Inqilab Logo

শনিবার, ২৯ জুন ২০২৪, ১৫ আষাঢ় ১৪৩১, ২২ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

ঘূর্ণিঝড় ও বন্যায় চন্দনাইশে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি

| প্রকাশের সময় : ১৮ জুন, ২০১৭, ১২:০০ এএম

চন্দনাইশ (চট্টগ্রাম) থেকে এম এ মোহসীন : চট্টগ্রামের চন্দনাইশে গত ১ সপ্তাহে টানা ভারী বর্ষণ ও ঘূর্ণিঝড়ে উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে ফসলী জমি, ঘর-বাড়ি, রাস্তা-ঘাটসহ ব্যপক ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে। চন্দনাইশ উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন যথাক্রমে ধোপাছড়ি, দোহাজারী, সাতবাড়িয়া, বরকল, বরমা, জোয়ারা, কাঞ্চনাবাদ, হাশিমপুর, চন্দনাইশ পৌরসদরসহ সব ইউনিয়নের ফসলী জমির মৌসুমী ফসল বন্যা ও পাহাড়ী ঢলের পানির নীচে তলিয়ে গেছে। এখনো ধোপাছড়ি ইউনিয়নে চাষাবাদের ফসল ডুবে আছে। অপরদিকে আশে পাশের উপজেলায় অনেক বাড়ি-ঘর পানি বন্দি ও চরম বিধস্ত হয়েছে। উপজেলার ধোপাছড়ি, হাশিমপুর পাহাড়ী এলাকার মৌসুমী ফসল আউশ ধান, শশা, বেগুন ও লেবু ও পেয়ারা বাগানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এ ব্যাপারে ধোপাছড়ি কৃষক আবুল বশর জানান, তার মৌসুমী ফসলসহ লেবু ও পেয়ারা বাগানের মিলে সর্বমোট ১৪/১৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। সাতবাড়ীয়া ছলিয়ারপাড়া কৃষক মাহবুবুল আলম জানান, তার এককানি জমির বেগুন তলিয়ে গেছে। একই এলাকার মাছচাষী জসিম উদ্দিন জানান, তার মাছের প্রজেক্ট পানিতে ডুবে মাছের পোনা ও বড় মাছসহ ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। মৌসুমী ফসল ও বাড়ি-ঘর রাস্তা ঘাটের পাশাপাশি পল্লী এলাকার মানুষের চলাচলের রাস্তার কার্পেটিং ভেঙ্গে চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। স্থানীয় আবু তাহের জানান, সাতবাড়িয়া থেকে আবদুল বারিহাট হয়ে খানহাট সংযুক্ত সড়কের কার্পেটিং ওঠে রাস্তার দু’ধারে ভেঙ্গে গেছে। আবদুল বারিহাট চন্দনাইশ উপজেলার সদরের সাথে যোগাযোগ সড়কের নয়াহাট সংলগ্নে রাস্তার কার্পেটিং ওঠে রাস্তা দু’ধারে ভেঙ্গে গেছে। অপরদিকে ১০টি ইউনিয়নের মধ্যে বেশী ক্ষতিগ্রস্থ ধোপাছড়ি ইউনিয়ন। এ ইউনিয়নে চাষাবাদী ফসল মৌসুমী সবজি লেবু পেয়ারা, বাড়ি-ঘর, রাস্তা-ঘাটের কালভার্ট, সম্পুর্ণ পানির নিচে তলিয়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তাছাড়া উপজেলার ধোপাছড়ি বাজার সংলগ্ন ছড়ার ওপর সদ্য নির্মিত ৬০ ফুট কালভার্টটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। 

এ ব্যাপাওে ধোপাছড়ি ইউনিয়নের জনসাধারণ জানায়, গত ১৩ জুন থেকে ভারী বর্ষন ও পাহাড়ি ঢলে কালভার্টে আঘাত হানে। অভিজ্ঞ মহলের মতে ১৫০ফুট গার্ডার ব্রিজের পরিবর্তে বক্স কালভার্ট যথার্থ হয়নি। ফলে সরকারি অর্থের ক্ষতিসাধন হয়েছে। সরকারি অর্থায়নে ৬০ ফুট কালভার্ট নির্মাণ করা হয়। এতে ব্যয় হয়েছে ৫৬ লাখ ৮৯ লাখ টাকা। চলতি বছরের ফেব্রæয়ারী মাসে কাজ শুরু করে গত ৩০ মে এর কাজ সম্পন্ন করেছে। তাছাড়া গত ১৩ জুন থেকে ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ী ঢলে পাহাড় থেকে ভেঙ্গে আসা গাছের আঘাতে কালভার্টের ক্ষতি হয়েছে। আঘাত হানে মাঝখানে এভারমেন্ট ওয়ালের উপর। স্থানীয়দের মতে ১৫০ফুট গার্ডার ব্রিজ হওয়ার স্থলে বক্স কালভার্ট করায় পাহাড়ি ঢলের পানি বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। নির্মাণের পর পাহাড়ি ঢলের অতিরিক্ত স্রোতের কারণে বড় বড় গাছপালা ভেঙ্গে এসে ব্রিজের ক্ষতি হয়েছে। ফলে এ ব্রিজটি পুনঃসংস্কার করা জরুরি। ঘুর্ণিঝড়ে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার পল্লী বিদ্যুৎতের খুটি ভেঙ্গে পড়লেও দ্রæত সংস্কারের কর্তৃপক্ষের অবহেলা রয়েছে বলে বাদামলস্থ মোহাম্মদ সোলাইমান অভিযোগ করেন। তিনি জানান, এ সব সমস্যার মধ্যেও পল্লী বিদ্যুৎ মানুষের প্রতি আন্তরিক হওয়া একান্ত প্রয়োজন। উপজেলার পল্লী এলাকার বিধ্বস্থ সড়কগুলো দ্রæত মেরামত না হলে জনসাধারণের চলাচলের দুর্ভোগের অন্ত থাকবে না।
অপরদিকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের চন্দনাইশ উপজেলার পাঠানি ব্রীজের উত্তরাংশে ২০০ মিটারের মত নীচু হওয়ায় সামান্য বৃষ্টিতে মহাসড়কের এ অংশ ডুবে যায়। এতে চট্টগ্রাম কক্সবাজার এর সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। গত বন্যায় এ স্থানে এক কোমর পানিতে মহাসড়ক ডুবে থাকে। ফলে চট্টগ্রাম কক্সবাজারের দু’দিকের যান বাহন আটকে পড়ে। এ সমস্যা স্থায়ী হয়ে পড়েছে। এ ব্যাপারে মহাসড়কের টিআই আরিফ ও সার্জেন বশির জানান, সড়কটি পাঠানি ব্রীজের উত্তর পার্শ্বে নিম্নঅঞ্চলে ব্রীজের সাথে মিলিয়ে উচু করা হলে এ সমস্যা অতি দ্রæত লাঘব হবে। এ ব্যাপারে যাত্রী সাধারণের মধ্যে মোহাম্মদ আবু মুছা ও মোহাম্মদ আরিফ জানান, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পাঠানি ব্রীজের সমস্যায় সড়ক বিভাগসহ প্রশাসনের উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের উপর সুনজর পড়ছে না।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ