Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বৃষ্টিতে ফুটপাতের ঈদ বাজারে কেনাকাটায় মন্দা

| প্রকাশের সময় : ২০ জুন, ২০১৭, ১২:০০ এএম

অর্থনৈতিক রিপোর্টার : ঈদ ঘিরে সবচেয়ে বেশি বিক্রির আশা করেন রাজধানীর ফুটপাতের দোকানিরা। বছরের অন্য সময় ব্যবসা হলেও দুই ঈদের সময়ই তাদের মূল বেচাকেনা। তবে এবার টানা বৃষ্টিতে ফুটপাতের কেনাকাটা আগের বছরের তুললায় অনেক কম হচ্ছে তাদের। বৃষ্টির কারণে ফুটপাতের দোকান ঠিক মতো খোলা রাখতে পারছে না বিক্রেতারা। অন্যদিকে জিনিস কেনার জন্য ক্রেতারা দোকানের সামনে দাঁড়াতে না পারায় ফুটপাত থেকে ঈদের কেনাকাটা করতে পারছে না।
এবার রোজার শুরু থেকেই দুই-এক দিনের বিরতি ছাড়া টানা বৃষ্টির কারণে ঢাকার ফুটপাতে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের বিকিকিনি সেভাবে জমতে পারেনি। বিক্রেতারা বলছেন, ঈদের আগে এক সপ্তাহের কেনাবেচায় আগের ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার আশায় ছিলেন তারা। কিন্তু বৃষ্টির কারণে তাদের সে আশায় গুড়ে বালি।
রাজধানীর মতিঝিল, ফার্মগেইট, পল্টন ও গুলিস্থানের ফুটপাতগুলো ঘুরে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের মুখ ভার করে বসে থাকতে দেখা গেছে। মতিঝিল সোনালি ব্যাংকের সামনে শার্ট ও প্যান্ট বিক্রি করছে পলাশ মাহমুদ। তিনি বলেন, বৃষ্টির কারণে তো বসাই মুশকিল। সামন্য একটু বৃষ্টি হলেও এখানে হাঁটু সমান পানি থাকে। আমরা নিজেরা ঠিক মতো দাঁড়াতে পারি না। আর ক্রেতারা তো এই পানির মধ্যে এসে জিনিস কিনবে না। সব মিলিয়ে এবারের ঈদের ব্যবসা খারাপ যাচ্ছে বলেও তিনি জানান।
গুলিস্থানে বিভিন্ন বিপণি বিতানের সামনের ফুটপাতে প্যান্ট, শার্ট, গেঞ্জি, লুঙ্গি, গামছা, টুপি, ঘড়ি ও জুতা বিক্রি করেন অনেক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। ঈদ উপলক্ষে হরেক পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসলেও বৃষ্টির উৎপাতে তারা শঙ্কিত। বাচ্চাদের পোশাক বিক্রেতা নাজির আলম জানালেন, ঈদ উপলক্ষে বিভিন্ন ডিজাইনের বাড়তি পোশাক এনেছেন তিনি। কিন্তু বৃষ্টির কারণে বিক্রি তেমন হচ্ছে না।
ফার্মগেইটের ফুটপাতের ব্যবসায়ীরাও বৃষ্টি বিড়ম্বনায় হতাশার কথা জানালেন। ওই এলাকার ফুটপাতে কাপড় নিয়ে বসা মালেক বলেন, আমরা তো রাস্তায়ই দোকানদারি করি। কিন্তু এইবার পুরা রোজার মাসে বৃষ্টির কারণে লাভ করতে পারি নাই। এই বৃষ্টিতে কাদাপানির মধ্যে তো সবাই বাইর হইতেও চায় না।
পল্টন ফুটপাতের ব্যবসায়ীরা বৃষ্টি উপেক্ষা করেই পলিথিন টানিয়ে কোনোরকমে দোকান সচল রেখেছেন। পল্টনের কাপড় বিক্রেতা রহিম আলী বলেন, বার বার পলিথিন দিয়ে ঢাকতে হয়, কাপড় ভিজেও যায়। কি আর করবো, বাড়িতে থাকলে তো আর বিক্রি হবে না। পোলাপাইন নিয়ে তো ঈদ করতে হবে।
শুধুমাত্র ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা নন, বিপাকে আছেন ফুটপাতের দোকানে কেনাকাটা করতে আসা নিম্ন আয়ের মানুষও। নিম্ন আয়ের মানুষের অনেকেই  রোজার প্রথম দিকে বড় বড় বিপণি বিতানে ঢুঁ মেরে পোশাক নেড়েচেড়ে দেখে শখ মেটালেও শেষ মেষ তাদের চাহিদা মেটানোর আশ্রয়স্থল হয় ফুটপাতের দোকানগুলো। মতিঝিলের ফুটপাতের দোকানে কেনাকাটা করতে এসেছিলেন রাবেয়া খাতুন। তিনি বলেন, মার্কেট  থেকে তো কাপড় কেনার সামর্থ্য আমার নাই। মেয়ের জন্য কাপড় কিনতে আসছি, ছোট মানুষ। ওদেরই তো ঈদ।
আজিমপুর থেকে গুলিস্থানে কাপড় কিনতে আসা আলিম বলেন, বৃষ্টির কারণে এই কয়দিন আসতে পারেনি। আজ আসছি, তাও বৃষ্টি। আমরা তো আর মার্কেট থেকে কিনতে পারব না। বৃষ্টিতেই দেখে কিনব, যেমন পাই। ঢাকা কলেজের এক শিক্ষার্থীর গুলিস্থানের ফুটপাতে এসেছিলেন শার্ট কিনতে। তিনি বলেন, ফুটপাতে কিছুটা কম দামে কাপড় কেনা যায়। অনেক সময় গার্মেন্টের ভালো কাপড়ও মিলে যায়। দেখি কিছু পাই কিনা। তবে বৃষ্টির কারণে বেশি ঘোরাঘুরি করে জিনিস কেনা সম্ভব হচ্ছে না বলেও তিনি জানান।



 

Show all comments
  • Hasan Mohammad Akram ২০ জুন, ২০১৭, ১০:৫৮ এএম says : 0
    ঢাকার বিয়েতে গাড়ির বদলে নৌকা আর শেরওয়ানির বদলে রেইন কোট লাগবে!! ভাবতেছি গিফট হিসেবে শশুরের কাছ থেকে একটা নৌকা নিব !!!!!
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ঈদ

২৯ এপ্রিল, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ