রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
উখিয়া (কক্সবাজার) উপজেলা সংবাদদাতা : কক্সবাজারের উখিয়ার ৫ ইউনিয়নে গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার ও দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচি প্রকল্পে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতি ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। প্রণীত তালিকায় শ্রমিকের নাম ও সংখ্যা উল্লেখিত থাকলেও বাস্তবে তা নেই। নামসর্বস্ব প্রকল্পের অজুহাতে শ্রমিকের বিপরীতে বরাদ্দকৃত টাকা লুটপাটের মহোৎসব চলছে। প্রকল্পের কর্মকান্ড তদারকির জন্য টেক অফিসার নিয়োগ দেওয়া হলেও মাঠপর্যায়ে দায়িত্ব পালন করছে না তারা। যে কারণে সরকারের উদারমুখী উন্নয়ন কার্যক্রম ভেস্তে যাচ্ছে বলে প্রত্যক্ষদর্শী গ্রামবাসীর অভিযোগ। কর্মসংস্থান কর্মসূচির নীতিমালা অনুযায়ী গ্রাম-গঞ্জের কর্মক্ষম বেকার, গরীব ও দুস্থ পরিবারের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্যে সরকার গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার প্রকল্প চালু করলেও এ উপজেলায় তা পুরোপরি বাস্তবায়ন হচ্ছে না। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচির আওতায় (২য় পর্যায়) কাজ শুরু হয়েছে চলতি মাসের ৪ জুন থেকে। কর্মসূচির আওতায় উপজেলার ৫ ইউনিয়নে ৩৭টি প্রকল্প অনুমোদিত হয়। এর মধ্যে জালিয়াপালং ইউনিয়নে ৬টি, রাজাপালং ইউনিয়নে ৯টি, হলদিয়াপালং ইউনিয়নে ৯টি, পালংখালী ইউনিয়নে ৮টি ও রতœাপালং ইউনিয়নে ৫টি। ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা ব্যয় বরাদ্দে ৩৭টি প্রকল্পে কাজ করার জন্য ১ হাজার ৫৬৫ জন শ্রমিককে খাতা-কলমে নিয়োগ দেওয়া হলেও বাস্তবত মাঠ পর্যায়ে দুই-তৃতীয়াংশ শ্রমিকই কাজ করার সুযোগ পাচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। স¤প্রতি জালিয়াপালং ইউনিয়নের উত্তর নিদানিয়া থেকে ইনানীর ঘোনার মোড় পর্যন্ত রাস্তা সংস্কার প্রকল্পে ৮০ জন শ্রমিক কাজ করার কথা থাকলেও প্রকল্পে মাত্র ১২ জন শ্রমিক কাজ করতে দেখা গেছে। স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী শামশুল আলম, নজরুল ইসলামসহ বেশ কয়েকজন গ্রামবাসী জানান, নামসর্বস্ব প্রকল্প দেখিয়ে শ্রমিকের টাকা উত্তোলন করে সংশ্লিষ্টরা পকেটস্থ করছেন। এছাড়া চেপটখালী, মাদারবনিয়া, ইমামের ডেইল, পাটুয়ার টেক ও মোহাম্মদ শফির বিল, এলজিইডি-মেরিন ড্রাইভ সড়ক সংযোগ প্রকল্পে ৫০ জন শ্রমিকের তালিকা থাকলেও প্রকল্পে ৭-৮ জন শ্রমিক উপস্থিত দেখা গেছে। জালিয়াপালং ইউনিয়নের ১ নম্বর প্রকল্প পাইন্যাশিয়া আনাইর পাড়া থেকে দক্ষিণ পাইন্যাশিয়া রাস্তা ও কবরস্থান সংস্কার প্রকল্পে ৩৮ জন শ্রমিক কাজ করার কথা থাকলেও ওই প্রকল্পে কোনো শ্রমিককেই কাজ করতে দেখা যায়নি। ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুরুল আমিন চৌধুরী জানান, ‘প্রচন্ড বৃষ্টি, কখনো গরম ও রোজার দিনে শ্রমিকেরা কাজ করতে চায় না।’ তবে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এ প্রকল্পে কোনো শ্রমিককেই কাজ করতে দেখা যায়নি। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. আহসান উল্লাহ প্রকল্পের শ্রমিক অনুপস্থিতির সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘প্রকল্পে যতজন শ্রমিক কাজ করছে, ততজন শ্রমিকের মজুরী দেওয়া হবে।’ তবে তার কথায় আর কাজে কোনো মিল খুঁজে পাওয়া যায়নি। এর আগে প্রথম দফায় বাস্তবায়িত প্রকল্পগুলোতে কাজ না করেও বিল উত্তোলন করার অভিযোগ রয়েছে। উপজেলা চেয়ারম্যান ছেনুয়ারা বেগমের কাছে কর্মসৃজন প্রকল্পের অনিয়ম-দুর্নীতি সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘যে সমস্ত প্রকল্পে অনিয়ম হয়েছে, ওই সমস্ত প্রকল্পের টাকা বন্ধ রাখার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।’ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাঈন উদ্দিন জানান, ‘রোজার কারণে ভোরে নামাজ পড়ে শ্রমিকদের কাজ শুরু করার জন্য বলা হয়েছে। তাতেও যদি অনুপস্থিত থাকে, তাহলে অনুপস্থিত শ্রমিকদের টাকা কেটে রাখা হবে।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।