Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মুরাদপুর ফ্লাইওভার খুলছে আজ

| প্রকাশের সময় : ১৬ জুন, ২০১৭, ১২:০০ এএম


রফিকুল ইসলাম সেলিম  : চট্টগ্রাম মহানগরীর অসনীয় যানজট কমাতে আজ (শুক্রবার) খুলে দেওয়া হচ্ছে মুরাদপুর ফ্লাইওভার। পরিক্ষামূলকভাবে ফ্লাইওভারের একাংশে যানবাহন চলাচল করবে। প্রায় ৫.২ কিলোমিটার দীর্ঘ মহানগরীর সব চেয়ে বড় এই উড়াল সেতুতে যানবাহন চলাচল শুরু হলে নগরীর বিরাট অংশে যানজট কমে যাবে বলে মনে করছেন প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা সিডিএ’র কর্মকর্তারা। সিডিএ চেয়ারম্যান  আবদুস ছালাম জানান, নগরবাসীকে স্বস্তি দিতে ফ্লাইওভারটি খুলে দেওয়া হচ্ছে।
এদিকে পুলিশের পক্ষ থেকে রোজাদারদের গত বছরের তুলনায় ৩০ শতাংশ বেশি স্বস্তি দেয়ার ঘোষণা দেয়া হলেও তার সুফল মিলছে না। নগরীতে যানজট বেড়েই চলেছে। পুলিশের পক্ষ থেকে নগরীতে দিনের বেলা ভারী যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ করা হলেও তা মানা হচ্ছে না। দিনের বেলায় নগরীর বিভিন্ন সড়কে চলছে ট্রাক, কাভার্ড ভ্যানসহ ভারী যানবাহন। অভিযোগ রয়েছে, ট্রাফিক পুলিশকে বখশিশ দিয়ে নগরীর বিভিন্ন অলিগলিতে ঢুকে পড়ছে এসব ভারী যানবাহন। আর এ কারণে নগরজুড়ে তীব্র যানজট হচ্ছে। গতকাল সপ্তহের শেষদিনে মহানগরীর বেশিরভাগ এলাকা যানজটে অচল ছিল ঘণ্টার পর ঘণ্টা। কয়েকদিনের টানা ভারী বর্ষণ, জোয়ার ও পাহাড়ী ঢলে মহানগরীর বেশিরভাগ সড়ক ভেঙেচুড়ে একাকার হয়ে গেছে। এ কারণেও যানবাহন আটকে তীব্র যানজট হচ্ছে।
ট্রাফিক পুলিশের কর্মকর্তাদের প্রত্যাশা মুরাদপুর ফ্লাইওভারটি চালু হলে নগরীর ওই অংশে যানজট কিছুটা সহনীয় পর্যায়ে আসবে। সিডিএ চেয়ারম্যান জানান, ট্রাফিক পুলিশের অনুরোধেই ফ্লাইওভারটি খুলে দেয়া হচ্ছে। ফ্লাইওভারটির নামকরণ করা হয়েছে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবুর নামে। এই আখতারুজ্জমান ফ্লাইওভারটি নগরীর চতুর্থ ফ্লাইওভার। এর আগে বহদ্দারহাট, কদমতলী, ও বন্দর এলাকায় ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হয়। দেওয়ানহাটে মোড়ে নির্মাণ করা হয় ওভারপাস। মুরাদপুর ফ্লাইওভারটির সাথে সংযুক্ত হবে বিমানবন্দরমুখী এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। আর তখন এই উড়াল সড়ক মুরাদপুর থেকে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পর্যন্ত দীর্ঘ হবে।
প্রকল্পের পরিচালক সিডিএর প্রকৌশলী মাহফুজুর রহমান জানান, ফ্লাইওভারের নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। এখন চলছে ফিনিশিং টার্চ। ইতোমধ্যে ফ্লাইওভারের একাংশের পিচ ঢালাইয়ের কাজও শেষ হয়েছে। আজ থেকে পরিক্ষামূলকভাবে ওই অংশে যানবাহন চলাচল করবে। রোজার আগেই উড়াল সেতুটি চালু করে দেওয়ার টার্গেট ছিল। তবে টানা বর্ষণ ও ঘূর্ণিঝড় মোরার কারণে কাজ ব্যাহত হওয়ায় সময় মতো এটি চালু করা যায়নি। জুনের মধ্যে প্রকল্পে কাজ শেষ করার জন্যে সময় নির্ধারিত থাকলেও আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের কারণে অনেক আগেই কাজ শেষ হয়ে গেছে। তাছাড়া নগরবাসীর দুভোর্গের বিষয়টি বিবেচনায় রেখে নির্মাণ কাজ দ্রæত শেষ করা হয়েছে।
বিগত ২০১৪ সালের ১১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৪৬২ কোটি ২৯ লাখ টাকা ব্যয়ে ফ্লাইওভারটির নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন। এই ফ্লাইওভারের দরপত্র খোলা হয় গত ১৫ মে। পরে ৫ দশমিক ২ কিলোমিটার দীর্ঘ ফ্লাইওভারটি নির্মাণে গত ২৮ অক্টোবর ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স-র‌্যাঙ্কিনের (জেভি) সঙ্গে সিডিএর চুক্তি হয়। মুরাদপুর থেকে ওয়াসা জংশন পর্যন্ত সাড়ে তিন কিলোমিটার ফ্লাইওভারে চারটি লেইন থাকছে। এছাড়া দুই নং গেইট থেকে বায়েজিদ পর্যন্ত দুই লেনের দশমিক শূন্য সাত কিলোমিটার (নিম্নমুখী) র‌্যাম্প ও অক্সিজেন থেকে জিইসিমুখী দুই লেইনের এক কিলোমিটার (ঊর্ধ্বমুখী) র‌্যাম্প থাকবে। প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী মাহফুজুর রহমান বলেন, নির্ধারিত সময়ের আগে কাজ শেষ হওয়ায় প্রকল্প ব্যায় বাড়েনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিগত ২০১০ সালের ২ জানুয়ারী নগরীর বহদ্দাহাট জংশনে একই সাথে ৫টি ফ্লাইওভারের নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করেন। পরে পাঁচটি ফ্লাইওভারের বদলে বহদ্দারহাটে একটি এবং মুরাদপুর থেকে ওয়াসা হয়ে ইস্পাহানি মোড় পর্যন্ত একটি ফ্লাইওভার নির্মাণের সিদ্ধান্ত হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ