পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সায়ীদ আবদুল মালিক : রাজধানী জুড়ে তীব্র যানজটে জনজীবনে নেমে আসে চরম দুর্ভোগ। প্রবিত্র ঈদুল ফিতরের আর মাত্র তিনদিন বাকি। শুক্রবার থেকে ঈদের ছুটি শুরু হওয়ায় গতকাল বৃহস্পতিবার থেকেই ঈদে ঘরে ফেরা মানুষের যাত্রা শুরু হয়ে যায়। সকাল থেকেই ঢাকা শহরে প্রধান প্রধান সড়কগুলোসহ অলিগলির রাস্তাগুলোতেও সৃষ্টি হয় তিব্র যানজটির। অফিস আদালতগামী মানুষের শ্রোতের সাথে যোগ হয় ঘরে ফেরা ও ঈদের কেনাকাটা করতে বের হওয়া মানুষের শ্রোত। এতে গতকাল সকাল থেকেই মানুষ রাস্তায় নেমে পড়ে চরম দুর্ভোগে। যানজটো কারণে গাড়ি রাস্তায় আটকে যাওয়ায় একদিকে রাস্তায় যানজট অন্যদিকে পরিবহন সঙ্কটে পড়ে নগরবাসী। মাঝে মধ্যে দুয়েকটি পাওয়া গেলেও অতিরিক্ত ভাড়া গোনতে হয় যাত্রিদের। মাত্র দেড়-দুই কিলোমিটার পথ যেতেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে রাস্তায়। আবার অনেকেই পায়ে হেঁটেই গন্তব্যে যেতে দেখা গেছে।
রাজধানীর বিপনী বিতান, মার্কেট ও ফুটপাতে এখন চলছে ঈদ কেনাকাটা। যে কারণে বিপনী বিতান ও মাকেট কেন্দ্রীক এলাকাতে সকাল থেকেই সৃষ্টি হয়েছে তীব্র যানজটের। আর ফুটপাতসহ রাস্তার বেশিরভাগ অংশ এখন হকারদের দখলে। এতে রাস্তায় গাড়িতো দুরের কাথা পায়েও হাটা যাচ্ছে না। বিশেষ করে মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভারের কাজ ধীর গতিতে চলায় ওই পথে চলাচল করা যানবাহনকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকতে হয়। রাজধানীতে প্রবেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের পথ যাত্রবাড়ী-সায়েদাবাদে যেমন চরম দুর্ভোগ নিত্যদিনের ঘটনা তেমনি গতকাল নগরের অন্যান্য সড়কগুলোতেও তীব্র যানজটে পড়ে হাজার হাজার যানবাহন। এছাড়া পশ্চিমে গাবতলী, উত্তরে এয়ারপোর্ট রোড দিয়ে ঢাকায় প্রবেশের সময় তীব্র যানজটে পড়ে হাজার হাজার যানবাহন। মহাখালী, মগবাজার, মালিবাগ এলাকায়ও একই অবস্থা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রাজধানীর অভিজাত এলাকা গুলশান, বনানী, উত্তরা এলাকা ও পান্থপথের বসুন্ধরা সিটিতে প্রচন্ড যানজটের সৃষ্টি হয়। এ ছাড়াও নিউমার্কেট এলাকার রাস্তায় যানজটে মানুষের দুর্ভোগ ছিল চরমে। ফার্মগেট, মহাখালী, গুলিস্তানের রাস্তার ওপরে দোকানপাট থাকায় যানজট চরমে ছিল। সকালে দুর্ভোগের পর বিকেলে অফিস ছুটির পর তা আবার ভয়াবহ আকার ধারণ করে। শাহবাগ, ফার্মগেট, এলিফ্যান্ট রোড, মহাখালী, খিলক্ষেত, কাকলী এলাকায় রাস্তার পাশে শত শত মানুষ ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও যানবাহন পাননি।
মগবাজার কেন্দ্রীক বিভিন্ন সড়কে রাস্তার মাঝখান দিয়ে চলছে ফ্লাইওভারের কাজ, অন্যদিকে রাস্তার পাশ দিয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের খোঁড়াখুঁড়িতে একদিকে তীব্র যানজট অন্যদিকে পথচারীদের দুর্ভোগ।
রাজধানীর পল¬বী বা গাবতলী থেকে বর্তমান সময় অনুয়ায়ী কেউ মতিঝিল যেতে চাইলে সকাল সাড়ে ৭টার মধ্যে বাসে উঠতে হয়। ঠিক একইভাবে অপর প্রান্ত থেকেও কেউ আসতে চাইলে বাসে উঠতে হচ্ছে। তারপরও সময়মত কর্মস্থলে পৌঁছানোর নিশ্চয়তা নেই। ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তায় বসে থাকতে হয়।
সচিবালয় থেকে মতিঝিল, এবং সচিবালয় হয়ে পুরান ঢাকা এলাকায় যেতে চাইলে রাস্তা যেন আর ফুরাতে চায় না। একই চিত্র মীরপুর ১ নম্বর, মালিবাগ, মগবাজার, শাহজাহানপুর, কাকরাইল, নজিমউদ্দিন রোড, সদরঘাট, চকবাজার, নিউমার্কেট, শাহবাগ, কাঁটাবন, মিটফোর্ড এলাকার। যেখানে রায়সাহেব বাজার মোড় থেকে নয়াবাজার মোড় পর্যন্ত হেঁটে যেতে সময় লাগে দুই থেকে তিন মিনিট সেখানে গাড়িতে যেতে সময় লাগে ৩০ থেকে ৪০ মিনিট।
এ বিষয়ে মহানগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের কর্মকর্তারা বলেন, তারা যাত্রীদের সেবার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নিয়েছেন। কমিউনিটি পুলিশ ও পাবলিক ওয়ার পুলিশের সঙ্গে কাজ করবে। পুরান ঢাকার রায় সাহেব বাজর মোড়ের পর বাস ঢুকতে দেবে না পুলিশ। হাল্কা যানবাহন চলাচলের জন্য এক রাস্তা ব্যবহার করতে বলা হয়েছে।
পুলিশের বক্তব্য হচ্ছে, পুরান ঢাকা ঘনবসতিপূর্ন ও নানা ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠানে ঠাসা এলাকা। রাস্তার পাশেই তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। ক্রেতারা মালামাল কিনে গাড়িতে লোড করেন রাস্তার পাশেই। পুরান ঢাকায় যানজটের এটাও গুরুত্বপূর্ণ একটি কারণ।
রাজধানীর গুলশান থেকে ধানমন্ডিগামী বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা শফিক আহমেদ জানান, সকালে তিনি নতুন বাজার থেকে ধানমন্ডি যাওয়ার জন্য গাড়িতে ওঠেন। কিন্তু রাস্তায় প্রচন্ড যানজটের কারণে যেখানে একঘণ্টা বা তার কিছু কম সময়ে ধানমন্ডি পৌঁছান সেখানে প্রায় দুই ঘণ্টা সময় লেগেছে।
তিনি বলেন, মহাখালি হয়ে বাসটি এফডিসি গেট দিয়ে পান্থপথ হয়ে চলাচল করে। প্রচন্ড যানজটের কারণে প্রতিটি সিগন্যালে আগের চেয়ে অধিক সময় অতিক্রম করছে এই লাইনের গাড়িগুলো।
ধানমন্ডির একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রহমান আজিজ বলেন, সকাল থেকে প্রতিটি রাস্তায় অসহনীয় যানজট শুরু হয়েছে। এতে করে অফিসগামী লোকজনের নাভিশ্বাস উঠছে।
তিনি বলেন, ঢাকা শহরের ট্রাফিক সিস্টেম আছে বলে মনে হয় না। দিন দিন ট্রাফিক জ্যাম কম হওয়ার কথা বলা হলেও এটি দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। যা নগরজীবনের একটি অসহনীয় সমস্যা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।