বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
মাহফুজুল হক আনার : চুক্তিবদ্ধ না হওয়া ধানের জেলা দিনাজপুরের ১ হাজার ৮৯৪ জন মিল মালিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে খাদ্য বিভাগ। ইতিমধ্যেই এসব মিল মালিকের বিরুদ্ধে আগামী ৪ মৌসুমে চাল সরবরাহে নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি তাদের লাইসেন্স বাতিলেরও সিদ্ধান্ত নেয়া হতে পারে বলে জানিয়েছে খাদ্য বিভাগের একটি সুত্র। এদিকে খাদ্য মন্ত্রীর উপস্থিতিতে ৩০ হাজার মেট্রিক টন চাল সরবরাহের জন্য চুক্তি করা মিলাররাও এপর্যন্ত ৫ হাজার মেট্রিক টন চাল সরবরাহ করেছে। ফলে বোরো ধান ক্রয় সম্পূর্ণরুপে মুখ থুবড়ে পড়েছে।
দিনাজপুর জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক এস.এম কায়ছার আলী এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, দিনাজপুর জেলায় ছোট-বড় মিলিয়ে মোট ২ হাজার ৪৯৪ জন মিল মালিক রয়েছে। এর মধ্যে চলতি বোরো সংগ্রহ অভিযানে চাল সরবরাহের জন্য মোট ৬’শ জন মিল মালিক খাদ্য বিভাগের চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। বাকী মিল মালিকদের চুক্তি করার জন্য বার বার তাগিদ দেয়া হলেও তারা খাদ্য বিভাগের সাথে চাল সরবরাহের কোন চুক্তি করেনি। এ জন্য চুক্তিবদ্ধ না হওয়া ১ হাজার ৮৯৪ জন মিল মালিকের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এই ১ হাজার ৮৯৪ জন মিল মালিক আগামী ৪ মৌসুমে (২ বছর) সরকারী খাদ্য সংগ্রহ অভিযানে অংশ নিতে পারবে না। তিনি আরও জানান, সরকারী খাদ্য সংগ্রহ অভিযানে ব্যাঘাত সৃষ্টির দায়ে আগামী ৪ মৌসুমের জন্য নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি তাদের লাইসেন্স বাতিল করা হতে পারে। খাদ্য অধিদপ্তর থেকে তাদের লাইসেন্স বাতিলের নির্দেশনাও আসার ইঙ্গিত দেন জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক। লাইসেন্স বাতিল হলে তাদের ব্যাংক ঋনও বাতিল হবে বলে জানান তিনি। দিনাজপুরের অধিকাংশ মিল মালিকই সরকারী খাদ্য সংগ্রহ অভিযানে অংশ না নেয়ায় চলতি সরকারী বোরো সংগ্রহ অভিযান মুখ থুবড়ে পড়েছে। ফলে এবার ধানের জেলা দিনাজপুরে বোরো সংগ্রহ অভিযান সফল হচ্ছে না।
জেলা খাদ্য বিভাগ জানায়, চলতি বোরো সংগ্রহ অভিযানে দিনাজপুর জেলায় এবার মোট ৮৬ হাজার মেট্রিক টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়। এর মধ্যে ৬’শ মিল মালিক ৩০ হাজার মেট্রিক টন চাল সরবরাহের চুক্তি সম্পাদন করে। কিন্তু গত ২ মে থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত ১ মাস ১৮ দিনে দিনাজপুরে চাল সংগ্রহ হয়েছে মাত্র ৫ হাজার ৫’শ মেট্রিক টন চাল। এতে বোরো সংগ্রহ অভিযান পুরোপুরি ব্যর্থ হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে।
এদিকে মিল মালিকরা জানান, সরকার এবার প্রতিকেজি চালের সংগ্রহ মুল্য নির্ধারন করেছে ৩৪ টাকা। কিন্তু বর্তমানে বাজারে চাল বিক্রি হচ্ছে ৪২ থেকে ৪৫ টাকা দরে। এই অবস্থায় সরকারী খাদ্য সংগ্রহ অভিযানে অংশ নিয়ে মারাত্মক লোকসানের মুখে পড়তে হচ্ছে তাদের। বাজারে ধানের দাম বেশী হওয়ায় চালের উৎপাদন খরচও পড়ছে বেশী। আর এতে আর্থিকভাবে মারাত্মক লোকসানের আশংকায় তারা চাল সরবরাহ করতে পারছেন না। বর্তমানে ৭৫ কেজির প্রতিবস্তা বিআর-২৮ ধান বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার থেকে ২১’শ টাকায়, হাইব্রিড ধান বিক্রি হচ্ছে ১৬’শ থেকে ১৭’শ টাকায় এবং মিনিকেট বিক্রি হচ্ছে ২১’শ থেকে ২২’শ টাকায়। তিনি জানান, এক বস্তা ধান থেকে চাল উৎপাদন হয় ৪২ থেকে ৪৩ কেজি। এতে ধানের দাম, পরিব্হন ও উৎপাদন খরচ মিলিয়ে প্রতিকেজি মোটা চাল উৎপাদন করতে ৪০ থেকে ৪২ টাকা পড়ে যায়। এই অবস্থায় এত লোকসান দিয়ে সরকারী ৩৪ টাকা মুল্যে চাল সরবরাহ করা তাদের জন্য দুস্কর। ধানের জেলা দিনাজপুরে চলতি বোরো মৌসুমে খাদ্য সংগ্রহ অভিযান সফল না হওয়ায় দেশে খাদ্য সংকটের আশংকা দেখা দিয়েছে। দিনাজপুর জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক এসএম কায়ছার আলী জানান, দিনাজপুরে বর্তমানে খাদ্য মজুদ রয়েছে ১৯ হাজার ৫’শ মেট্রিক টন। এই মজুদ আরও অনেক বেশী ছিলো। প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন স্থানে এই জেলা থেকে খাদ্য শষ্য সরবরাহ করায় মজুদ দিন দিন কমছে। বিদেশ থেকে চাল আমদানীর ব্যাপারে সরকার শুল্ক কমিয়ে নিয়ে আসায় দেশে খাদ্য সংকট হবে না বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।