Inqilab Logo

সোমবার, ২৪ জুন ২০২৪, ১০ আষাঢ় ১৪৩১, ১৭ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১৮

| প্রকাশের সময় : ২৯ জুন, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক: বিভিন্ন স্থানে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে ১৮ জন। আমাদের সংবাদদাতাদের পাঠানো প্রতিবেদন-

খাগড়াছড়ি জেলা সংবাদদাতা জানান, খাগড়াছড়ি-চট্টগ্রাম সড়কের গুইমারা কালাপানি এলাকায় যাত্রীবাহি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে গিয়ে মা ও শিশু কন্যাসহ তিনজন নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছে অন্তত ১৬ জন। গতকাল বুধবার সকাল পৌনে ১০ টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন, মাটিরাঙার খেদারছড়ার রিপন নেসা (২৪), তার শিশু কন্যা জান্নাতুল ফেরদৌস (৩) ও হাফছড়ির বাসিন্দা তারিকুল ইসলাম (২০)। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সকালে খাগড়াছড়ি থেকে চট্টগ্রাম যাওয়ার পথে যাত্রীবাহি লোকাল বাসটি কালাপানি এলাকায় পৌঁছালে ব্রেক ফেইল করে। এতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাসটি গাছের সাথে ধাক্কা লেগে সড়কের উপরে উল্টে যায়। এসময় বাসের চাপায় পড়ে মা ও তার শিশু কন্যাসহ তিনজন ঘটনাস্থলেই নিহত হয়। গুইমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক সেনাবাহিনী, পুলিশ ও স্থানীয়রা মিলে হতাহতদের উদ্ধার করে। তবে দুর্ঘটনার পরপরই বাসের চালক পালিয়ে গেছে।
গোবিন্দগঞ্জ (গাইবান্ধা) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের মহিমাগঞ্জে অটোরিক্সার ধাক্কায় এক বৃদ্ধার মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। জানাগেছে, ২৯ রোজার ইফতার করার জন্য তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরছিলেন এক বৃদ্ধা। কিন্তু ইফতার করা বা পরদিন ঈদ করা হলোনা তার। বাড়িতে পৌঁছার পূর্বমুহূর্তে বাড়ির সামনের রাস্তা পার হতে গিয়ে একটি দ্রæতগামী অটো রিক্সার ধাক্কায় সেখানেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন তিনি। মহিমাগঞ্জ-বোনারপাড়া সড়কের ছয়ঘড়িয়া নামক স্থানে সংঘটিত এ দুর্ঘনার শিকার বৃদ্ধা জুলেখা বেগম (৭০) গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার মহিমাগঞ্জ ইউনিয়নের ছয়ঘড়িয়া গ্রামের মৃত আব্দুল হালিম আকন্দের স্ত্রী।
ত্রিশাল (ময়মনসিংহ) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার কাজীরশিমলা এলাকায় পিকআপ ভ্যানের চাপায় দাদা ও নাতনী নিহত হয়েছে। এর প্রতিবাদে প্রায় এক আধা সড়ক অবরোধ করে রাখে এলাকাবাসী। গত মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত দুজনের মধ্যে দাদা আব্দুস ছোবহান (৬৫) এবং তার নাতনী সুমী আক্তার (১১) । তাদের বাড়ী ত্রিশাল উপজেলার নওধার গ্রামে। ত্রিশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাকিউর রহমান জানান, শিশুটিকে নিয়ে বয়স্ক ব্যক্তিটি রাস্তা পার হচ্ছিলেন। এ সময় দ্রæতগতিতে এসে পিকআপ ভ্যানটি (ঢাকা মেট্টো- ৫৪-২৬৩১) তাদের চাপা দেয়। এতে তারা ঘটনাস্থলেই নিহত হন। তিনি জানান, এর প্রতিবাদে সকাল ১০টা ৫০ মিনিট পর্যন্ত সড়ক অবরোধ করে রাখে এলাকাবাসী। পরে আবার যান চলাচল শুরু হয়েছে। তবে পিকআপ ভ্যান ও চালকের খোঁজ পাওয়া যায়নি বলেও জানান ওসি।
উল্লাপাড়া (সিরাজগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় গতকাল বুধবার ৩০ মিনিটের ব্যবধানে বগুড়া-নগরবাড়ি মহাসড়কে আলাদা দুটি সড়ক দূর্ঘটনায় ৩ জন নিহত ও ১ জন আহত হয়েছে। বুধবার বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে উল্লাপাড়া উপজেলার দূর্গানগর ইউনিয়নের দাদপুর গ্রামের সমশের আলীর ছেলে আনোয়ার হোসেন (৩২) ও তার শ্যালক শরিফ আহমেদকে নিয়ে মোটর সাইকেল যোগে শাহজাদপুর যাওয়ার পথে তালগাছি ব্রীজের কাছে ঢাকাগামী পাবনা এক্সপ্রেস এর মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে শ্যালক ও ভগ্নিপতি ঘটনাস্থলেই মারা যায়। অপরদিকে একই সড়কের নবগ্রামের নিকট সিএনজি’র সাথে মোটর সাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে মোটর সাইকেলের চালক বেলকুচি উপজেলার লক্ষীপুর গ্রামের জোমশের আলীর ছেলে সবুজ (২২) নিহত হয়। হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল কাদের জিলানী জানান, ঘাতক বাসটি আটক করা হয়েছে। আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, নগরীতে বাসের ধাক্কায় এক মোটর সাইকেল আরোহী নিহত এবং আরও ২ জন আহত হয়েছেন। গত মঙ্গলবার রাত ১টায় নগরীর খুলশী থানার ফিরোজ শাহ কলোনী এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত মো রুবেল (২৫) ওই এলাকার মোহাম্মদ ফরিদের ছেলে। আহত মুরাদ ও আনোয়ারকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশ জানায় মোটর সাইকেলটিকে দ্রæতগতির ওই বাস ধাক্কা দিলে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
ভেড়ামারা (কুষ্টিয়া) উপজেলা সংবাদাদাতা : কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় সড়ক দুর্ঘটনায় ২জন নিহত হয়েছে। নিহতরা হলো পাশ্ববর্তী দৌলতপুর উপজেলার তারাগুনিয়া গ্রামের কাজী নজরুল ইসলামের ছেলে মাসুদ রেজা (২২) ও একজন অজ্ঞাত। এ ঘটনায় শাকিব ও রহিমাসহ অন্তত ৯জন আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে ২ জনের অবস্থা আশংকাজনক। ঘটনাটি ঘটেছে ঈদের দ্বিতীয় দিন মঙ্গলবার বিকাল ৫টার সময় ভেড়ামারা-কুষ্টিয়া মহাসড়কের বার মাইল তেল পাম্পের সন্নিকটে।
জানাযায়, ঈদের দ্বিতীয় দিন অটো, পিকআপ, নাজ পরিবহনের একটি বাস কুষ্টিয়া অভিমুখে যাচ্ছিল। ঘটনাস্থলে পৌঁছালে নাজ পরিবহনের বাসটি সামনের পিকআপকে ধাক্কা দেয় এবং পিকআপটি গিয়ে ধাক্কা দেয় অটো কে। এ সময় পিকআপ থেকে পড়ে মাসুদ নিহত হয়। আহতদের নিয়ে হাসপাতালে যাওয়ার পথে অজ্ঞাত আরও একজনের মৃত্যু হয়।
গোপালগঞ্জ জেলা সংবাদদাতা জানান, গোপালগঞ্জে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি পিক-আপ ভ্যান উল্টে দিলীপ সরকার (৫০) নামে এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আরো ২০ জন শ্রমিক আহত হয়েছে। গতকাল বুধবার সকাল সাড়ে ৬ টার দিকে গোপালগঞ্জ টেকের হাট সড়কের গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার ভেন্নাবাড়ি বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত দিলীপ গোপালগঞ্জ সদর সাতপাড়া গ্রামের মৃত বরদা সরকারের ছেলে। বৌলতলী তদন্ত কেন্দ্রের আইসি ফরিদুজ্জামান জানান, প্রতিদিনের ন্যায় সকালে সাতপাড় থেকে একটি পক-আপ ভ্যানে করে কাজের উদ্দেশ্যে টেকেরহাট যাচ্ছিলেন ২০/২৫ জন শ্রমিক। পিক-আপ ভানটি ভেন্নাবাড়ি বাজার মোড় এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে যায়। এসময় পিক-আপের চাপায় ঘটনা¯’লেই দিলীপ সরকার নামে এক শ্রমিকের মৃত্যু হয় ও ২০ শ্রমিক আহত হয়।
রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে লেগুনা চাপায় আয়েশা বেগম (৫০) নারী নিহত হয়েছেন। এসময় গুরুতর আহত হয়েছেন ওই নারীর ছেলে। গতকাল বুধবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার তারাব পৌরসভার বরাব এলাকার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে ঘটে এ দুর্ঘটনা। নিহত আয়েশা বেগম সিলেট জেলার সুনামগঞ্জ থানার রতনপুর এলাকার শুক্কুর আলীর স্ত্রী। তারা পরিবার নিয়ে বরাব এলাকায় বসবাস করতেন। রূপগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জুবায়ের মৃধা জানান, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বরাব এলাকার বাসষ্টেশনে অপেক্ষায় ছিলেন আয়েশা বেগম ও তার ছেলে শহর আলী। বেলা ১১টার দিকে রূপসীগামী লেগুনা চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই আয়েশা বেগম নিহত হন। এসময় গুরুতর আহত হন শহর আলী। স্থানীয়দের সহযোগীতায় লেগুনাসহ চালক মাহাফুজকে আটক করেছে পুলিশ।
মঠবাড়িয়া (পিরোজপুর) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, ঢাকা থেকে মঠবাড়িয়ার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা সাকুরা পরিবহনের একটি বাস গতকাল বুধবার ভোরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মঠবাড়িয়া-চরখালী সড়কের বুধাই বাড়ি নাম স্থানের কালভার্ড সংলগ্ন খাদে পড়ে যায়। এতে অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা পায় ৪০ জন বাসযাত্রী। প্রত্যক্ষদর্শী আজিজুর রহমান জানান, ভোর সাড়ে চারটার দিকে মঠবাড়িয়া গামী যাত্রীবাহী সাকুরা পরিবহন (ঢাকা মেট্টো ব-১১-৪৮০৪) নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের বাইরে চলে যায়। তবে বাস ও যাত্রীদের কোন ক্ষতি হয়নি।
নাটোর জেলা সংবাদদাতা জানান, নাটোরে পৃথক সড়ক দূর্ঘটনায় ৪ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরো ৫ জন। ঈদের রাত ১২ টার দিকে শহরের নাটোর-বগুড়া মহাসড়কের ভাটোদারা এলাকায় বগুড়া গামী একটি প্রাইভেট কার নিয়ন্ত্রন হারিয়ে প্রথমে একজন পথচারীকে চাপা দেয়। পরে একটি মটর সাইকেল , একটি অটোরিক্সা ও একটি ভ্যানকে চাপা দেয়। এতে ৮জন আহত হয়। আহতদের মধ্যে ৮জনকে নাটোর সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে আশংকা জনক অবস্থায় ৪জনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ চিকিৎসাধীন অবস্থায় তুরিন, নাঈম ও ভুলুর মৃত্যু হয়। অপরদিকে গুরুদাসপুর উপজেলার নয়াবাজারে ঈদের পরের দিন রাতে মাইক্রেবাসের চাপায় কানু নামের এক মটর সাইকেল আরোহীর মৃত্যু হয়।



 

Show all comments
  • রেজাউল করিম ২৯ জুন, ২০১৭, ২:৪৫ এএম says : 0
    নিহতদের রুহের মাগফিরাত কামনা করছি।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ