বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
রাজশাহী ব্যুরো : ধানের উঠতি মওসুমেও রাজশাহী অঞ্চলে চালের বাজার চড়া। মোটা চিকন সব চালের দাম বাড়ছে গত তিনমাস ধরে। আশা ছিল নতুন ধান বোরো উঠলে চালের দাম কমবে। বরাবর তাই হয়। কিন্তু এবার ব্যতিক্রম দেখা যাচ্ছে। দাম না কমে বরং বাড়ছে। আর বাড়ার মাত্রা সর্বকালের রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। এখন আর পয়তাল্লিশ পঞ্চাশ টাকা কেজির নীচে কোন চাল নেই।
ধান উৎপাদনকারী এলাকা হিসাব খ্যাত এ অঞ্চলে এবারো আমন আউশ বোরো সব ধানের আবাদ ও উৎপাদন ভাল হয়েছে। পরিসংখ্যান দেখা যায় ২০১৬-১৭ বছরে রাজশাহী অঞ্চলে আউশ চাষ হয় একলাখ তিপান্ন হাজার তিনশো পচানব্বই হেক্টর। এতে ধান উৎপাদন হয় চারলাখ আঠারো হাজার পাঁচশো সাতচল্লিশ মেট্রিকটন। এ মওসুমে আমন উৎপাদন হয় তিনলাখ পচানব্বই হাজার ত্রিশ হেক্টর জমিতে। যাতে উৎপাদন হয় তেরলাখ তেইশ হাজার দুশো মে:টন। তাছাড়া এবার সব মিলিয়ে তিনলাখ একাত্তর হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ হয়েছিল। আবহাওয়া মোটামুটি অুনুকুল থাকলেও একেবারে শেষ মুহুর্তে ঝড়ো হাওয়া আর নাটোর নওগাঁর বিল অঞ্চলে হঠাৎ বন্যায় কিছু জমির ধান ডুবে নষ্ট হয়। তারপরও সার্বিক উৎপাদন ছিল সন্তোষজনক। এবার শুরুতে ধানের বাজার দর ভাল ছিল। প্রতিমন নয়শো থেকে সাড়ে নয়শো এমনকি হাজার পঞ্চাশ টাকা দরে বিক্রি হয়। ধানের দাম বাড়তি হবার জের ধরে বাজারে চালের দাম বাড়ে। আশা ছিল কিছুদিনের মধ্যে ধানের দাম পড়ে যাবে। চালের বাজারও কমবে। কিন্তু দেশের হাওড় অঞ্চলে অকাল বন্যায় ধানের ব্যাপক ক্ষতির খবরের পর চালের বাজার দর আর কমেনি। বরং বেড়েছে লাফিয়ে লাফিয়ে। এদিকে কৃষকের ঘরেও ধান নেই। প্রায় সব চলেগেছে মিলার আর মজুদদারদের খপ্পড়ে। এখন তারা সিন্ডিকেট করে চালের দাম বাড়াচ্ছে। মোবাইলে মোবাইলে বৈঠক করে দাম নিয়ন্ত্রন করছে। ধানের ভর মওসুম তারপরও কেন চাল সংকট এর জবাব নেই কারো কাছে। চালকল মালিক সমিতির এক বড়নেতা বলেন বাজারে ধানের দাম নয় থেকে সাড়ে নয়শত টাকা মন। এরসঙ্গে চালকলের খরচ যুক্ত হচ্ছে আরো একাশো পচিশ টাকা। ধানের রকম ভেদে প্রতিমনে চাল উৎপাদন হয় কুড়ি থেকে ছাব্বিশ কেজি। ফলে উৎপাদন খরচ পড়ছে পয়তাল্লিশ থেকে আটচল্লিশ টাকা। এরপর সামান্য লাভ ধরে বাজারজাত করন করা হচ্ছে। চাপাইনবাবগঞ্জের বড় রাইসমিল মোজাম্মেল রাইসমিল। তাদের অনেকগুলো শোরুম রয়েছে। এসব শোরুম গত দু’মাসে পঞ্চাশ কেজির প্রতি বস্তা মিনিকেট ও নাজির শাইল চালের দাম বেড়েছে আড়াইশো থেকে তিনশো টাকা। চিনিগুড়া চালের দাম বেড়েছে কেজিতে পাঁচ টাকা। শুধু মোজাম্মেল রাইস নয় রশিদ রাইসমিলসহ সবারই এবার দাম বাড়তি। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো বাজারে চালের কমতি নেই। টাকা দিলে সব ধরনের চাল যত খুশি তত পাওয়া যাচ্ছে। পাইকারী বাজারে চালের অভাব নেই। যাচ্ছে বিভিন্ন অঞ্চলে। ক্রেতারা বলছেন ধানের সংকট থাকলে টাকা দিলেও তা পাওয়ার কথা নয়। কিন্তু বেশী টাকা দিলেতো পাওয়া যাচ্ছে। গতকাল রাজশাহীর পাইকারী চালের বাজার কুমারপাড়া ও কাদিরগঞ্জে দেখা যায় পাইকারী বাজারে প্রতিকেজি মোটাচাল (গুটিস্বর্ণা) ৪২, সুমনস্বর্ণা ৪৪, নতুন আটাশ ৪৭ ও মিনিকেট ৫২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গতকাল খুচরা বাজারে প্রতিকেজি মোটাচাল (গুটিস্বর্ণা) ৪৩ থেকে ৪৫, সুমন ষ¦র্ণা/পারিজা ৪৬/৪৭, আটাশ চাল পুরাতন ৫০ থেকে ৫২, নতুন ৪৮/৪৯, মিনিকেট ৫৩ থেকে ৫৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। হাইব্রীড নামের মোটাচাল বিক্রি হচ্ছে ৩২ টাকা দরে যা খাবার অযোগ্য। এদিকে চালের অস্থির বাজারে অন্যরকম চালবাজিও চলছে। মোটাচালকে ছেঁটে মিনিকেট বানানো হয়েছে। ব্যবসায়ীরা জানান, কোনটা আসল আর কোনটা নকল তা আমরাই বুঝতে পারছিনা তো আপনারা সাধারন ক্রেতারা কি করে চিনবেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।