Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সাধারণ চিকিৎসা ও দন্ত চিকিৎসা : একটি তুলনামূলক আলোচনা

| প্রকাশের সময় : ২৩ জুন, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ফাহমিদা হোসেন
(পূর্বে প্রকাশের পর)
এন্ডোডন্টিক্সের অন্তর্ভুক্ত মাইক্রোস্কোপিক সার্জারিগুলার কথা তো এখনও উল্লেখই করিনি! ওরাল সার্জিক্যাল প্রসিডিওরগুলা অথবা পেরিওডন্ট্যাল সার্জারিও যে কত ব্যাপক, সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না! আর এই স্বল্প পরিসরে সেটার পূর্ণাঙ্গ ব্যাখ্যাপ্রদান করাও সম্ভব না। মেডিসিনের অন্যান্য শাখার মত থ্রি-ডি ইমেজিং, কিংবা থ্রি-ডি প্রিন্টিং টেকনোলজি এবং লেজার ট্রিটমেন্টও আমাদের পেশাতে ব্যবহৃত হচ্ছে নৈমিত্তিকভাবে। এছাড়াও কিন্তু আমরা কিছু আর্টিস্টিক কাজও করে থাকি। রঙের নির্বাচনে আর্টিস্টদের মতই আমাদেরকে হিউ, ক্রোমা, এবং ভ্যালু নির্ধারণ করতে হয়। এছাড়াও আমাদের কাজে সিমেট্রি, শ্যাডো এফেক্ট, ট্র্যাঞ্জিশন লাইন এফেক্ট এবং ভ্যারিয়েবল প্লেইনের বহুবিধ ব্যবহার আছে। একই সাথে জ্যামিতিক বিদ্যার প্রয়োগে লাইন অ্যাঙ্গল বা পয়েন্ট অ্যাঙ্গলের ব্যবহার তো আমাদের জন্য ডাল-ভাত! সিমেট্রি না থাকলে সামান্য গাড়ি নির্বাচনের ক্ষেত্রেও অঘটন ঘটতে পারে। যদিও আজকাল বলা হচ্ছে যে এসিমেট্রিক্যালি প্লেইসড থ্রি-ডোর গাড়িও নাকি এখন একটা ফ্যাশন স্টেটমেন্ট! কিন্তু যে কোন আনাড়িও বুঝে যে নিজের চেহারা বা হাসির ব্যাপারে আমরা সিমেট্রি রেস্টোর না করলে কি এলাহী কান্ড ঘটে যেতে পারে! বলা বাহুল্য, যে শুধুমাত্র হাসি বা দর্শন নয়, রোগীর জন্য খাদ্যদ্রব্য সুষ্ঠুভাবে পরিপাকযোগ্য করার জন্য জরুরি সুন্দর ও কার্যকর দু’পাটি দাঁতের বন্দোবস্ত করা আমাদের কাজের আওতাভুক্ত।
দন্তচিকিৎসকদের দায়িত্ব কিন্তু সেখানেই শেষ নয়! হেড এন্ড নেক-এর যে কোন অসুখের চিকিৎসা করে সুস্থতা প্রদান করা ছাড়াও যেহেতু অনেকক্ষেত্রে বড় ধরনের শারীরিক অসুস্থতার লক্ষণ মুখগহŸরেই প্রথমে বেশি করে ধরা পড়ে, সেহেতু একজন দন্তচিকিৎসকই সেই রোগ প্রথমে নির্ণয় করে স্পেশ্যালিস্টের কাছে রেফার করে থাকেন। উদাহরণস্বরূপ ডায়াবেটিস বা মধুমেহর কারণে ক্যান্ডিডায়াসিস এবং এইডস-এর কারণে সৃষ্ট ক্যাপোসিস সারকোমার কথা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসের কারণে দাঁত ও মাড়ির ক্ষয়রোগ হয়। অথচ চিকিৎসাবিজ্ঞানে এখন পরীক্ষিত সত্য, যে দাঁত ও মাড়ির ক্ষয়রোগের কারণে ডায়াবেটিস হয় এবং গর্ভজাত শিশুর গড়ন ব্যাহত হয় ও নির্দিষ্ট সময়ের পূর্বেই অপরিণত সন্তান প্রসব হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। আবার মুখগহŸরের সংক্রমণ সহজে হৃৎপিÐ, বৃক্ক এবং মস্তিষ্কে ছড়িয়ে পড়ে মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়ানোরও বহু নজির আছে। এমনকি মাইগ্রেনের মত ব্যথা অনেকসময় মুখমন্ডল ও দাঁতের অপ্রয়োজনীয় ব্যবহারের সাথে জড়িত থাকে। অতএব, একজন দন্তচিকিৎসকের প্রদত্ত চিকিৎসার আওতাভুক্ত সব রোগবালাই মানুষের সার্বিক সুস্থতার সাথে এতোটাই অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত যে, দন্তচিকিৎসকদের তো মেডিক্যালের বেশিরভাগ বিষয় না পড়ার সুযোগ নাই! উপরন্তু, হেড এন্ড নেক শরীরের এতোটাই গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ যে, পশ্চিমা দেশগুলায় সংঘটিত অনেক বড় বড় অপরাধের কেইসগুলার সমাধানে এর ব্যবহার অপরিহার্য। দাঁতের কামড় থেকে শুরু করে হাড্ডি এবং মাংসপেশীর বিন্যাস পরীক্ষা করে ফ্যাসিয়্যাল প্রোফাইল তৈরির মাধ্যমে মৃত ব্যক্তির পরিচয় সনাক্ত করা এবং অপরাধীকে পাকড়াও করা কোন ব্যাপারই না! উল্লেখ্য, যে একজন নিখোঁজ ব্যক্তির বয়স অনুযায়ী চেহারা অনুমান করাতেও সেই একই তথ্য ব্যবহার করা হয়।
আমাদের পেশায় ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি অনায়াসে চিকিৎসাশাস্ত্রের অন্য যে কোন শাখাকে হার মানাবে। সামান্য ফিলিং করা থেকে শুরু করে অন্য যে কোন কর্মকাÐে ব্যবহৃত ছোটবড় যন্ত্রপাতির সংখ্যা অগণিত এবং সেগুলা বিশেষভাবে ব্যয়বহুল। ল্যাবরেটরিতে পাঠিয়ে ক্রাউন, ব্রিজ, বা ডেঞ্চার ইত্যাদি বানানোর খরচও কম না! সেইজন্য আমাদের পড়াশুনার খরচ থেকে শুরু করে, ক্লিনিক পরিচালনা করায় বিজনেসের ভাষায় যাকে বলা হয় ‘ওভারহেড কস্ট’ অনেক বেশি। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের [ইউনিভার্সিটি অফ পেন্সিল্ভেনিয়া] মেডিক্যাল এবং ডেন্ট্যাল স্কুলে পড়াশুনা করার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের তথা পুরা বিশ্বের বহুল প্রসিদ্ধ বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি এবং এর প্রতিষ্ঠাতা হলেন বিদ্যুতের আবিষ্কারক বেঞ্জামিন ফ্র্যাঙ্কলিন। উল্লেখ্য যে, ডেন্ট্যাল বা দন্তচিকিৎসাশাস্ত্রে পড়াশুনা করার বাৎসরিক খরচ সাধারণ চিকিৎসাশাস্ত্রের পড়াশুনার খরচের চেয়ে বহুগুণে বেশি! তুলনামূলকভাবে চিকিৎসাশাস্ত্রের এই শাখা আরও বেশি প্রতিযোগিতামূলক বিধায় যুক্তরাষ্ট্রে বিদেশ থেকে এসে মেডিক্যাল চিকিৎসকরা শুধুমাত্র কয়েকটা বোর্ড পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেই বেতন বা ভাতাসহ রেসিডেন্সি ট্রেনিং শুরু করে দিতে পারেন। কিন্তু দন্তচিকিৎসকের ক্ষেত্রে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়াই যথেষ্ট নয়। তাদেরকে আবারও স্কুলে পড়াশুনা করে বিশেষভাবে প্রশিক্ষণ নিয়ে লাইসেন্সপ্রাপ্ত হতে হয়। এর আগে রেসিডেন্সিও নেই। এর কারণ হলো, এই বিষয়টাকে যতটুকু সহজ মনে করা হয়, আসলে ততটুকু সহজ বা ফেলনাও নয়।
সমস্যা হলো, দেশের মানুষ একথাগুলা জানে না। শুধু তাই না; আমরা নিজেরাই নিজেদের পেশা যে কতটুকু উন্নত সেটা ঠাওর করার মত জ্ঞান রাখি না। আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা অসম্পূর্ণ এবং অসংলগ্ন হওয়ায় আমরা বুঝতেই পারি না, যে আমাদের পেশা কতগুলা স্পেশ্যাল্টি সাবজেক্টের সমন্বয়ে গঠিত! এর ফলে আমাদেরকে যা বুঝানো হয়, আমরা তাই বুঝি। আমাদের মনে বদ্ধমূল ধারণা দেওয়া হয়েছে, যে আমরা মূলত মেডিক্যাল চিকিৎসকদের সহকারী; অর্থাৎ, আমরা হলাম দ্বিতীয় শ্রেণীর চিকিৎসক। সেই কাজের জন্য তো নার্সগোষ্ঠী আছেই! একমাত্র ইঞ্জিনিয়ারিং ছাড়া দুনিয়ার আর কোন পেশায় রসায়নশাস্ত্র এবং পদার্থবিদ্যার এতো ব্যাপক প্রয়োগ আছে তা’ কি বলতে পারবেন? অতএব, নতুন প্রজন্মের কাছে আমার অনুরোধ থাকবে যে তোমরা নিজেদের আসল পোটেনশিয়্যাল বুঝতে শিখো। তোমরা কয়টা চেম্বার দিলে, কত দামী গাড়ি কিনলে আর কতবার বিদেশে ঘুরলে, সেই প্রদর্শনী করে পেশার ন্যায্য মান অর্জন হবে না। বরং, আমাদের জ্ঞান ও দক্ষতা কিসে এবং কেন আমাদের পেশা অন্যান্য পেশার থেকে পৃথক ও উন্নত, তার যথাযথ ব্যাখ্যা দেওয়ার মত ক্ষমতা অর্জন করো।
এখানে আরেকটা কথা উল্লেখযোগ্য। আমাদের দেশে সাধারণত দন্তচিকিৎসকদের প্রতি অবজ্ঞা নিজ ঘরেই প্রথমে শুরু হয়। উদাহরণস্বরূপ আমার শাশুড়ির কথা বলতে বাধ্য হচ্ছি। উনার ওরাল হেলথ খারাপ দেখে আমি সব দাঁত ফেলে দিয়ে কমপ্লিট ডেঞ্চার করার জন্য আমার প্রোফেশন্যাল অ্যাডভাইস দিলাম। কিন্তু দন্তচিকিৎসার ব্যাপারে আমার কথার উপর তার আস্থা হলো না। আমি বাদে আর সবার কাছ থেকে উনি পরামর্শ নিয়ে অন্য ক্লিনিকে গিয়ে করালেন পার্শিয়্যাল ডেঞ্চার। স্বভাবতই সেটা কার্যকর হলো না। নড়বড়ে হওয়ায় গালে খোঁচা লাগতে শুরু করলো। কয়েকবার অ্যাডজাস্ট করেও লাভ হলো না দেখে আমি উপদেশ দিলাম যেন উনি সেটা আর ব্যবহার না করেন। কিন্তু আবারও আমার কথা উনার পছন্দ হলো না। আরও আড়াই বছর ব্যথার ওষুধ সেবন করে পরে গেলেন সেই ‘ইল ফিটিং ডেঞ্চার’। যতদিনে গিয়ে উনি আমার কথা শুনলেন ততদিনে উনার গালে স্কোয়ামাস সেল কার্সিনোমা [ক্যান্সার] হয়ে গেছে। সার্জারি এবং রেডিয়েশন থেরাপি করেও আর লাভ হয়নি। ডায়াগনোসিসের ৬ মাসের মধ্যে ২০১২ সালে উনি মৃত্যুবরণ করেন। এরকম বহু অভিজ্ঞতা আমার হয়েছে, যেখানে আমারই পেশার ব্যাপারে জমিদার থেকে শুরু করে জমাদার সবাই বেশি জানেন বলেই ভাব দেখিয়েছেন বা দেখিয়ে থাকেন।
এখানে জেনে রাখা ভালো, যে যুক্তরাষ্ট্রে কিন্তু একজন দন্তচিকিৎসক অনেকক্ষেত্রেই একজন মেডিক্যাল চিকিৎসকের চেয়েও বেশি সমাদৃত হয়ে থাকেন! উপরন্তু, এখানে অফিশিয়্যালি এই পেশাকে বলা হয় ‘ডেন্ট্যাল মেডিসিন’ শুধু ‘ডেন্টিস্ট্রি’ না! এই সূ² ব্যাপারগুলা নিয়ে আমরা ভাবি না বলেই আমাদের দেশে পদ্ধতিগতভাবে এবং প্রশাসনিক পর্যায়ে অনেক ঘাটতি থেকে যায়; আর ক্ষতিগ্রস্ত হয় আমাদের পেশা। আগে বহুবার আলাপ করেছি যে শুধুমাত্র শল্যচিকিৎসক ছাড়া বাকি মেডিক্যাল চিকিৎসকদের পরিশ্রমের ধরন দন্তচিকিৎসকদের পরিশ্রমের ধরন থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন এবং বহুমাত্রায় কম। একজন দন্তচিকিৎসককে কঠোর কায়িক পরিশ্রম করতে হয়। উপরন্তু ব্যবহৃত উপকরণ এবং যন্ত্রপাতি তৈরির প্রযুক্তিগত খরচও গগনচুম্বী। সেই কারণেই তাদের পারিশ্রমিকও সমানুপাতিক হারে ঊর্ধ্বমুখী। পেশা হিসাবে উচ্চ মর্যাদা কিন্তু সেখানেই সীমাবদ্ধ না! বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত অনেক দন্তচিকিৎসক নিয়মিতভাবে সেখানে মেডিক্যাল এবং ডেন্ট্যাল, এই দুই অনুষদেই অধিষ্ঠিত থাকেন। আমাদের শিক্ষক প্রয়াত ডা. জে সিবার্ট ছিলেন প্রেসিডেন্ট আইজেনহাওয়ারের দন্তচিকিৎসক। তাঁর দাপট দেখলে অবাক হতাম! পরবর্তীতে অবশ্য দুঃখজনকভাবে উনি লু-গেহরিগস ডিজিজ হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। এমন আরও অনেক দন্তচিকিৎসক আছেন, যারা পুরা চিকিৎসাশাস্ত্রে গুরুজন বলে স্বীকৃত। তেমনই একজন হলেন ডা. এলিয়ট হারশ। তাঁর গবেষণায় উঠাবসা করে এখানের পুরা চিকিৎসক সমাজ এবং ফার্মাসিউটিক্যাল ইন্ডাস্ট্রি। ডা. পিটার কুইন হাঁটু ও হিপ জয়েন্টের মত টিএমজে.-এর ইমপ্ল্যান্ট আবিষ্কার করেছেন। এমন আরও বহু নজির আছে। অতএব, সবই নির্ভর করছে পাস করার পর কে কোন বিশেষ ক্ষেত্রে অবদান রাখতে চায় এবং কতটুকু উচ্চতর প্রশিক্ষণ লাভ করছে, তার উপর।
আরও জেনে রাখা ভালো যে, আমরা যে ক্যারিজ বা ডেন্ট্যাল ডিকে-র জন্য জি.ভি. বø্যাক-এর ক্লাসিফিকেশন ব্যবহার করি, সেই ডা. জি.ভি. বø্যাক একজন মেডিক্যাল এবং ডেন্ট্যাল চিকিৎসক ছিলেন! বাংলাদেশে আমাদের পেশার জনক শ্রদ্ধেয় ডা. আবু হায়দার সাজেদুর রহমানও কিন্তু মেডিক্যাল এবং ডেন্ট্যাল চিকিৎসক, দু’টাই ছিলেন। হয়তো আপনারা প্রশ্ন করতে পারেন, যে সেটা কী করে সম্ভব? সেইজন্যই আমি এখানে আরেকটা কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করতে চাই।
যুক্তরাষ্ট্রে একজন ওরাল সার্জনকে তাদের জ্ঞানের পরিধির কারণে এতোই সমীহ করা হয়, যে তিনি এখানের ডেন্ট্যাল ডিগ্রি [ডি.ডি.এস. (ডক্টর অফ ডেন্ট্যাল সার্জারি) বা ডি.এম.ডি. (ডক্টর অফ ডেন্ট্যাল মেডিসিন)] পাস করে ভালো কোন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ওরাল সার্জারিতে স্পেশ্যালাইজেশন করলে পরীক্ষা দিয়ে সরাসরি এম.ডি. (ডক্টর অফ মেডিসিন), অর্থাৎ বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে এম.বি.বি.এস. ডিগ্রিও অর্জন করতে পারেন! পক্ষান্তরে, একজন মেডিক্যাল চিকিৎসক, সে চিকিৎসাশাস্ত্রের অন্য যে বিষয়েই স্পেশ্যালাইজ করা চিকিৎসক হন না কেন, কোনদিনও কিন্তু পরীক্ষা দিলেও সরাসরি ডেন্ট্যাল ডিগ্রি পাবেন না, যতক্ষণ পর্যন্ত না তিনি আবার ডেন্ট্যাল স্কুলে ভর্তি হয়ে পড়াশুনা না করছেন!
পরিশেষে বাংলাদেশে আমাদের পেশার কর্ণধার অধ্যক্ষ/অধ্যক্ষা এবং ডেন্ট্যাল সোসাইটির কাছে অনুরোধ থাকবে, এখন যেহেতু কারিকুলাম ৫ বছর ব্যাপী হবে, সেহেতু বি.ডি.এস.-এর বর্তমান সিলেবাসে কোনরকম কাটছাঁট না করে পারলে আরেকটু বাড়িয়ে এথিক্স, জুরিস্প্রুডেন্স এবং ফরেন্সিক ডেন্টিস্ট্রির উপর কিছু লেকচার ক্লাস সংযুক্ত করেন। সেই সাথে আমাদের দেশের ওরাল সার্জনরা যেন তাদের ট্রেইনিং শেষ করে সরাসরি চূড়ান্ত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে এম.বি.বি.এস. ডিগ্রি অর্জনেরও সুযোগ লাভ করে সেই বন্দোবস্ত করেন। আমাদের পেশার পথিকৃৎরা আমাদেরকে পথের সূচনা দেখিয়েছেন। এখন বুদ্ধিমত্তার সাথে পেশার উন্নতি এবং অগ্রগতি নিশ্চিত করার দায়িত্ব আমাদের সবার। তবে আমরা যারা প্রবাসে আছি, তারা আপনাদেরকে শুধুমাত্র তথ্য সরবরাহ করতে পারবো। প্রকৃতপক্ষে সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করার দায়িত্ব আপনাদেরই। আজ থেকে হয়তো ২০ বছর পর আমার এই স্বপ্ন বাস্তবায়িত হবে। তখন অনেকের মত আমি নিজেও হয়তোবা সেই পরিপ্রেক্ষিতে অতি সাধারণ কিংবা নিম্নমানের ডেন্ট্যাল সার্জন হিসাবে পরিগণিত হবো। কিন্তু সেই পরাজয়ে কোন হীনমন্যতা থাকবে না; বরং থাকবে নিজের পেশাকে উন্নত অবস্থানে আসীন দেখার পরিতৃপ্তি।
(সমাপ্ত)
লেখক : দন্ত চিকিৎসক, যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সাধারণ


আরও
আরও পড়ুন