বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
ছাগলনাইয়া (ফেনী) উপজেলা সংবাদদাতাঃ ঐতিহ্যবাহী বৃহত্তর ছাগলনাইয়া আজিজিয়া মাদরাসা ময়দানে বিবদমান দু’পক্ষের মধ্যে দ্বন্ধ ও উত্তেজনা বিরাজ করায় এবং রক্তক্ষয়ী সংঘাত এড়াতে এবারের পবিত্র ঈদুল আজহার জামাত স্থগিত করা হয়েছে। গত শুক্রবার জুম্মার নামাজের সময় মসজিদের ভিতর বিবদমান দু’গ্রæপের মধ্যে গালাগালি, হাতাহাতি ও টান টান উত্তেজনা বিরাজ করায় মাদরাসার শিক্ষক, মুসল্লি ও এলাকাবাসীর মধ্যে কোন প্রকার সমঝোতা না হওয়ায় শান্তিভঙ্গের আশঙ্কায় সর্ব সম্মতিক্রমে ঈদের জামাত স্থগিত করা হয়। পুলিশ তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থলে এসে নামাজের পর মুসল্লিদের বের করে দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে ওই ্দুটি গ্রæপ মুখোমুখি অবস্থানে থাকায় যেকোন মুহুর্তে বড় ধরনের সংঘাত ও সংঘর্ষের আশঙ্কা করছে এলাকাবাসী। ছাগলনাইয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাহিদা ফাতেমা চৌধুরী জানান, আজিজিয়া মাদরাসার ঈদগাহের জামাত নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক করেও কর্তৃপক্ষ কোন সমোঝোতায় পৌঁছতে না পারায় সেখানে আইন শৃঙ্খলা অবনতির আশঙ্কা থাকায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১৪৪ ধারা জারি করা হবে। জানাগেছে, ছাগলনাইয়া আজিজিয়া ইসলামিয়া কাসিমুল উলুম মাদরাসার মোহতামিম মাওলানা রুহুল আমিনের সঙ্গে দীর্ঘদিন যাবত মাদরাসার মোতয়াল্লী নিয়ে মাদরাসার শিক্ষক ও ঈদগাহের খতিব মাওলানা কপিল উদ্দিনের সঙ্গে বিরোধ চলে আসছিল। এনিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে হামলা ও মামলা দায়েরের ঘটনাও ঘটে। মাদরাসার সূরা কমিটি মাওলানা কপিল উদ্দিনকে মাদ্রাসার শিক্ষক পদ থেকেও অব্যাহতি দিয়েছেন। মাওলানা কপিল উদ্দিন জানান, মাদরাসা প্রতিষ্ঠা হওয়ার পূর্ব থেকে ১৯৫৬ সালের পর ১৯৯০ সাল পর্যন্ত মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা আমার দাদা আল্লামা আবু মূসা (রহঃ) ঈদগাহের ইমামতি করেন। ১৯৯০ সালের পর ২০০৯ সাল পর্যন্ত আমার বাবা হাফেজ নিজাম উদ্দিন (রহঃ) এবং ২০০৯ সাল থেকে অদ্যাবদি পর্যন্ত আমি নিজেই ঈদগাহের ইমামতি করে আসছি। মোহতামিম মাওলানা রুহুল আমিন আমাকে মোতয়াল্লী পদ থেকে বাদ দেয়ার জন্য ওয়াক্ফ এস্টেটে মামলা করে হেরে গিয়ে ধর্ম মন্ত্রনালয়ে গিয়ে পুনরায় অভিযোগ করেন। সেখান থেকেও হেরে গিয়ে সে হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন দায়ের করলে মহামান্য হাইকোর্ট আমার মোতয়াল্লী কার্যক্রম স্থগিত করেন। আমার পরিবারের কেউ যাতে ঈদগাহে ইমামতি করতে না পারে সেজন্য তিনি পরিকল্পনা করে শুক্রবার জুম্মার নামাজের সময় উপজেলা চেয়ারম্যান সোহেল চৌধুরীকে দিয়ে বাইরের আলেমদের দিয়ে ইমামতি করানোর ঘোষনা দেন। মাদরাসার মোহতামিম মাওলানা রুহুল আমিন জানান, মাওলানা কপিলকে সূরা কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক মাদরাসার শিক্ষক পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়। কপিল পরিকল্পিতভাবে বহিরাগত ১৫০/২০০ লোককে মসজিদে একত্রিত করে আমি বক্তব্য দেয়ার সময় আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে আমাকে মারধর করার জন্য মসজিদের মিম্বরের দিকে তেড়ে আসে। উপজেলা চেয়ারম্যান, মেয়রসহ উপস্থিত গণ্যমান্য ব্যক্তিরা আইন শৃঙ্খলা অবনতির আশঙ্কায় ঈদগাহের জামাত স্থগিত করেন। ছাগলনাইয়া পৌরসভার মেয়র এম মোস্তফা জানান, শত বছরের ঐতিহ্যবাহী ছাগলনাইয়া আজিজিয়া ঈদগাহ ময়দান মাদ্রাসার পূর্বে প্রতিষ্ঠা হয়। তখন থেকেই অদ্যবদি পর্যন্ত আল্লামা আবু মূসা (রহঃ) ও বংশ পরিক্রমায় তার পরিবারের সদস্যরা মাদ্রাসায় শিক্ষকতা ও ঈদগাহে ইমামতি করে আসছেন। বিগত ১ শ বছরের ইতিহাসে এরকম কোন কলঙ্কজনক ঘটনার জন্ম হয়নি। এটিই সর্বপ্রথম। মাওলানা কপিলের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে আমরা প্রস্তাব দিয়েছিলাম তার পরিবর্তে আল্লামা আবু মূসা (রহঃ) পরিবারের কোন সদস্যকে দিয়ে ঈদের নামাজের ইমামতি করানো। কিন্তু মাদরাসার মোহতামিম মাওলানা রুহুল আমিন আমি পৌর প্রশাসক হিসেবে আমার সেই অনুরোধটি তিনি কর্ণপাত করেননি। ছাগলনাইয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মেজবাউল হায়দার চৌধুরী সোহেল জানান, সব ধরনের ঝামেলা এড়াতে আমি প্রস্তাব দিয়েছিলাম বাহিরের দুইজন আলেমকে দিয়ে ঈদগাহের ইমামতি করানো জন্য আমি বার বার অনুরোধ করার পরও তারা কোন পক্ষই সম্মত হয়নি। দুই পক্ষের সম্মতিতে ছাগলনাইয়া আজিজিয়া মাদ্রাসার ঈদগাহের জামাত স্থগিত করা হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।