Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বাজেট অনেকটাই অবাস্তব অর্থমন্ত্রীর মেডিটেশন করা দরকার

সংসদে এরশাদ

| প্রকাশের সময় : ২৯ জুন, ২০১৭, ১২:০০ এএম


স্টাফ রিপোর্টার : ২০১৭-১৮ সালের প্রস্তাবিত বাজেট অর্থমন্ত্রী জীবনের শ্রেষ্ঠ বাজেট মনে করলেও  অবাস্তব ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে অর্থমন্ত্রী বাজেট পেশ করেছেন বলে জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। গতকাল বুধবার জাতীয় সংসদে ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় তিনি এ কথা বলেন।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, অর্থমন্ত্রী ৪ লাখ ২৬৬ কোটি টাকার বাজেট দিয়েছেন। তিনি বলেছেন বাজেটের এই টাকার সংস্থান করবেন বৈদেশিক সাহায্য থেকে, অভ্যন্তরীণ সম্পদ থেকে, ব্যাংক ঋণ থেকে। কিন্তু তিনি পারেননি (বিগত দিনে), মাত্র ৬৫ ভাগ সফল হয়েছেন। আমার মনে হয় এবারও তিনি পারবেন না। ২দি পরে অর্থবছর শেষ। এ সময়ে ঘাটতি পূরণ করতে পারবেন না। সুতরাং অবাস্তব ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে অর্থমন্ত্রী বাজেট পেশ করেছেন। মাননীয় অর্থমন্ত্রীকে বলব আপনি মাঝে মাঝে উত্তেজিত হয়ে যান। মেডিটেশন করলে মনে হয় শান্ত হয়ে যাবেন। মেডিটেশন করলে মনটা শান্ত হয়, দেহটা শান্ত হয়।
অর্থমন্ত্রী বলেছেন তার জীবনের শ্রেষ্ঠ বাজেট। কিন্তু জনগণের কাছে তা সর্বনিকৃষ্ট বাজেট। আজকে বাজেট পেশ করার পর ব্যবসায়ী, চাকরিজীবি দিনমজুর, রিকশাওয়ালাসহ সকলে মহাআতঙ্কে আছেন। বাজেটে অনেক অবাস্তব বিষয় রয়েছে। অর্থমন্ত্রীও অনেক সময় উত্তেজিত হয়ে যান। উনারও মেডিটেশন করা দরকার আছে।
এরশাদ বলেন, অর্থমন্ত্রী বলেছেন এ বছর ৭.০৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হবে। প্রবৃদ্ধি নিয়ে বিশ্বব্যাংক, আইএমএফসহ বিভিন্ন সংস্থা প্রশ্ন তুলেছেন। কিন্তু তিনি যৌক্তিক কোনো জবাব দিতে পারেন নাই। প্রস্তাবিত বাজেটে কর্মসংস্থানের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো পরিকল্পনা নেই। একটি দেশে কর্মসংস্থান ছাড়া প্রকৃত অর্থনীতি এগোতে পারে না।
তিনি বলেন, কোটি কোটি টাকা ব্যাংকিং সেক্টর থেকে লোপাট হচ্ছে তাদের বিচার হচ্ছে না। তাদের নাম জনগণ জানতে পারছে না। কেন? তারা কি সরকারের চেয়ে একই শক্তিশালী। সবচেয়ে অন্যান্য ঘটনা বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে রিজার্ভ চুরি ঘটনা। যারা এর সঙ্গে জড়িত তারা চিহ্নিত হলেও তাদের নাম জানতে পারলাম না। এখানো তারা এই সমাজে বসবাস করছে। এর চেয়ে দুঃখজনক ঘটনা কি হতে পারে। কেন তাদের বিচার হবে না। তাহলে কি সুশাসনের অভাব। অর্থমন্ত্রীও বলতে পারবেন। আমি দাবি করবো যারা ব্যাংক লুটপাট করেছেন তাদের প্রকাশ করুন। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, শেয়ার বাজার অর্থ লোপাটের প্রাণকেন্দ্র হয়েছে। ২০১০ সালে  শেয়ার মার্কেট ধসের পর অনেক বিনিয়োগকারী আত্মহত্যা করেছেন। আশা করেছিলাম প্রধানমন্ত্রী পদক্ষেপ নিবেন। কিন্তু আমরা আশাহত হয়েছি। এরশাদ বলেন, শিক্ষাক্ষেত্রে অবক্ষয় চলছে। কোচিং বাণিজ্যের দৌরাত্ব। এই সেক্টরে লুটপাট চলছে। এখন শিক্ষকরা নকল সরবরাহ করে। দেশের পরিবেশ কোন অবস্থায় যেতে পারে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ সবাইকে পাস করাতে হবে। জিপিএ দিয়ে প্রকৃত মেধা বোঝা যাচ্ছে। আমি আবার পরীক্ষার ফলাফলে ডিভিশন প্রথা পুনরায় চালু করার দাবি জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, স্বাস্থ্য বিভাগে ডাক্তারদের কমিশন চলছে। যে কোনো অজুহাতে শুধু মেডিক্যাল   টেস্টের দিকে নজর। সকলে শুধু কমিশনের পিছনে ছুটছে। হাসপাতালগুলোতে দালালদের দৌরাত্ম। মেডিটেশনের ওপর কর প্রত্যাহারের জন্য দাবি জানাচ্ছি। অর্থমন্ত্রীও অনেক সময় উত্তেজিত হয়ে যান। উনারও মেডিটেশন করা দরকার আছে। এরশাদ বলেন, কৃষিমন্ত্রীর সঙ্গে একমত হয়ে আমিও বলবো কৃষিপণ্যের ওপর সকল কর প্রত্যাহার করতে হবে। কৃষক আমাদের প্রাণ। খাদ্যগুদামের প্রকৃত চিত্র বুঝে খাদ্য আমদানি করার উচিত। চালের দাম কমাতে চাল আমদানি করা হোক। শুধু বিড়ির ওপর কর বাড়বে কেন। সিগারেটে কি নিকোটিন নেই। আমি বিড়ির ওপর ২০ শতাংশ ও সিগারেটের ওপর ১০০ শতাংশ কর আরোপের দাবি করছি। তিনি বলেন, ২৫ বছর বিমানে উঠি না। বিমান সময়ের সিডিউল নেই। বিমানে প্রধানমন্ত্রীর খাদ্য নিয়ে সমস্যা হয়, এটা মেনে নেওয়া যায় না। বিমান আমাদের গর্ব। আমাদের পতাকা বহন করে। আমাদের পতাকা অপমান করবেন না। আমি বিমানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: অর্থমন্ত্রী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ