Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আটঘরে যুগ যুগ ধরে চলছে চাঁই সাম্রাজ্য

| প্রকাশের সময় : ১৮ জুন, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মোঃ হাবিবুল্লাহ, নেছারাবাদ (পিরোজপুর) থেকে : গ্রীষ্ণের ওষ্ঠাগত তাপমাত্রা শেষ করে পিপাসার্ত ধরনীকে সরস করার নিমিত্তে প্রকৃতীতে এসেছে বর্ষা। খালে বিলে থই থই করছে বর্ষা ও জোয়ারের ভরা নতুন পানি। টুইটুম্বর ভরা পানিতে উদ্দীপনা ফিরে পেয়ে চারদিক ছোটাছুটি করছে চিংিড়ি,বাইলা, টাকি ও তেতোপুঁটিসহ দেশীয় প্রজাতির মাছ। খালে বিলে জমিতে আসা টসটসে পানিতে ছোটাছুটি করা মাছ ধরাকে উপলক্ষ করে নেছারাবাদের আটঘর বিদ্যালয় সংলগ্ন খালের ডাঙ্গায় পুরোদমে জমে উঠেছে দৃষ্ঠিনন্দিত চাঁইয়ের হাট। প্রতি বছর বাংলা মাসের জৈষ্ঠ্যর মাজামাঝি থেকে ভাদ্রর মাজামাঝি সময় পর্যন্ত সপ্তাহের শুক্র ও সোমবার দ‘ুদিন বসে এই চাঁই হাট। উপজেলার আটঘর কুড়িয়ানার মানপাশা বাজারের বিদ্যালয় সংলগ্ন খালের জলে ও ডাঙ্গায় যুগ যুগ ধরে চলে আসছে বিখ্যাত এই চাঁই সা¤্রজ্য। ময়ূরপঙ্খি, লতা, গোল ও চাপা চাঁইসহ বাহারী নামে বিভিন্ন দামে হাটে চাঁই নিয়ে আসা বিক্রেতা,ক্রেতা ও প্রকৃতীপ্রেমী উৎসুখ মানুষের সমাগমে সৃষ্টি হয় যেন অপূর্ব মিলনমেলায়। নেছারাবাদ উপজেলার আটঘরে যুগ যুগ ধরে চলে আসা এই চাঁই সা¤্রজ্যকে ঘিরে এসময়ে ঘটে নানান মানুষের কর্মসংস্থান। স্থানীয় তথ্যমতে,এই চাঁই ব্যবসাকে কেন্দ্র করে এ উপজেলাসহ পার্শ্ববর্তী নাজিরপুরের ২০-২৫টি গ্রামের প্রায় আড়াই সহ¯্রাধিক সাধারন পরিবারের ঘটে থাকে মৌসুমভিত্তিক কর্মসংস্থান।
গত তিন থেকে চার বছরের তুলনায় এ বছর যথাসময়ে খালে জমির ভিতরে প্রবেশ করেছে উপযুক্ত নুতন পানি। এই ক্ষনে চাঁই দিয়ে মাছ ধরার যথাপুযুক্ত সময় বলেই হাটে বেচাবিক্রি চলছে কয়েকগুনে। এ কারনে চাঁই ব্যাবসায়ী ও চাঁই দিয়ে মাছ শিকারী লোকদের মুখে ফুটছে রঙিন হাসি।
সরেজমিনে, গত শুক্রবার(১৬জুন) দক্ষিণবাংলার ঐতিহ্যবাহী এ চাঁইহাট ঘুরে অবলোকন করা গেল এক চোখ ধাধানো নয়নাভিরাম দৃশ্য। মানপাশা বাজারের ওই শাখা খালে ও জলে প্রচুর ক্রেতা বিক্রেতা সমাগম। জলে ও ডাঙ্গায় চলছে সমানতালে চাই বিক্রি। আবার চাঁইয়ের সাথে গড়া দেওয়া হয়না। যে কারনে রাস্তার উপরে অপর একদল লোক গড়া সাজিয়ে বসে আছে বিক্রির উদ্দেশ্যে। গড়াগুলো বাশেঁর প্রকারবেদ অনুযায়ি বিক্রি হচ্ছে ভিবিন্ন দামে। কথা হয় নাজিরপুরের কলারদোয়ানিয়া থেকে হাটে চার শতাধিক চাঁই নিয়ে আসা পঞ্চাশউর্দ্ধো বয়সি মোঃ জহিরুল মিয়ার সাথে। তিনি বলেন গত দু‘তিন বছরের তুলনায় এবছর হাটে বেচাবিক্রি খুবই ভাল। তিনি এক কুড়ি গোল চাঁই বিক্রি করছেন ২হাজার টাকায়। এক কুড়ি ময়ূরপঙ্খি চাঁয়ের দাম ২হাজার পাঁচশত টাকা। এছাড়াও চাঁইয়ের আকারবেধে ২হাজার থেকে সতেরশ টাকায় কুড়ি হিসাবে চাঁই বিক্রি করছেন। চাঁই ব্যাবসায়ী ও কারিগন মো. কবির মিয়া বলেন, তিনি প্রতি হাটে এক হাজার থেকে দেড় হাজার চাই আনেন। বেচা বিক্রি মোটামুটি ভাল থাকায় খাজনা ও সাথে থাকা শ্রমিকদের মজুরী মিটিয়ে কিছুটা লাভবান হচ্ছেন।
হাটে আসা নাজিরপুরের চাঁই কারিগর পরিমল, অরুন মিস্ত্রি, ও সরোয়ার বলেন, একটি চারশ টাকার বড় সাইজের বাঁশ দিয়ে ১৩-১৫টি চাঁই হয়। ১০টি চাঁই তৈরীতে তিনজনের সময় লাগে একদিন। গড় চাই মজুরীসহ সব মিলিয়ে তার খরচ পড়ে ৫০-৬০টাকা। হাটে প্রতিটি চাঁই বিক্রি হয় ৯০-১০০ টাকায়। ব্যাবসায় প্রায় দ্বিগুন লাভে বাড়ীর মহিলারাসহ কোন কোন শিক্ষিত বেকার ছেলেরাও জড়িয়ে পড়ছে চাঁই বুনন কাজে। একই কথা জানিয়ে কাটাপিটানিয়া গ্রামের চাঁই ব্যাবসায়ী স্বপন কুমার হাং বলেন, তাদের গ্রামে প্রায় ৫০-৬০টি পরিবার চাঁই বুনন কাজে জীবিকা নির্বাহ করে। তিনি ৩৫ বছর ধরে এ পেশায় নিয়োজিত। চাঁই কারিগর কবির মিয়া বলেন, একসময় সে নেছারাবাদ, কাউখালি ও নাজিরপুরের ভিবিন্ন এলাকা ঘুরে বাঁশ কিনে নিজে চাঁই বুনত। অন্যদেরকেও এ পেশায় উৎসাহ দিতো। বর্তমানে নির্বিঘেœ বাঁশঝাড় উজাড় করে বসতি স্থাপনসহ নানা স্থাপনা গড়ে তোলায় ক্রমেই বাঁশঝাড় বিলুপ্তির পথে। যে কারনে বাশেঁর একটু দামও বেশি। তাই তিনি এসব চাঁই তৈরীতে যশোর, নড়াইল থেকে বাঁশ সংগ্রহ করছেন। সেই বাঁশ দিয়েই চাঁই বুনছেন এবং অন্যদের কাছেও চাই বুননে বাঁশ বিক্রি করছেন।
হাটে আসা একাধিক ব্যাবসায়ী ও চাঁই দিয়ে মৎস্য আহরনকারীরা জানান, এখন আর তেমন খাল, বিল নেই। বেশির ভাগ প্রভাবশালীরা খালের পাড়, গ্রামের ভিতরে সরকারি খাল ভরাট করে পরিধি বৃদ্ধি করছেন বাসাবাড়ী ও দোকানপাটের। উপজেলার বেশিরভাগ খালই হারিয়ে ফেলছে সে সময়কার জোয়ারভাটার যৌবন। সে জন্য মাছের সংখ্যাও দিন দিন কমে যাচ্ছে। এছাড়াও, গ্রামের ভিতরে নদীর পাড়ে অসাধুরা বাঁধজাল, চরগড়া দিয়ে নির্বিচারে মাছ নিধনে হারিয়ে যাচ্ছে দেশীয় প্রজাতির মাছও।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ
function like(cid) { var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "clike_"+cid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_comment_like.php?cid="+cid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function dislike(cid) { var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "cdislike_"+cid; document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_comment_dislike.php?cid="+cid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function rlike(rid) { //alert(rid); var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "rlike_"+rid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_reply_like.php?rid="+rid; //alert(url); xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function rdislike(rid){ var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "rdislike_"+rid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_reply_dislike.php?rid="+rid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function nclike(nid){ var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "nlike"; document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com//api/insert_news_comment_like.php?nid="+nid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } $("#ar_news_content img").each(function() { var imageCaption = $(this).attr("alt"); if (imageCaption != '') { var imgWidth = $(this).width(); var imgHeight = $(this).height(); var position = $(this).position(); var positionTop = (position.top + imgHeight - 26) /*$("" + imageCaption + "").css({ "position": "absolute", "top": positionTop + "px", "left": "0", "width": imgWidth + "px" }).insertAfter(this); */ $("" + imageCaption + "").css({ "margin-bottom": "10px" }).insertAfter(this); } }); -->