩ হাজার কেজি) বোরো বীজ উৎপাদন হয়েছে। সে হিসেবে জেলায় এবার ৭২০ মেট্রিক টন বীজ উৎপাদন হবে বলে আশা করা হচ্ছে। সঠিক পদ্ধতিতে ধান চাষ করলে একর প্রতি ১০ কেজি বীজের প্রয়োজন হয়। গত দুই মৌসুম বোরো ধানের মানসম্মত বীজ উৎপাদন করে ধান উৎপাদনে ভ‚মিকা রাখছেন এসব কৃষক। তাদের অনুসরণ করে জেলার আরও কয়েক হাজার কৃষক বোরো ধানের বীজ উৎপাদন করছেন, যা দিয়ে বোরো চাষিদের চাহিদার একটি বড় অংশ মিটানো সম্ভব হচ্ছে। শুধু ধানের বীজ উৎপাদনই নয়, নানা সময়ে কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে সাধারণ কৃষকের বন্ধু হয়ে উঠেছেন তারা। ইতোমধ্যে এসব বোরো বীজ ধান কেটে মাড়াই কাজ শুরু করেছেন কৃষক। নিজেদের উৎপাদিত তিনটি জাতের বীজেরই কৃষক পর্যায়ে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এর মধ্যে বিনা ধান ১০ ক্ষরা সহনশীল। এই জাতের ধানের জীবনকাল ১২৭-১৩২ দিন। হেক্টরে গড় ফলন ৫-৭মেট্রিক টন। আধুনিক পদ্ধতিতে উন্নতমানের বীজ উৎপাদন, বীজ সংরক্ষণ ও বাজারজাতকরণে এসব কৃষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। প্রশিক্ষণের পর কৃষক প্রতি ১০ কেজি বীজ, ৩০ কেজি টিএসপি, ৩০কেজি পটাশ ও ১৫ কেজি জীপসাম সার বিনামূল্যে দেওয়া হয়। শলিখার চটিয়া গ্রামের কৃষক স্বপন মন্ডল জানান, দুই মৌসুম তিনি বীজ ধান আবাদ করে সফল হয়েছেন। জমি থেকে ধান কাটার সঙ্গে সঙ্গে তা মাড়াই করতে হয়। মাড়াই শেষে ধানগুলো রোদে শুকাতে হয়। শুকানো হয়ে গেলে বস্তায় ভরে রাখতে হয়, যাতে কোনো বাতাস ঢুকতে না পারে। সেই বস্তায় যেন পোকার আক্রমণ না হয়, সেজন্য এক ধরনের কীটনাশক ব্যবহার করেন তিনি। বোরো মৌসুম শুরুর আগে বাজারজাত করা হয়।’ সদরের শত্রুজীৎপুরের কৃষক আব্দুল মান্নান শেখ,আলাইপুরের আব্দুস সালাম জানান, ‘কৃষি কর্মকর্তার সহযোগিতায় প্যাকেট করে বীজ বিক্রি করেন। বাজারে এ বীজ বিক্রি করার আগে বিএডিসির মাধ্যমে পরীক্ষা করানো হয়। দশ কেজির এক প্যাকেট বীজ ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকায় বিক্রি করেন।’ মহম্মদপুর উপজেলা সদরের ধুপুড়িয়া গ্রামের কৃষক রমজান আলী জানান,‘বীজ উৎপাদনের সাফল্য দেখে এলাকার কৃষকেরা পরামর্শের জন্য তার কাছে আসছেন।’ মাগুরা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক পার্থ প্রতীম সাাহ বলেন, ‘ পরনির্ভরতা কমাতে কৃষক বোরো বীজের আবাদ করছেন। আধুনিক পদ্ধতিতে উৎপাদিত বোরো বীজের ফলন ভালো হয়েছে। উৎপাদিত বীজ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে অত্যন্ত উচু মানের পাওয়া গেছে।’



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ