পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
চট্টগ্রাম ব্যুরো : বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে চট্টগ্রামের সাথে রাঙ্গামাটির সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। টানা চারদিন চট্টগ্রাম থেকে বিচ্ছিন্ন থাকায় রাঙ্গামাটিতে খাদ্য, জ্বালানিসহ নানা সংকট দেখা দিয়েছে। সেখানে এখনও বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হয়নি। তার উপর নিত্য প্রয়োজনীয় তরকারিসহ খাদ্য সঙ্কট জনজীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছে। পাহাড় ধসে স্মরণকালের ভয়াবহ বিপর্যয়ের পর মানবিক বিপর্যয়ের মুখোমুখী পাহাড়ের বাসিন্দারা।
ভোগ্যপণ্যের দাম বাড়ছে হু হু করে। কবে নাগাদ সড়ক যানবাহন চলাচলের উপযোগী হবে তা কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না। পাহাড়ী ঢলও পাহাড় ধসের সাথে অনেক এলাকায় সড়ক ধসে পড়েছে। এই কারণে সড়ক সংস্কার করে যোগাযোগ স্বাভাবিক করতে দীর্ঘ সময় লেগে যেতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে। সড়কে জমা পানি নেমে যাওয়ায় গত বুধবার সকাল থেকে বান্দরবান ও কক্সবাজারের পথে যান চলাচল শুরু হলেও রাঙ্গামাটির পথে পথে সড়ক ও পাহাড় ধসের কারণে তা সম্ভব হয়নি।
চট্টগ্রাম থেকে জ্বালানি তেলসহ নানা খাদ্য সামগ্রী রাঙ্গামাটি যেত। আবার সেখানে থেকেও কাঁঠাল, আনারসসহ নানা ফলমূল চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হতো। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় সবকিছু বন্ধ হয়ে গেছে। পাহাড়ের শাক-শবজি ফলমূল পাহাড়ে পচে নষ্ট হচ্ছে। আবার নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রও সেখানে যেতে পারছে না। পাহাড় ধসে বিপর্যয়ের পর ৪ দিনেও সড়ক যোগাযোগ চালু না হওয়ায় পার্বত্য জেলা রাঙামাটি এখন কার্যত বিচ্ছিন্ন নগরী। চট্টগ্রাম রাঙ্গামাটি সড়ক ছাড়াও উত্তর চট্টগ্রামের রাউজান পৃঃ ২ কঃ ৬
বিচ্ছিন্ন রাঙ্গামাটিতে মানবিক বিপর্যয়
রাঙ্গুনিয়াসহ রাঙ্গামাটির কাপ্তাইসহ বিভিন্ন এলাকার সড়ক অবকাঠামো ভেঙে গেছে। এতে করে অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ ব্যবস্থাও বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
স্থানীয়রা জানায় চট্টগ্রাম-রাঙামাটি সড়কের সাতছড়ি শালবাগান এলাকায় পাহাড় ধসে গভীর খাদের সৃষ্টি হয়েছে। সেখানে সড়কের কোন অস্তিত্ব নেই। লোকজন কাদা মাটি মাড়িয়ে ওই এলাকা হেটে পার হচ্ছে। চট্টগ্রাম-রাঙামাটি সড়কের ঘাগড়া কলাবাগান থেকে মানিকছড়ি পর্যন্ত প্রায় ১৩ কিলোমিটার রাস্তা হেঁটেই পার হতে হচ্ছে। ঘাগড়া থেকে রাঙামাটি পর্যন্ত সড়কজুড়ে ৩৫টি ছোট-বড় ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে পাহাড় ধস ও পাহাড়ি ঢলের কারণে। সেনাবাহিনীর সদস্যরা এসব সড়ক সচল করতে কাজ করে যাচ্ছেন।
চট্টগ্রাম-রাঙামাটি ৭৪ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কের ৩৫ স্থানে পাহাড় ধসে সড়কের ওপর পড়েছে। রাণীরহাট থেকে যৌথ খামার পর্যন্ত মাটি অপসারণ করে ২২ কিলোমিটার সড়ক গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় চলাচলের উপযোগী হয়েছে। যৌথ খামার এলাকায় সড়কের ওপর ধসে পড়া মাটি অপসারণের কাজ চলছে। সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের প্রাথমিক হিসাবে রাঙামাটিতে সওজের ২৬৪ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে ১৪৫টি স্থানে সড়কের ওপর পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া সড়কের পাশ ধসের ঘটনা ঘটেছে ৪৭টি স্থানে। সংস্কার কাজও ব্যবহত হচ্ছে ভারি বৃষ্টির কারণে।
সড়ক যোগাযোগ বন্ধ থাকায় রাঙ্গামাটিতে এলপি গ্যাস সিলিন্ডারও জ্বালানি তেল সরবরাহ দেওয়া যাচ্ছে না। এতে করে জেলাজুড়ে জ্বালানি সঙ্কট চরমে উঠেছে। জ্বালানি তেল বিক্রি হচ্ছে কয়েকগুন বেশি দামে। জ্বালানির অভাবে ইঞ্জিনচালিত নৌকাসহ যানবাহন চলাচল করতে পারছে না। এতে করে সেখানে উৎপন্ন শাক সবজিও বাজার আনা যাচ্ছে না। এতে করে বাজারে নিত্যপণ্যে সংকট চরমে উঠেছে। সাগরে মওসুমি নিম্নচাপের প্রভাবে টানা বৃষ্টিতে গত সোমবার রাত থেকে বুধবার ভোর পর্যন্ত চট্টগ্রাম অঞ্চলের ৫ জেলায় বিভিন্ন স্থানে পাহাড় ধসে প্রায় ১৬৫ জনের মৃত্যুসহ ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রাঙ্গামাটি। গতকাল শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত সেখানে পাহাড় ধসের ঘটনায় মোট ১১০ জনের লাশ উদ্ধারের কথা জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন) মেজর শাকিল নেওয়াজ জানান, গতকাল রাঙামাটির ভেদভেদি লোকনাথ মন্দির এলাকায় মজিবুর নামের ১১ বছর বয়সী এক শিশু এবং ভেদভেদি সেনা ক্যাম্পের পাশে ইব্রাহিম নামে ২৫ বছর বয়সী এক তরুণের লাশ পেয়েছেন তারা। গত মঙ্গলবার থেকে ফায়ার সার্ভিসের ১২০ জন কর্মী রাঙামাটির বিভিন্ন দুর্গত এলাকায় উদ্ধার অভিযান চালিয়ে আসছেন। শুক্রবার তাদের অভিযানের এলাকা ছোট করে এখন লোকনাথ মন্দির, ভেদভেদি মুসলিম পাড়া ও সদরের রূপনগরে উদ্ধার চালানো হচ্ছে বলে শাকিল নেওয়াজ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।