Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সিন্ডিকেটের কবলে কাঁচা মরিচের বাজার

| প্রকাশের সময় : ২৩ জুন, ২০১৭, ১২:০০ এএম

সরকার আদম আলী, নরসিংদী থেকে : ঈদকে সামনে রেখে কাঁচা মরিচের বাজারে সিন্ডিকেট থাবা বিস্তার করেছে। হঠাৎ করে অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে অত্যাবশ্যকীয় সব্জী ও মসল্লা কাঁচা মরিচের দাম। গত ২ দিনে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচের দাম বেড়েছে কেজি প্রতি ৬০ টাকা। ৪০ টাকা কেজি দরের কাঁচা মরিচ এখন বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা কেজি দরে। তবে কোথাও কোথাও খুচরা বাজারে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ ১২০ টাকা দরেও বিক্রি হচ্ছে। কাঁচা মরিচের এই অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির কারণে সাধারণ ক্রেতাগন হাপিয়ে উঠেছেন। সাপ্তাহিক ক্রেতা বা সপ্তাহে ২/৩ বার যারা বাজার করেন তারা কাঁচা মরিচের দাম শুনে আৎকে উঠছে। সচেতন ক্রেতারা বলছেন পুরো রোজা চলে গেলো কাঁচা মরিচের দাম বাড়েনি। মোটামুটি বেশ স্থিতিশীল অবস্থায়ই ছিল কাঁচা মরিচের বাজার। কিন্তু হঠাৎ করে দাম বাড়ার ঘটনা নিয়ে সকল শ্রেণীর ক্রেতারাই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে। খুচরা বিক্রেতাদের সাথে কাঁচা মরিচের হঠাৎ মূল্য বৃদ্ধির কারণ সম্পকে জিজ্ঞাসা করা হলে তারা জানান যে, তারা আড়ৎ থেকে বেশী দরে কিনে আনেন এবং বেশী দরে বিক্রি করেন। এতে তাদের কোন হাত নেই। আড়ৎদাররা হঠাৎ কাঁচা মরিচের মূল্য বাড়িয়ে দিয়েছে। পাইকারী বিক্রেতারা জানিয়েছে বাজারে কাঁচা মরিচের আমদানী রয়েছে প্রচুর। এরপরও আড়ৎদাররা কেন দাম বাড়িয়ে দিয়েছে তা তারা নিশ্চিত বলতে পারেনি। তবে আড়ৎদাররা জানিয়েছে, বৃষ্টির কারণে কাঁচা মরিচের উৎপাদন কমে গেছে। আর উৎপাদন কমে যাওয়ায় বাজারে আমদানীও অনেকটা হ্রাস পেয়ে গেছে। যার ফলে কাঁচা মরিচের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে সচেতন ক্রেতাগন বলছেন ভিন্ন কথা। তারা বলছেন আজ থেকে ৩০ বছর পূর্বেও কাঁচা মরিচের খুব একটা বাজার ভেলু ছিল না। যুগের পরিবর্তনের কারণে কাঁচা মরিচের বহুবিধ ব্যবহার বেড়েছে। যার ফলে কাঁচা মরিচের চাহিদাও বেড়েছে ব্যাপক। চাহিদার বিপরীতে চাষাবাদের এরিয়াও বেড়েছে ব্যাপক। এখন দেশের এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিগুলো কাঁচা মরিচের আচার তৈরী করে। ভেষজ ওষুধ তৈরীতে কাঁচা মরিচের ব্যাবহার হয়। পারিবারিক পর্যায়েও মানুষ এখন কাঁচা মরিচের আচার তৈরী করে। প্রতিদিন ভাতের সাথে কাঁচা মরিচ খেয়ে থাকে বাঙালীরা। সালাত তৈরীতে কাঁচা মরিচ ব্যবহৃত হয়। দেশে গ্যাস্ট্রিকের রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় এখন লাল বা শুকনা মরিচের ব্যবহার কমে গেছে। আগে বাসা বাড়ীতে শুটকি, শাক-সব্জী, মাছ, আলু ইত্যাদির ভর্তা তৈরীতে পোড়া মরিচের ব্যাবহার হতো। এখন সে স্থলে কাঁচা মরিচের ব্যবহার হয়। যার ফলে প্রতিদিন বাজারে কাঁচা মরিচ আমদানী ও বিক্রি হয়। একেকজন খুচরা বিক্রেতা দৈনিক কমবেশী ১০ কেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি করে থাকে। কাঁচা মরিচের ব্যাপক চাহিদার সুযোগে এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী প্রতি বছরই বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে কাঁচা মরিচের মনোপলি ব্যবসা করে। বিশেষ করে প্রতি বছর রোজা এলে, ঈদ এলেই এসব অসাধু ব্যবসায়ীরা কাঁচা মরিচের মূল্য বাড়িয়ে সাধারণ মানুষের পকেট থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। এবছর বাজারে কাঁচা মরিচের ব্যাপক আমদানীর কারণে অসাধু ব্যবসায়ীরা রোজার প্রথমভাগে সংকট সৃষ্টিতে খুব একটা সুযোগ পায়নি। ঈদকে সামনে রেখে এসব অসাধু ব্যবসায়ীরা এবার হঠাৎ করে বাজারে হানা দিয়েছে। গত শনিবার নরসিংদীর বিভিন্ন বাজারে বিভিন্ন মূল্যে কাঁচা মরিচ বিক্রি হয়েছে। কেউ কিনেছে ৪০ টাকা কেজি, আবার কেউ কিনেছে ৬০ টাকা কেজি। আবার শহরের মূল বাজারগুলোতে বিক্রি হয়েছে ১০০ টাকা কেজি দরে। গতকাল রোববার থেকে কাঁচা মরিচের বাজার মূল্য সব জায়গায়ই বেড়ে গেছে। শহরের সব বাজারেই কাঁচা মরিচ ১০০ থেকে ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ